পরিবহন ধর্মঘটে যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে

0

সিটিনিউজ ডেস্ক::বাসচালককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং সড়ক দুর্ঘটনা মামলায় এক ট্রাক চালকের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের প্রতিবাদে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকা ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে দেশের পরিবহন ব্যবস্থা। দূরপাল্লার কোনো বাস চলাচল না করায় সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকা। বাস টার্মিনালগুলো থেকে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে না যাওয়ায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা। জরুরি প্রয়োজনে যাদের একান্তই দূরভ্রমণে যেতে হচ্ছে তারা মাইক্রোবাস, ট্যাক্সিক্যাব জাতীয় গাড়িতে করে যাচ্ছেন গন্তব্যে। এজন্য তাদের গুণতে হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া।

 চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী মিশুক মুনীরসহ পাঁচজনের নিহতের ঘটনায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি ঘাতক বাসচালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন মানিকগঞ্জ আদালত। এছাড়া গতকাল সাভারে সড়ক দুর্ঘটনা সংক্রান্ত মামলায় ঢাকার একটি আদালত এক ট্রাকচালককে মৃত্যুদণ্ড দেয়ায় দেশব্যাপাী এই ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়।

রায়ের প্রতিবাদে পরদিন থেকে চুয়াডাঙ্গায় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট পালন করেন বাস চালক ও শ্রমিকরা। গত রবিবার থেকে খুলনা বিভাগের ১০ জেলাতেও অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট পালন করা হচ্ছে। এরপর আজ সকাল থেকে এই ধর্মঘট দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে সকাল ছয়টার আগেই গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। সেখান থেকে দূরপ্লালার সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। অধিকাংশ জেলা শহরে সিটি সার্ভিসও চলাচল করেনি।

রাজধানীতে সিটি সার্ভিস চললেও তা সংখ্যায় ছিল অনেক কম। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। যানবাহনের জন্য হাজার হাজার যাত্রী ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন। কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে সিএনজি অটোরিকশা বা অন্য যানবাহনে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে কিছু কিছু মানুষকে।

ধর্মঘটের কারণে গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মীদের কাউন্টারে অলস সময় কাটাতে দেখা যায়। বাসগুলো সারিবদ্ধভাবে টার্মিনালের ভেতরে রাখা হয়।

উত্তরবঙ্গগামী এস আর পরিবহনের এক চালক জানান, অন্যায়ভাবে চালক জামিরকে সাজা দেয়া হয়েছে। এর সুরাহা না হওয়া পর্ন্ত ধর্মঘট চলবে।

রংপুর যাওয়ার জন্য কল্যাণপুরে দেখা মেলে মনিরুল ইসলাম নামে একজনের। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, রংপুর যাওয়ার জন্য সকালে এসে দেখি বাস ধর্মঘট। তিনি বলেন, ‘আমার রংপুরে যাওয়ার খুবই প্রয়োজন। বিকালের মধ্যেই রংপুর পৌঁছতে হবে। ধর্মঘটের কারণে কেমনে যাই এ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছি।’

পাশেই দাঁড়ানো আরেক যাত্রী আলফাজুর রহমান বলেন, রাজশাহী যাওয়ার জন্য এখানে এসে দেখি বাস বন্ধ। তিনি বলেন, ‘কে কখন ধর্মঘট ডাকে তা জানা যায় না। কথায় কথায় ধর্মঘট ডাকা শ্রমিকদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।’

যাত্রাবাড়ীতে গিয়েও এমনই চিত্র ধরা পড়েছে। সেখানেও বাস লাইন করে দাঁড়  করানো আছে। অনেক নারী যাত্রী এক হাতে ব্যাগ, আরেক হাতে বাচ্চা নিয়ে বসে আছে। দুএকটি বাস ছেড়ে যেতে পারে এমন সম্ভাবনায় অনেকে অপেক্ষা করছেন। অনেকে আশা না দেখে ফিরে যাচ্ছেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.