ইপসা ও এসভিসি’র উগ্রবাদ ও সহিংসতা প্রতিরোধ বিষয়ক নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত

0

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বাংলাদেশের মানুষ বরাবরই শান্তিপ্রিয়। সমাজে অশান্তি, সহিংসতা আমাদের কারোরই প্রত্যাশিত নয়। তবুও মাঝে মাঝে কিছু সুযোগসন্ধানী, স্বার্থান্বেষী মানুষ সামাজিক শান্তি, সম্প্রীতি নষ্ট করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। আর বারে বারে শান্তিপ্রিয় মানুষেরা এই সব অপচেষ্টা কৃতিত্বের সাথে রুখে দিয়েছে। দল-মত, শ্রেণী-পেশার উর্ধে উঠে বাংলাদেশের মানুষ সহিংসতা প্রতিরোধ করেছে, সমাজে শান্তির বাতাবরণ বিনষ্ট হতে দেননি।

আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের মানুষ ঐহিত্যগত ভাবে সামাজিক সম্প্রীতির মূল্যবোধ ধারণ করে যা বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের বড় ভিত্তি।আমাদের বাংলাদেশ বহু ভাষা, বহু ধর্ম, বহু সম্প্রদায়ের স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশ। দীর্ঘ সময় ধরে আমরা শান্তি ও সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করছি। প্রত্যেক জাতীয় নির্বাচনের আগে ও পরে এমনকি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রায়ই বিভিন্ন ধরণের সহিংসতা হয়ে থাকে। যেটা হওয়া কখনও উচিত নয়। আমরা সবাই শান্তি ও সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করতে চাই যেটি আমাদের দেশীয় ঐতিহ্য এবং আবহমান বাংলাদেশী মূল্যবোধ। নির্বাচনে যে যার মতো ভোট দিতে পারে, ভোট যার- সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তার কিংবা যে যার পছন্দমতো রাজনৈতিক আদর্শের সমর্থক বা অনুসারী হওয়াটা স্বাভাবিক।

কিন্তু এটিকে নিয়ে কোনো উগ্রবাদ ও সহিংসতা কেউ কখনও সমর্থন করে না এবং করবেও না। ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। আমরা নিজ ধর্মকে যেমন সম্মান করি অন্য ধর্মের প্রতি তেমনি শ্রদ্ধাশীল। তরুণরা যারা উগ্রবাদ ও সহিংসতার সাথে জড়িত তারা সংখ্যায় অত্যন্তনগন্য বললেই চলে। বাস্তবে বেশীরভাগ তরুণই ভাল কাজে তাদের সময় এবং শক্তি খরচ করতে আগ্রহী। দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডে, শান্তির পক্ষে কিংবা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে বেশীর ভাগ তরুণই অবদান রাখছে এবং রাখতে আগ্রহী। দেশকে তথ্য প্রযুক্তি সেক্টরে বিশ্বের কাছে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরার জন্য তরুণদের অবদানই বেশী। তরুণদের এই উন্নয়ন অংশীদারীত্ব দেশকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

পারিবারিক বন্ধন যতবেশী দৃঢ় হবে ছেলেরা ততবেশী মানবিক হবে। সোমবার(২৬ ডিসেম্বর) বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে সেমিনার কক্ষে ইউএনডিপি’র সহযোগিতায় ইপসা ও স্টপ ভায়োলেন্স কোয়ালিশন (এসভিসি)’র আয়োজনে “উগ্রবাদ ও সহিংসতা প্রতিরোধে নাগরিক সমাজের ভূমিকা” শীর্ষক বিভাগীয় পরামর্শ সভায় বক্তাগণ উপরোক্ত মতামত প্রদান করেন। চট্টগ্রাম পেশাজীব সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ও সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযান-সুপ্র চট্টগ্রাম জেলা কমিটি’র সভাপতি প্রফেসর ডা. এ কিউ এম সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন সাহা।

উক্ত নাগরিক সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুশাসনের জন্য প্রচারাভিয়ান-সুপ্র চট্টগ্রাম জেলা কমিটি সাধারণ সম্পাদক এবং ইপসা’র সামাজিক সম্পৃক্ততায় উগ্রবাদ ও সহিংসতা প্রতিরোধ বিষয়ক কার্যক্রমের প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর (প্রচারাভিয়ান ও অংশীদারিত্ব) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম। ইপসা’র প্রোগ্রাম অফিসার ফারহানা ইদ্রিসের সঞ্চালনায় উক্ত সভায় প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমদ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)’র সাধারণ সম্পাদক এবং দৈনিক পূর্বকোণ’র সিনিয়ার রিপোর্টার মোহাম্মদ আলী, আগ্রাবাদ মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শিক্ষাবিদ ড. আনোয়ারা আলম এবং সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)চট্টগ্রামের সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশের সহযোগি সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এম. নাসিরুল হক, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর মোহাং গিয়াস উদ্দিন, আবিদা আজাদ, আঞ্জুমান আরা বেগম, ফরজানা পারভীন, নারী নেত্রী নুর জাহান খান, ক্যাব’র সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন, সিআরসিডি’র ইকবাল বাহার সাবেরী, সংগঠক নোমান উল্লাহ বাহার, অপরাজেয় বাংলাদেশ’র মাহাবুব উল আলম, ইউনেস্কো ক্লাব বাংলাদেশ’র আহসান ফারুক প্রমূখ।

সভায় উপস্থিত সবাই উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিরোধে যার যার অবস্থান থেকে অবদান রাখার জন্য এবং সম্মিলিত সকলের প্রচেষ্ঠায় সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে উগ্রবাদ ও সহিংসতা প্রতরোধ করার জন্য আহবান জানানো হয়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.