বাঁশখালীতে চলছে শুটকী শুকানোর ধুম

0

কল্যাণ বড়ুয়া মুক্তা, বাঁশখালী : বঙ্গোপসাগর বাঁশখালীর লক্ষাধিক জেলেদের জীবন যাপনের অন্যতম ভরসাস্থল হলেও সেখানে নানাভাবে জলদস্যুরা জেলেদের উপর বিগত দিনে অনেকবার অপহরণ ও খুনের শিকার হওয়ার পরেও জীবনের তাগিদে বারবার ছুটে যেতে হচ্ছে বঙ্গোপসাগরে।

বর্তমানে শীত মৌসুমে জেলেরা বঙ্গোপসাগর থেকে আহরণকৃত মাছ গুলো বাঁশখালী উপকূলের বিভিন্ন স্থানে শুকানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে তারা। কাচা মাছের চেয়ে শুকানো মাছ অনেক বেশি দাম পাওয়া যায় বিধায় জেলেরা কাঁচা মাছের শুটকী শুকানোতেই মন দিচ্ছে বেশী। তবে এ কাজ করতে অনেক সময় প্রয়োজন হলেও বেশী মুনাফার আশায় এই কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে তারা।

বাঁশখালীর উপকূলে জেলেদের মাঝে ধুম লেগেছে শুটকী শুকানোর কাজে। উপজেলার ছনুয়া, পুঁইছড়ি, নাপোড়া, শেখেরখীল ফাঁড়ির মুখ, মনকিচর, সরল, বাহারছড়া ও খানখানাবাদের নদী চর গুলোতে জেলেরা বর্তমানে শুটকি শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পারছেন করছেন। বাঁশখালীর লক্ষাধিক জেলের জীবন জীবিকার অন্যতম স্থান হচ্ছে বঙ্গোপসাগর।

বাঁশখালীতে শুকানো শুটকির মধ্যে রয়েছে লইট্যা শুটকি, ছুরি শুটকি, রূপচান্দা শুটকি, ফাইস্যা শুটকি, মাইট্যা শুটকি, কোরাল শুটকি, রইস্যা শুটকি, পোঁহা শুটকি ও চিংড়ী শুটকি অন্যতম। এসব শুটকি এখন রপ্তানী হচ্ছে দুবাই, কাতার, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, ওমান, কুয়েত ও পাকিস্তানসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। এসব শুটকি রপ্তানী করে কোটি কোটি টাকা আয় করছে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ, চাক্তাই ও চকবাজারের বড় বড় গুদাম মালিকরা। শুকনো মৌসুমে শুটকি শুকিয়ে তা গুদাম মালিকদের কাছে বিক্রয় করেই চলে তাদের জীবন জীবিকা।

বঙ্গোপসাগর ভিত্তিক চি‎ি‎হ্নত জলদস্যুরা জেলেদের কাছ থেকে আহরিত মাছ ছিনিয়ে থেকে শুরু তাদের জেলেদের হত্যা করছে প্রতিনিয়ত। বিশেষ করে ২০১১ সালে মার্চে ১২ জন এবং নভেম্বরে ১৪ জন জেলেকে হত্যা করা হয় এবং ২০১৩ এর ২৫শে মার্চ বাঁশখালীর ৩১ জেলেকে নিমর্ম ভাবে হত্যার ঘটনায় দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে। তারপরেও থেমে নেই জীবনের তাগিদে জেলেদের মৎস্য আহরণ ও শুটকি দেশে বিদেশে রপ্তানির। বাঁশখালীর উপকূলে বর্তমানে জেলেরা শুটকী শুকানোর কাজের সাথে সাথে জীবনের তাগিদে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে বারবার জলদস্যুদের কবলে পড়তে হচ্ছে।

বিগত দিনে বাঁশখালীর বড় বড় খুনের ঘটনার পর বঙ্গোপসাগরে দায়িত্বরত প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বঙ্গোপসাগরকে জেলেদের জন্য নিরাপদ বিচরণ ক্ষেত্র হিসেবে তৈরী করার অঙ্গিকার করলেও বাস্তবে তার কোন ফলপ্রসু হয়নি। ফরে বার বার বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জীবন মৃত্যুর ঝুঁকি মাছ ধরতে জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.