ট্রাম্পের নতুন নিষেধাজ্ঞাও স্থগিত করলেন আদালত

0

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: ক্ষমতায় বসেই নির্বাহী আদেশবলে সাত মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র সফরের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশগুলো হলো—ইরাক, ইরান, সিরিয়া, ইয়েমেন, সুদান, লিবিয়া ও সোমলিয়া। এ নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে সারা বিশ্বে সমালোচনার ঝড় ওঠে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের পথে পথে বিক্ষোভ দেখায় জনতা। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগও এ সিদ্ধান্তকে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে ওই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় স্থগিতাদেশ দেয়।

ওই স্থগিতাদেশের পরও হার মানেননি ট্রাম্প। তাঁর প্রশাসন ইরাককে বাদ দিয়ে বাকি ছয়টি দেশের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেয়। নতুন ওই আদেশবলেও সাময়িকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থী কর্মসূচি বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া ১২০ দিনের জন্য শরণার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকা নিষিদ্ধ করা হয়।

সংশোধিত ওই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্র সময় বৃহস্পতিবার ভোর থেকে। কিন্তু বিতর্কিত ওই আদেশ কার্যকরের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের ডিস্ট্রিক্ট আদালতের বিচারক ডেরিক ওয়াটসন ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।

বিচারক ডেরিক ওয়াটসন এই নিষেধাজ্ঞার পক্ষে ‘প্রশ্নবিদ্ধ যুক্তি’  দাঁড় করানোর অভিযোগ করেন। অন্যদিকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় রাষ্ট্রপক্ষ জাতীয় নিরাপত্তার কথা জোর দিয়ে বলে।

এদিকে স্থগিত আদেশের পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একে ‘নজিরবিহীন বিচারিক কর্মকাণ্ড’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। হাওয়াই অঙ্গরাজ্যে এ রায়ের কিছুক্ষণের মধ্যে এক টুইট বার্তায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, প্রথম দফার নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধেও মামলা করেছিল ওই রাজ্য। পরে সিয়াটলের একজন বিচারক ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশ স্থগিতের আদেশ দেন। ট্রাম্প প্রশাসন ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলেও সানফ্রান্সিসকোর আদালতের তিন বিচারকের প্যানেল তা খারিজ করেন।

আর দ্বিতীয় নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে হাওয়াই রাজ্যের মামলায় বলা হয়েছে, এই নির্বাহী আদেশের ফলে হাওয়াইয়ের মুসলিম জনগোষ্ঠী, পর্যটন আর বিদেশি ছাত্ররা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

হাওয়াইয়ের অ্যাটর্নি জেনারেল ডাউগ চিন বলেন, ‘এই রাজ্যের বিশেষত্ব হলো যে ইতিহাস এবং সাংবিধানিকভাবে এখানে কোনো বৈষম্য করা হয় না। এখানে ২০ শতাংশ বাসিন্দা বিদেশে জন্ম নেওয়া। এক লাখ প্রবাসী বাস করে আর অন্তত ২০ শতাংশ কর্মী বিদেশি নাগরিক।’

চিন আরো বলেন, ‘হাওয়াইয়ের মানুষ মনে করে, নতুন মানুষদের প্রতি ভীতি একটি খারাপ নীতি।’ তবে এ মামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি মার্কিন জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসনের যুক্তি হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রকে সন্ত্রাসবাদের হাত থেকে নিরাপদ রাখতে এই নিষেধাজ্ঞা দরকার।

মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রী জন কেলি জানিয়েছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের প্রবেশের হার অন্তত ৪০ শতাংশ কমেছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.