সুজিত দত্ত, পটিয়া প্রতিনিধি::চট্টগ্রামের পটিয়ায় খালে বাঁধ দিয়ে রাস্তা নির্মাণের ফলে পটিয়া ও বোয়ালখালী দুই উপজেলার প্রায় ৫ শতাধিক কৃষকের ২শ হেক্টর বোরো আবাদ পানি সেচ সংকটের হুমকির মুখে পড়েছে।
পটিয়া-বোয়ালখালী উপজেলার সীমান্তবর্তী কর্ণফুলী নদীর সাথে প্রবাহিত হারগেজী জোয়ার ভাটা খালে বোয়ালখালী করলডেঙ্গা এলাকার লোকজন চলাফেরা করার জন্য খালে বাঁধ দিয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
সরেজমিনে গিয়ে করলডেঙ্গা এলাকার লোকজন থেকে জানতে চাইলে কাজল চক্রবর্ত্তী নামের এক ব্যক্তি জানায়, করলডেঙ্গা ও ধলঘাট এলাকার মধ্যে চলাচলের জন্য খালের মাঝখানে ব্রীজ করা হবে।
এ ব্রীজ নির্মাণ করার জন্য খালে দুই দিকে বাঁধ দিয়ে মাঝখানের পানি ফেলে দিয়ে ব্রীজের কাঠামো তৈরী করার জন্য এ বাঁধ দেয়া হয়েছে। ব্রীজ নির্মাণ আদৌ হচ্ছে কিনা পটিয়া উপজেলা প্রকৌশলী বিশ^জিৎ দত্ত থেকে জানতে চাইলে তিনি ঐ জায়গায় এখনো ব্রীজের কোন টেন্ডার হয়নি বলে জানান। জোয়ার ভাটা খালে বাঁধ দেয়ার ফলে পটিয়া উপজেলার ধলঘাট, কেলিশহর রতনপুর এলাকার ৫ শতাধিক কৃষকের ২শ হেক্টর বোরো আবাদ ও বোয়ালখালী উপজেলার করলডেঙ্গা ইউনিয়নের প্রায় ৩ শতাধিক কৃষকের দেড়শ হেক্টর বোরো ধান সেচ সংকটের মধ্যে পড়েছে। এর মধ্যে ৫ জন পানি সেচের স্কীম ম্যানেজার রয়েছে। তারা হলো রতনপুর এলাকার ফারুকুল ইসলাম, বোয়ালখালী এলাকার ইকবাল মেম্বারের ভাই মো: জাবের। দক্ষিণ করলডেঙ্গার মো: ইদ্রিস, নুর মোহাম্মদ। পটিয়া পূর্ব রতনপুর এলাকার বদিউল আলম। পটিয়া ধলঘাট এলাকার ফজলুর রহমান। বোরো ধান ছাড়াও খালের দুই পাশের্^ উক্ত এলাকা সমূহে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে রবি শষ্যের চাষ রয়েছে। এ রবি শষ্যের মধ্যে রয়েছে করলা, ঝিঙ্গা, চিচিংগা, তরমুজ, ভাংগী, ঢেড়শ, লাউ, শসা, ক্ষীরা। এসব রবি শষ্যে পানি সেচের ব্যবস্থা না থাকলে পানির অভাবে ক্ষেতগুলো মরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত ১০ দিন যাবত খাল বন্ধ থাকায় অনেক রবি শষ্যে মরণ দেখা দিয়েছে। এলাকার কৃষক বাবলু মিয়া জানায়, তার ৩০ শতক জমির ক্ষীরা ক্ষেত খালে পানি না থাকায় সেচ দিতে পারেনি। ফলে ক্ষীরা ক্ষেতে মরণ দেখা দিয়েছে। কৃষক দিদার ও রবিউল জানান, তাদের করলা ও ঝিঙ্গা ক্ষেত পানির অভাবে লালচে হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে পটিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা থেকে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিগত ২১ জানুয়ারী এলাকার লোকজন খালে বাঁধ দিবে বলে তারা শংকা প্রকাশ করে একটি অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে দিয়েছেন। বিষয়টি তিনি অবগত হয়েছেন। বাঁধটি সম্পর্কে তিনি পুরোপুরি অবগত নয়। বাঁধ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন বলে তিনি জানিয়েছেন। এলাকার চাষীরা অবিলম্বে উক্ত বাঁধ অপসারণ করে অথবা বিকল্প পানি চলাচলের ব্যবস্থা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছে।