সুজিত দত্ত,পটিয়া প্রতিনিধি:: মাদক ব্যবসা ছেড়ে আলোর পথে ফিরলেন পটিয়া উপজেলার হাইদগাও গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইলিয়াছ (৩২)।
স¤প্রতি চট্টগ্রামের পটিয়া থানার তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেফায়েত উল্লার কাছে অঙ্গীকারনামা দিয়ে তিনি এ পেশা ছেড়ে আলোর পথে আসলেও গত শুক্রবার বিকালে ইলিয়াছ হাইদগাঁও-কেলিশহর আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকায় তার নিজের একটি মুদির দোকান উদ্বোধনের মাধ্যমে নতুন হালাল জীবনের যাত্রা শুরু করেছেন।
হাইদগাও ইউপি চেয়ারম্যান মো: ইউনুচ মিয়া ও কেলিশহর ইউপি চেয়ারম্যান সরোজ সেন নান্টু বলেন, ‘মাদক ব্যবসা সব সময় অন্ধকার অপরাধ জগতের দিকে ঠেলে দেয়।এ পেশায় যারা জড়িত তাদের জীবন যেমন সংকটাপন্ন তেমনি পরিবারের সদস্যদের অবস্থাও হয় নাজুক। তারা পুলিশের ভয়ে যেমন বাড়ীতে থাকতে পারেন না তেমনি পরিবারের সদস্যরা ও সামাজিক ভাবে প্রতিনিয়ত হয় নাজেহাল। তাই এ পেশা থেকে যে ফিরতে নিজের ইচ্ছা শক্তি এবং সামাজিক ও প্রশাসানিক আস্থা অর্জন খুবই জরুরী। আমরা আমাদের এলাকার অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ কমিটির আহবানে যারা সাড়া দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চেয়েছে তাদেরকে সমাবেশের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ করে দিয়েছিলাম। সেই ধারাবাহিকতায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরে ইলিয়াছ মুদির দোকানের মাধ্যমে ব্যবসা করে নিজের জীবন সাঁজানোর যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমরা তার সাফল্য কামনা করি। উত্তর হাইদগাঁও শালিক পাড়া অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ কমিটির নেতৃবৃন্দরা জানান, ‘আমাদের আহবানে সাড়া দিয়ে মোহাম্মদ ইলিয়াছ এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসায় আমাদের এলাকা মানুষ এখন গর্বিত। আমরা এলাকার সব মহল এখন মাদকের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। কেউ আর এ পেশায় জড়িত হলে কোন অবস্থাতে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাকে প্রশাসনের কাছে তুলে দিব।
মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, ভালো করে বাঁচতে হবে সেটিই ছিল আমার কাছে অজানা। এতদিন আমি বুঝতে না পেরে জীবনের অর্ধেক সময় ধরে ছিলাম অন্ধকারে। মাদক সেবন ও বিক্রি কেউ ভালো চোখে দেখে না। পুলিশ, র্যাবের ভয়ে সব সময় থাকতো হতো আতঙ্কে। টাকা কামাই করেছি ঠিকই, কিন্তু মনে শান্তি ছিল না। তাই আগে আমি কি করেছি, সেটি আজ বুঝতে পেরে আমি জীবনকে সুন্দর ও শান্তিতে রাখতে অন্ধকারের পথ ছেড়ে আলোর পথে আসার অঙ্গীকার করেছি।
পটিয়া থানার ওসি শেখ নেয়ামত উল্লাহ বলেন, অপরাধীদেরকে ভালো পথে নিয়ে আসতে পারলে তাদের দেখাদেখি অন্যরাও আলোর পথে আসবে-এই ধরনের চিন্তাভাবনা থেকেই পুলিশের পক্ষ থেকে সব সময় যারা আত্মশুদ্ধি ঘটাতে চায় তাদেরকে সুযোগ দেওয়া হয়। আমার জানামতে পটিয়ার হাইদগাঁওয়ে যারা আলোর পথে ফিরেছে তারা এখন মাদক ছেড়ে বিভিন্ন ব্যবসা-বানিজ্য ও চাকুরী করছে। বর্তমানে ইলিয়াছ যে ব্যবসা করছে তা সত্যিই ভালো দিক।পটিয়ার মাননীয় সাংসদ আলহাজ¦ সামশুল হক চৌধুরী ঘোষণা দিয়েছেন পটিয়াতে মাদক কে জিরো টলারেন্সে নিয়ে আসতে। বর্তমানে পটিয়ায় যেখানেই মাদক এবং অপরাধ সেখানেই পুলিশ অভিযান পরিচালনা করছে। যা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। তবে যারা এ অপরাধ মুক্ত হয়ে আলোর পথে ফিরতে চায় তাদেরকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।