শ্বশুড় বাড়িতে ডাকাতি, জামাইসহ গ্রেফতার ৪

0

বোয়ালখালী প্রতিনিধি : দাওয়াত না দেয়ায় নিজের শ্বশুড় বাড়িতে ডাকাতি করেছে বলে পুলিশকে জানিয়েছে পটিয়া উপজেলার পাচুরিয়া বানিক পাড়ার জয়নাল আবেদীন জুনু নামের এক ডাকাত।

পুলিশ জানায়, ২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম শাকপুরায় পুলিশ পরিচয়ে নিজের শ্বশুড় সৈয়দ নবীর বাড়িতে ডাকাতিতে অংশ নেয় জয়নাল আবেদীন জুনু।
সে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, দাওয়াত না দেয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে শ্বশুড় বাড়ির সকল তথ্য পেচু মিয়াকে জানায়। এরপর অপেক্ষায় থাকে প্রবাসী শ্যালক বাড়ি আসার।
এরমধ্যে বোয়ালখালীর আবদুল মালেক ডাকাতকে ঠিক করা হয় অস্ত্র ও ছক কষার জন্য। জয়নাল আবেদীন জুনু শ্বশুড়বাড়ীর লোকজনকে বেধড়ক পেটানোর শর্তেই টাকাও স্বর্ণালংকারের তথ্য দেয় পেচুকে।
গত ২৪ অক্টোবর সোমবার ও ২৫ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত বোয়ালখালী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে চার ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেছে। ডাকাতদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী দেশীয় তৈরী কাঠের বাটসহ ২১ ইঞ্চি লম্বা ১টি পুরাতন এলজি, ২ রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজ ও আলামতসহ ১টি প্লাস্টিকের পুরাতন বাজারের ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম শাকপুরা, নুর নবী মাষ্টারের বাড়ীর মৃত সুরত আলীর ছেলে আবদুল মালেক (৫০), পটিয়া উপজেলার পাঁচুরিয়া এলাকার মানিক পাড়ার পেঁচু মিয়া (৪৫), জয়নাল আবেদীন জুনু (৩৫) ও ফারুক মিয়া (২২)।
পটিয়ার পেঁচু মিয়া ২০০২ সালের এক ডাকাতি মামলায় ১০বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তাদের জবানবন্ধি গ্রহণ করার জন্য আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বোয়ালখালী থানার উপ-পরিদর্শক মো. খায়রুল হাসান।
বোয়ালখালী থানার উপ-পরিদর্শক মো. মোস্তাক চৌধুরী, মো. খায়রুল হাসান, সহকারী উপ-পরিদর্শক মো. শাহাব উদ্দিন এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন।
বোয়ালখালী থানার উপ-পরিদর্শক মোস্তাক চৌধুরী জানান, গতকাল ২৪ অক্টোবর সোমবার বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার শাকপুরা মিলিটারী ব্রীজ এলাকা থেকে আবদুল মালেককে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে পশ্চিম শাকপুরায় এক প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ও ওই ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র-গুলি তার হেফাজতে আছে বলে জানায়।
তার দেয়া তথ্য মতে পশ্চিম শাকপুরা ৪নং ওয়ার্ডের তার শ্বশুর মনির আহাম্মদের মাটির বসত ঘরের দোতলার লাকড়ীর ভিতর থলেতে রাখা অস্ত্র, কাতুর্জ উদ্ধার করা হয়। এরপর বাকি ডাকাতদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এব্যাপারে বোয়ালখালী থানায় অবৈধ অস্ত্র ও কার্তুজ রাখায় ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯-অ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম শাকপুরায় পুলিশ পরিচয়ে প্রবাসী বেলালে বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতদল নগদ দেড়লক্ষ টাকা, ৫ ভরি স্বর্ণালংকার, ৩টি মোবাইল লুটে নিয়ে যায়।
ডাকাতদের মারধরে সৈয়দ নবী (৬০), তার স্ত্রী বানু বেগম ( ৫৫), তার ছেলে বেলাল (২৬), ইকবাল (২৪), ওসমান (২২) ও নাতি পারভেজ আহত হয়েছিলেন।
প্রবাসী বেলাল জানিয়েছিলেন, ঘটনার বিশ দিন আগে দুবাই থেকে তিনি বাড়ীতে আসেন। সাথে দোকান দেয়ার জন্য নগদ দেড় লক্ষ টাকা এনেছিলেন। ওইদিন রাত ২টার দিকে পুলিশ পরিচয়ে দরজা খুলতে বলে ডাকাত দল। দরজা খোলায় রান্না ঘরের দরজা ভেঙ্গে প্রায় ১৬/১৭ ঢুকে পড়ে।
এরপর পরিবারের সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত পা ও মুখ বেঁধে ঘরের মালামাল লুট করে ও কুপিয়ে জখমসহ বেধড়ক মারধর করে।
ঘটনার পরদিন ১৩ জানুয়ারি বুধবার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ডাকাতদের ফেলে যাওয়া বিদেশি টর্চ লাইট, মাফলার ও তোয়ালে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় থানায় মামলা (নং-১০ তারিখ ১৩/০১/২০১৬ ধারা- ৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড) দায়ের করলে মাঠে নামে পুলিশ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.