শিকলে বন্দি জীবন জননী রেহেনার

0

আব্দুল্লাহ আল মামুন, পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : মস্তিষ্ক বিকৃতির কারণে শিকলে বন্দি জীবন যাপন করছেন দুই সন্তানের জননী রেহেনা বেগম(৪০)। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ অসুস্থ্য রেহেনার প্রথম দিকে একবার চিকিৎসার শুরু হলেও টাকার অভাবে কিছুদিন পর তার বন্ধ হয়ে যায়।
পিতা আলা বকসের চার সন্তানের মধ্যে মা হারানো সবার বড় কন্যা রেহেনা বেগমের বাড়ি দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচন্ডি ইউনিয়নে ১নং ওয়ার্ডের ভাটিপাড়া গ্রামে ।
২৫ বছর আগে মনমথপুর ইউনিয়নের দেগলাগঞ্জ গ্রামের জনৈক জমির উদ্দিনের সাথে তার বিয়ে হয়। কয়েক বছর বছর আগে স্বামী মারা গেলে মানসিক রোগে আক্রান্ত হন তিনি। আতিকুল (২৪) ও সাদেকুল (১৮) নামে দুই সন্তান একজন মুগীর ফার্মে কাজ করে এবং অন্য জন ভ্যান চালক। মায়ের খোঁজ খবর না নেওয়ায় শেষ পর্যন্ত বাবার বাড়িতে নোংরা স্যাঁতস্যাঁতে অস্বাস্থ্যকর স্থানে ঠাঁই হয় পায়ে শিকল বাঁধা রেহেনার। সব সময় বিড়বিড় করে আপন মনে কথা বলে, ছেড়ে দিলে লোকদের উপর চড়াও হয় ও ভাঙচুর করে। এজন্য তাকে পায়ে শিকল বেধে আটকে রাখা হয়।
চিকিৎসা না করার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে পিতা আলা বকস বলেন, তার দুই সন্তানের একজন ও খবর নেয় না। অসুস্থ্য অবস্থায় আমার এখানে রেখে গেছে।

এ ব্যাপারে রেহেনার ভাই অব্দুল মজিদ বলেন, মাঝতে ওক ডাক্তার দেখাছি। ৩/৪ বছর আগত হারে গেছিলো । দুনিয়ার খোজা খোজি। চারো পেকে খোজার পর কিশান বাজারত পাছি। পাইশা কড়ির কারণে চিকিৎসা বন্ধ হয়া আছে। যদি কাইয়ো হামাক টাকা দিলে চিকিৎসা করমো। ওর ছেলেরা ধার ধারে না। এত ডাক ডাকাছি কোন দিন আইসে নাই। প্রায় ৪/৫ বছর থাকি এটে আছে। একটা ডাক্তার দেখাই ছিনো মেলা পাইশা করি খরচ। প্রায় ২০/৩০ হাজার টাকার কথা বলেছে ।
রেহেনার বড় ভাবী শাপলা বেগমের কাছে জানতে চাইলে বলেন, যখন মাথাটা আউল বাউল কওে তখন মাইনসক ডাঙ্গা ডাঙ্গি করে।
রেহেনার পরীবারের দাবী যদি কোন ব্যক্তি আর্থিক ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তবে রেহেনা সুস্থ জীবনে ফিরে আসবে বলে মনে করছেন তার পরিবার।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.