পিজেডি মরক্কো নির্বাচনে এগিয়ে

0

অনলাইন ডেক্স : মরক্কোর জাতীয় নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী আবদেলিলাহ বেনকিরানের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন মধ্যপন্থী ইসলামী দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (পিজেডি) এগিয়ে রয়েছে।

স্থানীয় সময় শনিবার সকাল পর্যন্ত ৯০ শতাংশ আসনের ভোট গণনা শেষ হয়েছে। এর ভিত্তিতে মরক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেছে।

এতে ৩৯৫টি আসনের মধ্যে পিজেডি পেয়েছে ৯৯টি, অথেন্টিসিটি এবং মডার্নিটি পার্টি (পিএএম) ৮০টি এবং রক্ষণশীল ইসতিকলাল পার্টি পেয়েছে ৩১ আসন।

নির্বাচনী এ ফলাফল থেকে স্পষ্ট ইসলামপন্থী দল পিজেডিকে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হলে জোট সরকার গঠন করতে হবে।

মরক্কোর নারী ও তরুণদের জন্য নির্ধারিত ৯০টি আসনের ভোট গণনা এখনও চলছে।

মরক্কো একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের দেশ। সেখানে সরকারের বেশিরভাগ নির্বাহী ক্ষমতা রাজার হাতে কুক্ষিগত।

গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের জন্য মরক্কোতে সাম্প্রতিক সময়ে বিক্ষোভ হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে রাজা জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের হাতে কিছুটা ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেছেন।

তবে শুক্রবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দেশটির ৯৫টি নির্বাচনী জেলায় নেতিবাচক চিত্র দেখা গেছে। বেশিরভাগ ভোটারই সীমিত গণতন্ত্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। মাত্র ৪৩ শতাংশ ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।

এদিকে নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ক্ষমতাসীন পিজেডি এবং প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী পিএএম কাছাকাছি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে।

ফলে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে পিজেডিকে অন্তত তিনটি ছোট দলের সঙ্গে জোট করতে হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে তিউনেসিয়া থেকে শুরু হওয়া গণআন্দোলন ‘আরব বসন্তের’ পর ওই অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে ইসলামপন্থী দলগুলো জনগণের ভোটে ক্ষমতায় চলে আসে।

কিন্তু সেনাবাহিনী, ব্যবসায়ী এবং অভিজাত নাগরিক সমাজের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে একে একে ক্ষমতা হারায় মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুড এবং তিউনেসিয়ার আন নাহদা।

অন্যদিকে বিশৃংখল লিবিয়ায় গণতন্ত্রপন্থী ইসলামী দলকে কোণঠাসা করে দেশটির একাংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় আল-কায়েদা ও আইএস সংশ্লিষ্টরা।

তবে এই পরিবর্তনের মধ্যেও ২০১১ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর পাঁচ বছরের পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়েছে মরক্কোর ইসলামী দল পিজেডি। মেয়াদকালে অর্থনৈতিক সংস্কার, বাজেট ঘাটতি হ্রাস এবং ভর্তুকির লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করছে দলটি।

তবে দুর্নীতিবিরোধী নীতির কারণে দলটির বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে। এবারের নির্বাচনকে সামনে রেখে পিজেডির আরও ভালো ফলাফল করবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। কিন্তু মরক্কোর রাজা মোহাম্মদ সাদিস ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার জন্য মরিয়া চেষ্টা করায় তা আর সম্ভব হয়নি।

এরইমধ্যে রাজতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণের প্রতিবাদে নির্বাচন বয়কট করেছে দেশটির প্রধান ইসলামী বিরোধী দল ‘জাস্টিস অ্যান্ড স্পিরিচুয়ালিটি পাটি’ এবং বামপন্থী দলগুলো।

শুক্রবার ভোটগ্রহণের কয়েক ঘণ্টা আগে পিজেডি অভিযোগ করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তারা ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্ট করছে।

অন্যদিকে রাজতন্ত্রের পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে উত্থান ঘটেছে পিএএম’র।

এ দলটির প্রতিষ্ঠাতা রাজা মোহাম্মদের একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু, যিনি রাজপ্রাসদের একজন উপদেষ্টার দায়িত্বও পালন করছেন।

সূত্র- রয়টার্স ও আল জাজিরা।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.