‍চবি শিক্ষক সমিতি বেতন স্কেলসহ আটদফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে

0

সিটিনিউজবিডি : প্রস্তাবিত অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামো বাতিল করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেলসহ আটদফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। রোববার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্ত্বরে আয়োজিত মানববন্ধনে শতাধিক শিক্ষক অংশ নেন।

মানববন্ধনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের বেতন-ভাতা সিনিয়র সচিবের সমতুল্য করার দাবিও জানান শিক্ষকরা।

প্রস্তাবিত অষ্টম বেতন কাঠামো বৈষম্যমূলক দাবি করে মানববন্ধনে চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আবুল মনছুর বলেন, ‘শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর। শিক্ষক সমাজকে পশ্চাতে রেখে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। কিন্তু প্রস্তাবিত অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামোতে ড. ফরাসউদ্দিন বেতন কমিশন এবং সচিব কমিটি সমতার নীতি ও সুবিধাবঞ্চিতদের ব্যাপারগুলোকে গুরুত্ব দেননি। নিজেদের সুযোগ সুবিধাকে প্রাধান্য দিয়ে আমলারা একটি কাঠামো সরকারকে দিয়ে পাস করিয়ে নিতে চাচ্ছেন। ’

টাইম স্কেল ও সিলেকশান গ্রেড বাদ দেয়ার সুপারিশ করে ড. ফরাসউদ্দিন বেতন কমিশন এবং সচিব কমিটি সুবিধাবঞ্চিতদের উপর চরম অবিচার করেছেন বলে দাবি করেন এ শিক্ষক নেতা।

মানবন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তাদের গুরুত্ব খাটো করে দেখার কোন অবকাশ নেই। তবে সমাজের অন্যান্য পেশার লোকজন ও শিক্ষকরা যে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে যে অপরিহার্য অবদান রাখছেন সেটি অস্বীকার করা অসমীচিন। ’

‘‘সচিব কমিটি তাঁদের সুপারিশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন দুই ধাপ নামিয়ে এনে সরকারের ইতিবাচক ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ এবং সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন করেছে। আমরা সরকারের প্রতিপক্ষ নয়। প্রস্তাবিত বেতন কাঠামো শিক্ষকদের উচ্ছ্বসিত হওয়ার পরিবর্তে হতাশায় নিমজ্জিত করেছে।’’

চবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড.কাজী এস এম খসরুল আলম কুদ্দুসী বলেন,‘টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল হলে সারাদেশের অনেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর মত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আয়ও কমে যাবে। সার্কভুক্ত অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে শিক্ষকদের বেতন অনেক কম। পর্যাপ্ত বেতন ও সুযোগ-সুবিধা না দিলে মেধাবীরাতো এ পেশায় আসবে না, যা দেশের মানবসম্পদ সৃষ্টিতে ব্যঘাত ঘটাবে।’

মানববন্ধনে অধ্যাপক ড. অরুন কুমার দেব, অধ্যাপক বেনু কুমার দে, অধ্যাপক ড. মোঃ মহিউদ্দিন, অধ্যাপক ড. মো. জসিম উদ্দিন, অধ্যাপক ড. শ্যামল রঞ্জন চক্রবর্তী, অধ্যাপক ড. মো. বশির আহমদ, অধ্যাপক ড. রাশেদ-উন-নবী, অধ্যাপক ড. মো. তৌহিদ হোসেন, অধ্যাপক ড. নাসির উদ্দিন, ড. এফ এম এনায়েত হোসেন, মো. মোরশেদুল আলম, মো. মহিউদ্দিন, আহসানুল কবির পলাশ ও মেহেদি হাসান বক্তব্য রাখেন।

এর আগে সাংবাদিক সম্মেলন,মানববন্ধন,অবস্থান কর্মসূচীসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষরা। এসব কর্মসূচীতে শিক্ষকরা সরকারের কাছে আটদফা দাবি জানান।

দাবিগুলো হলো, প্রস্তাবিত অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামোতে ৮ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন অধ্যাপকদের বেতন-ভাতা সিনিয়র সচিবের সমতুল্য করা,সিলেকশন গ্রেড প্রাপ্ত অধ্যাপকদের বেতন-ভাতা সিনিয়র সচিবের সমতুল্য করা,সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষকদের বেতন কাঠামো ক্রমানুসারে নির্ধারণ, প্রতিবেশী দেশসমূহের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের গবেষণা ভাতা, বই ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাদি নিশ্চিত ,সরকারি কর্মকর্তাদের ন্যায় গাড়ি, আবাসন ও অন্যান্য সুবিধা শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও নিশ্চিত করা,প্রত্যাশিত বেতন কাঠামো অনুযায়ী ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স-এ শিক্ষকদের পদমর্যাদা ও অবস্থান নিশ্চিত,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদমর্যাদা মূখ্য সচিব/মন্ত্রী পরিষদ সচিবের সমতুল্য করে সে অনুযায়ী সুবিধাদিও নিশ্চিত করা এবং শিক্ষানীতি অনুযায়ী শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন করা।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.