সিটিনিউজবিডি : গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করে নির্যাতন ও এই চক্রের নারী সদস্যদের দিয়ে অশ্লীল ছবি তুলে চাঁদা আদায়কারী চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১। এরমধ্যে দুইজন নারীও রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. খায়রুল আলম প্রকাশ রবিউল (৪২), মো. পান্নু মিয়া (৩৫), মো. সাইফুল ইসলাম নিলয় (২৫), মো. খাইরুল ইসলাম মনির (৩২), শামীমা আক্তার তৃষ্ণা ও উম্মে তাসনিন ইভা (১৯)।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর দক্ষিণখানের পশ্চিম ফায়দাবাদ মজিবর মার্কেট ও উত্তরা গালর্স হাইস্কুলের সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সিনিয়র সহকারী পরিচালক মাকসুদুল আলম।
এ সময় তাদের কাছ থেকে এক জোড়া হ্যান্ডকাপ, তিনটি পুলিশের ভুয়া আইডি কার্ড, একটি ক্যামেরা, ভিকটিমের ৪টি আপত্তিকর ছবি, ৯টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয় বলেও তিনি জানান।
মাকসুদুল আলম বলেন, ‘এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় প্রতারণা করে আসছে। চক্রের নারী সদস্যরা অফিস, বাসস্ট্যান্ড, মার্কেট ও খাবার দোকানে বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করে। এরপর কৌশলে মোবাইল নম্বর আদান-প্রদান করে এবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে প্রতারণা করে।’
প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘চক্রের নারী সদস্য ও টার্গেট ব্যক্তির সম্পর্ক কিছুটা গভীর হলে একপর্যায়ে পূর্ব নির্ধারিত ফ্ল্যাটে ওই ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে যায় এবং তার সঙ্গে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়। ওই সময়ই চক্রের পুরুষ সদস্যরা ঘরে প্রবেশ করে। নিজেদের গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয় দিয়ে অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার দায়ে টার্গেট ব্যক্তিকে মারধর করে। এরপর ওই ব্যক্তির সঙ্গে চক্রের নারী সদস্যের নগ্ন ছবি তুলে স্বজনদের কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের ভয় দেখিয়ে নিয়মিতভাবে চাঁদা আদায় করতে থাকে।’
এই চক্রের প্রতারণার আরো কৌশল রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একই নারীকে ব্যবহার করে চক্রটি বিভিন্ন ফ্ল্যাটে দেহ ব্যবসা গড়ে তোলে। কখনও কখনও এই চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন পণ্যের সেলস এজেন্ট হিসেবে বিভিন্ন অফিসে গিয়ে বাছাইকৃত ব্যক্তিদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে। এরপর একই পদ্ধতিতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে সর্বস্ব লুটে নেয়।’
গ্রেপ্তার দুই নারী সম্পর্কে র্যাব কর্মকর্তা মাকসুদুল আলম বলেন, ‘শামীমা আক্তার তৃষ্ণাকে পান্নু মিয়া চাকরির কথা বলে ঢাকায় নিয়ে আসেন এবং খায়রুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে দেন। এরপর তাকে অপরাধ জগতে প্রবেশ করায়। অপরদিকে সাইফুল ইসলাম ও উম্মে তাসনিন ইভা স্বামী-স্ত্রী। তারা এক সময় এমএলএম ব্যবসা করলেও অর্থলোভে এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়।’