চকরিয়ার বিজয় মেলায় নিষিদ্ধ নায়িকাদের অশ্লীল নাচ-গান ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ

0

বশির আলমামুন, চকরিয়া : সাফারি পার্কের সামনে অবৈধভাবে পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার বিভিন্ন স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়েছে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন। গতকাল বৃহস্পতিবার(২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ ফোর্স নিয়ে মেলাটি বন্ধ করে দেন। ৩০ ডিসেম্বর দুপুর ১২টার মধ্যে মেলার সব আয়োজন বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় এলাকাবাসী প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে।
জানা যায়, মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও বাঙ্গালীর ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার নাম দিয়ে জেলা প্রশাসক থেকে মাসব্যাপি বিজয় মেলার অনুমতি নেন ডুলাহাজারা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। ১৬ডিসেম্বর থেকে সাফারি পার্কের সামনে বিজয় মেলাটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু এরপর থেকে মেলায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণমুলক কোন কার্যক্রম চালায়নি। শুরুর দিন থেকে চলছে সার্কাসে ঢাকাই চলচিত্রের অশ্লীলতার অভিযোগে নিষিদ্ধ নায়িকা মূয়ুরীর নিশিতা ও নায়ক মেহেদীর অশ্লীল নৃত্য, জুয়া, যাদু প্রদর্শন ও লটারি। মেলায় বেপরোয়া বাজানো হচ্ছিলো মাইক ও বড়বড় সাউন্ড বক্স। এদিকে নায়িকা মূয়ুরী, নিশিতা ও নায়ক মেহেদীর নৃত্য দেখতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে একশ্রেণি যুবকরা। বাদ যায়নি স্কুল-কলেজের ছাত্ররাও। জুয়ার আসরে যোগ দিচ্ছিলো স্থানীয় বখাটে যুবকসহ আশেপাশের মাস্তানরা। একইভাবে পার্কের পাশে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছিলো। এভাবে তাদের কার্যক্রমে বিষিয়ে তুলে এলাকাবাসী ও পার্কে আসা পর্যটকদের।
মুলত ডুলাহাজারা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নামে মেলাটি অনুমোদন নিলেও এসব নিয়ন্ত্রণ করছেন যুবলীগের সভাপতি এহেসানুল হক, সাধারণ সম্পাদক তওহিদুল ইসলাম, মৎস্যজীবিলীগের সোনা মিয়া, ছাত্রলীগের সভাপতি জিকু ও স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল আবছার সহ তার অনুগত কিছু স্থানীয় দলীয় লোকজন। প্রশাসন ও পুলিশকে ম্যানেজ করে বিজয় মেলার নামে চালিয়ে ছিলো এসব অপকর্ম। মেলায় অশ্লীল নৃত্য ও জুয়ার আসর বসানোর বিষয়টি অনেক মুক্তিযোদ্ধা জানেন না। তারাও মেলাটি ভেঙ্গে দেওয়ায় প্রশাসনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
একপর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় এলাকাবাসি জেলা প্রশাসকের কাছে বিজয় মেলার বন্ধের আবেদন করেন।
অবশেষে ২৯ডিসেম্বর চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সাহেদুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বিজয় মেলার বিভিন্ন স্থাপনা গুড়িয়ে দেন।
স্থানীয়রা জানায়; এখানে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার নামে মূলত অশ্লীল নাচ গান, নানা ধরণের জুয়াখেলা, লটারী ও অপসংস্কৃতি চলে আসছিল। এগুলো করে স্থানীয় কিছু যুবক প্রতিদিন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অবৈধ ভাবে আয় করা ওই টাকায় পুলিশ থেকে শুরু করে স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতাও ভাগ বসিয়েছিল।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাহেদুল ইসলাম জানান, আমরা জোয়াখেলার আসরগুলো তাৎক্ষনিক ভেঙ্গে দিয়েছি। ৩০ডিসেম্বর দুপুর ১২টার মধ্যে সব আয়োজন বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.