ধর্ম ও জীবন : রাগ বা ক্রোধ খারাপ এটা আমরা সবাই জানি। এর পরিণতিতে ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। এই রাগের কারণে মানুষ অনেক মারাত্মক পথে পা বাড়াতে পারে, অনেক ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আর এই ভুলের খেসারত মানুষকে দিতে হয়। সমাজে অনেক অনিষ্ঠ-অনাচারের উৎপত্তি রাগ থেকে। এজন্য ইসলাম রাগ নিবারণের কথা বলেছে।
রাগ একটি প্রাকৃতিক বিষয়, মানুষ মাত্রই সবার মধ্যে এটি রয়েছে। তবে রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে বলেছে ইসলাম। আর এই রাগ কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এর পদ্ধতিও বলে দিয়েছে প্রকৃতির ধর্ম ইসলাম। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ওই ব্যক্তি বীরপুরুষ নয় যে অন্যকে ধরাশায়ী করে; বরং সেই প্রকৃত বীর যে রাগ বা ক্রোধের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে’ (বুখারি)।
মানুষ স্বাভাবিক অবস্থায় একজন আরেকজনকে ক্ষমা করে দেয়া সহজ ব্যাপার; কিন্তু রাগের সময় ক্ষমা করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। প্রকৃত মুমিন যারা তারা রাগের সময়ও অন্যকে ক্ষমা করে দেয়। আল্লাহ মুমিনদের প্রশংসায় বলেন, ‘এবং যখন তারা ক্রোধান্বিত হয় তখনো তারা ক্ষমা করে দেয়’ (সূরা শুরা)। হাদিসে আছে, এক ব্যক্তি রাসুলের কাছে এসে কিছু নসিহত করতে বললেন। তখন তিনি বললেন, রাগ করবে না। লোকটি বারবার তার কথাটি বলতে থাকলে রাসুলও একই জবাব দিলেন এবং বললেন রাগ করবে না’ (বুখারি)। রাগ কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এর পদ্ধতি আল্লাহর রাসুল (সা.) বলে দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন ‘দাঁড়ানো অবস্থায় কেউ রাগ বা ক্রোধান্বিত হলে সে যেন বসে যায়। এতেও যদি তা প্রশমিত না হয় তবে সে যেন শুয়ে পড়ে’ (তিরমিজি)। রাগের কুফল বর্ণনা করে রাসুল (সা.) বলেন, ‘রাগ মানুষের ঈমানকে নষ্ট করে দেয় যেমনিভাবে তিক্ত ফল মধুকে নষ্ট করে দেয়।’ (বাইহাকি) দীনি কোনো প্রয়োজনে মাঝে মাঝে রাগ ইসলামেও সমর্থনযোগ্য। তবে অহেতুক রাগ করা, পার্থিব কোনো কারণে রাগের প্রকাশ ঘটানো ইসলাম সমর্থন করে না। কেউ যখন উত্তেজিত থাকে তখন তাকে কোনো ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করতে বলা হয়েছে।
কারণ উত্তেজনার মুহূর্তে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব হয় না। রাগ আসার পরও কাউকে ক্ষমা করে দিলে এর প্রতিদানের কথা ইসলামে উল্লেখ আছে। লেখক: আলেম