৭ খুনের রায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বড় ‘মেসেজ’:স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

0

সিটিনিউজ ডেস্ক::স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, র‌্যাব সদস্যদের ফাঁসি হওয়ায় প্রমাণ হয়েছে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপথগামী সদস্যদের জন্য এটি একটি বড় ‘মেসেজ’।

সোমবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার রায় নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আইনশৃঙ্খলা ও জনগণের নিরাপত্তা বিধানে কাজ করলেও র‌্যাব, পুলিশসহ বিভিন্ন সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রায়ই মানবাধিকার লংঘন এমনকি হত্যা, নির্যাতন, অপহরণের মতো গুরুতর অভিযোগ ওঠে। যদিও সরকার বরাবর বলে আসছে অপরাধ করলে কেউ পার পায় না, তারপরও এ নিয়ে মানবাধিকারকর্মীদের কাছে প্রশ্ন আছে।

সাত খুনের ঘটনায় র‌্যাবের সম্পৃক্ততা আসার পরও এই ঘটনায় বিচার হবে কি না-এ নিয়ে প্রশ্ন ছিল শুরু থেকেই। তবে ঘটনার আড়াই বছর পর প্রকাশিত রায়ে সব সংশয় দূর হয়েছে।

সোমবার সকালে ঘোষিত রায়ে ফাঁসির দণ্ড পাওয়া ২৬ জনের মধ্যে ১৭ জনই র‌্যাব সদস্য। এদের মধ্যে তিন জন আবার বাহিনীটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। এদের মধ্যে আছেন র‌্যাব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, বরখাস্ত কমান্ডার এম এম রানা এবং আরিফ হোসেন।

এই রায় ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়া জানতে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরে যান সাংবাদিকরা। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় ২৬ জনের ফাঁসির রায় হয়েছে। এ রায়ে প্রমাণ হয়েছে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত রয়েছে।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল সাত জনকে অপহরণের পর থেকেই এই ঘটনায় র‌্যাবের সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে। পরে তদন্তে প্রমাণ হয় নারায়ণগঞ্জের কাউন্সিলর নুর হোসেনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে র‌্যাব এই হত্যা করেছে। এই ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়ে বাহিনীটি।

এই রায় হওয়ায় র‌্যাবের সংস্কারের কানো চিন্তা আছে কি না-জানতে চাওয়া হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে। জবাবে তিনি বলেন, র‌্যাবের সংস্কারের প্রয়োজন নেই। কারণ প্রচলিত আইনেই বিপথগামী সদস্যদের বিচার হচ্ছে। ভুক্তভোগী পরিবার বিচার পাচ্ছে। সেক্ষেত্রে বাহিনীর আইনে কোনো সংস্কার করা দরকার আছে বলে আমি মনে করি না।

সাত খুন মামলায় মামলার ৩৫ আসামরি মধ্যে যে ২৬ জন আদালতে হাজির ছিলেন তাদের ১৭ জনই র‌্যাবের সাবেক সদস্য। এদের সবাইকেই আগেই বরখাস্ত বা চাকরিচ্যুত করেছে বাহিনীটি।

নারায়ণগঞ্জ র‌্যাবের সে সময়ের তিন কমান্ডার তারেক, রানা ও আরিফ ছাড়া মৃত্যুদণ্ড পাওয়া অন্য সদস্যরা হলেন- সাবেক হাবিলদার এমদাদুল হক, আরওজি-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হীরা মিয়া, ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহী আবু তৈয়ব, কনস্টেবল মো. শিহাব উদ্দিন, এসআই পূর্নেন্দ বালা, সৈনিক আবদুল আলীম, সৈনিক মহউদ্দিন মুন্সী, সৈনিক আসাদুজ্জামান নূর, সৈনিক আল আমিন, সৈনিক তাজুল ইসলাম, সার্জেন্ট এনামুল কবীর।

পলাতক ১২ আসামির মধ্যেও আট জন র‌্যাব সদস্য। তাদেরও কারাদণ্ডের সাজা হয়েছে বিভিন্ন মেয়াদে। এদের মধ্যে অপহরণের দায়ে সাবেক এএসআই আবুল কালাম আজাদ, এএসআই কামাল হোসন, করপোরাল মোখলেছুর রহমান, করপোরাল রুহুল আমিন, কনস্টবেল বাবুল হাসান, কনস্টবেল হাবিবুর রহমান এবং সৈনিক নুরুজ্জামান অপহরণের দায়ে ১০ বছর কারাদণ্ড পেয়েছেন।

এছাড়া সাবেক এএসআই বজলুর রহমান সাক্ষ্য-প্রমাণ সরানোর দায়ে সাত বছর ও হাবিলদার নাসির উদ্দিনকে সাত বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.