কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে গ্রেফতার আতংকে আরএসও নেতারা

0

শহিদুল ইসলাম,উখিয়া(কক্সবাজার)::বাংলাদেশ মিয়ানমার জুড়ে এখন আলোচনার বিষয় হিসেবে দাঁড়িয়েছে রোহিঙ্গা সমস্যা। রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজারের ২ সীমান্ত উপজেলার সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। যে হারে দলে দলে রোহিঙ্গারা কক্সবাজার-বান্দরবান জেলার বিভিন্ন সমস্যা পয়েন্ট দিয়ে অতিক্রম করে এদেশে ঢুকে পড়ছে।

বিভিন্ন হিসেবে বাংলাদেশে বর্তমানে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠির সংখ্যা ৮ লাখের অধিক বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সূত্রে জানা গেছে। এসব নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায়ে মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আর্থিক ও রাজনৈতিক সামরিক সহায়তায় ইসলামী জঙ্গিবাদের শক্তভীত গড়ে তোলেছে রোহিঙ্গারা। যা বাংলাদেশের জন্যত বটেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য অনেকটা নিরাপত্তা হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রতিদিন শত শত রোহিঙ্গা সীমান্ত ফাঁড়ি দিয়ে এদেশে অনুপ্রবেশ করছে। ২০১৬ সালের ৯ ই অক্টোবর ঘটনার সূত্রপাত। মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের মংডু শহরের কাছে প্রায় ৩শ রোহিঙ্গার একটি সশস্ত্র দল মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী সেনাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ৯ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী সেনা (বিজিপি) নিহত হন। ৩য় দিন ১১ ই অক্টোবর তটমাদৌ অঞ্চলে একই ধরনের আরো ৪ জন সেনা নিহত হন। হামলাকারীরা রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) নামে একটি ইসলামী রোহিঙ্গা জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্য।

রোহিঙ্গাদের গোড়াপতন শুরু হয় ১৯৭৮ সালের সে সময়ের সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান সরকার বিশ্বে নিজের জনপ্রিয়তা বাড়াতে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সামরিক সরকারের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশে বাংলাদেশের সীমান্ত খুলে দেয়। সে সময়ে (বার্মা) বর্তমানে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ২ থেকে আড়াই লাখ রোহিঙ্গা তখন বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে।

১৯৯১-৯২ সালে খালেদা জিয়ার শাসন আমলে রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমারের আধা সামরিক বাহিনী নাসাকা এবং অন্য স¤প্রদায়ের সম্মিলিত আক্রমণের পর নতুন করে আড়াই লাখ থেকে ৩ লাখ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করে। উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে প্রায় সময় অচেনা লোকজনের আনাগোনা ও একাধিক বৈঠক হয়েছে বলে ক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে। জঙ্গিদের নিরাপদ আস্তানাটি গড়ে উঠেছে কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির। রোহিঙ্গা বিদ্রেুাহী সংগঠন আরএসওর সামরিক উপদেষ্ঠা জঙ্গি নেতা কারাবন্দি হাফেজ সালাউল ইসলামের অর্থায়নে ও সহযোগীতায় এবং শতাধিক রোহিঙ্গা নেতা নিয়ে গড়ে উঠেছে ক্যাম্প কমিটি। আর এ সুযোগে জঙ্গিদের তৎপরতা বেড়ে গেছে শিবির অভ্যন্তরে।

রোহিঙ্গা শিবিরের আবু ছিদ্দিক প্রঃ জঙ্গি ছিদ্দিক, নুর মোহাম্মদ, মনিরুজ্জামান, হাফেজ জালাল, মাষ্টার শফিক, মাষ্টার ইকবালের সহযোগীতায় অনিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের মাঝে স্থানীয় এক প্রভাবশালীর সহযোগীতায় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করতে এসে স্থানীয় পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল জঙ্গি সালাউলের সহযোগী আবু তাহের সহ ৩ জন বিদেশী নাগরিক। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সাধারণ শরণার্থীরা জানান, আশ্রিত হয়ে শরণার্থী ক্যাম্পে নিরাপদে বাস করছি। তবে আরএসও নেতা মাষ্টার আয়ুব, আবু বক্কর, মৌলভী নুর হোসেন, মৌঃ শফিক, ড. ইউনুসের ভাই আবু তাহের, আবু তাহেরের মেয়ের জামাই মোঃ ইউনুছ, মৌঃ মোঃ সেলিম ওরফে আবদুল্লাহ, ও রুহুল আমিনের কারণে এপারে ওপারে (বাংলাদেশ-মিয়ানমারে) কোথাও শান্তি থাকছেনা। ওইসব বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্র“প আরএসও ক্যাডাররা কোন দেশের জন্য নিরাপদ নয় বলে একাধিক রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন।

টেকনাফ থানায় আরএসও নেতা মাষ্টার আয়ুব ও আবু বক্কর সহ ৬ জন রোহিঙ্গাদের নাম উল্লেখ করে ১১ জনের বিরুদ্ধে টেকনাফ বিজিবি মামলা দায়ের করেন। এ পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি। উখিয়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের শিঘ্রই ফেরৎ নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন। কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের দায়িত্বরত নতুন ক্যাম্প ইনচার্জ শামশুদ্দোজা এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.