মিরসরাইয়ে জঙ্গি আস্তানা : বিএনপি নেতা আটক

0

এম আনোয়ার হোসেন, মিরসরাই : মিরসরাই পৌরসদরে সন্ধান পাওয়া জঙ্গি আস্তানার দোতলা ভবন রিদওয়ান মঞ্জিলের মালিক রিদওয়ানুল হককে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে মিরসরাই থানা পুলিশ। বুধবার (৮ মার্চ) রাতে তাকে আটক করা হয়। রিদওয়ান বিএনপির সাবেক একজন নেতা। তিনি মিরসরাই পৌরসভা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। এদিকে জঙ্গি আস্তানা থেকে অস্ত্র, গ্রেনেডও বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধারের ঘটনায় মিরসরাই থানায় ১০ জনকে আসামী করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে বলে জানান মিরসরাই সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান।
রিদওয়ান বলেন, ‘একসময় বিএনপির রাজনীতি করতাম। ২০১৩ সালে আমার আবুতোরাব প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী কলেজে পড়ুয়া ছেলে বড়তাকিয়ায় বাস চাপায় মারা যাওয়ার পর আমি রাজনীতি থেকে সরে আসি। সন্তানের মৃত্যুর পর স্ত্রী ও মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। মাস দুয়েক আগে স্ত্রীর সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।

রিদওয়ান আরো জানান, মিরসরাই পৌরসভার পূর্ব মিরসরাই গোভনীয়ার তার দোতলা বাড়িতে ৮ টি ইউনিট রয়েছে। তার মধ্যে ১ টি ইউনিটে তিনি এবং তার দুই সন্তান থাকেন। বাকি ৭ ইউনিট ভাড়া দেওয়া হয়। দোতলা ভবনের নীচতলা ফেব্রুয়ারি মাসে মাহমুদুল হাসান নিচের দুইটি ইউনিট ভাড়া নেন। তিনি কাপড় ব্যবসায়ী পরিচয়ে উঠেছিলেন। একটি ইউনিটে ওর বোন, ভগ্নিপতি ও ভাগ্নি উঠেছিল। আরেকটি ইউনিটে চলতি মার্চ মাসে তার পরিবার ওঠার কথা ছিল।

তিনি জানান, মাহমুদুল হাসান নিজেকে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা পরিচয় দিয়েছিলেন। তার ভগ্নিপতির যে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়েছিলেন, সেখানে নাম লেখা আছে ‘কামাল উদ্দিন’। সর্বশেষ গত সোমবার সন্ধ্যায় মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল নিয়ে কথা হয়েছিল তার। পরদিন মঙ্গলবার কুমিল্লার চান্দিনায় ধরা পড়েন তিনি।

মিরসরাই পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মেয়র গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘২০১৩ সালের দিকে যখন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বিএনপি-জামায়াতের অবরোধে ছিল তখন রিদওয়ান সক্রিয় ছিল বিএনপির রাজনীতিতে। মিছিলের অগ্রভাগে থাকা রিদওয়ানের বাসায় অনেক সময় নানা ধরনের গোপন সভাও হত। এই ঘটনায় রিদওয়ানের কী ভূমিকা, সেটাও পুলিশ বের করুক। তিনি আরো বলেন, ভাড়াটিয়ার তথ্য দেওয়ার জন্য বারবার বলা হলেও রিদওয়ান তা দেননি।

তবে রিদওয়ান দাবি করেছেন, ‘সহিংস কিংবা জঙ্গিবাদী কোনো তৎপরতায় তিনি কখনও জড়িত ছিলেন না। আর মাহমুদুলের বিষয়েও তিনি কিছু জানতেন না। গত মঙ্গলবার রাতে যখন পুলিশ তাকে আমার সামনে এনে দাঁড় করায়, তখন আমি বুঝতে পারি সে জঙ্গি কার্যক্রমের সাথে জড়িত।’

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা বলেন, তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে বাড়িওয়ালা রিদওয়ানের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.