উদ্বোধনের অপেক্ষায় আনোয়ারা ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন

0

জাহেদুল হক,আনোয়ারা : আনোয়ারা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ষ্টেশনটি অজ্ঞাত কারণে উদ্বোধনের অপেক্ষায় ঝুলে আছে। দীর্ঘদিন ধরে ষ্টেশনটি উদ্বোধন না হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে,আনোয়ারা উপজেলার আয়তন ১৬৪.১০ বর্গ কিলোমিটার। প্রতিবছর অগ্নিকান্ডে এ উপজেলায় ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে এলাকাবাসিকে রক্ষা করতে সরকার ২০১১ সালে উপজেলা সদরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল অফিস সংলগ্ন স্থানে ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন স্থাপনের জন্য টেন্ডার আহবান করে গণপূর্ত বিভাগ। চট্টগ্রামের মেসার্স হাওলাদার এজেন্সী নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ কাজের দায়িত্ব পায়। কাজটি যথাসময়ে শুরু ও শেষ করতে নানাভাবে গড়িমসি করে প্রতিষ্ঠানটি। নির্মাণকালীন এ ফায়ার ষ্টেশনটির নির্মাণ কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।

উপজেলার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এলাকায় একটি ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন নির্মানের। অবশেষে সে দাবি পূরণে ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশনের নির্মাণ কাজও শেষ হয়েছে। ২০১৬ সালের মধ্যভাগে আনোয়ারা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ষ্টেশনের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হওয়ার পরও সেখানে আজ পর্যন্ত অগ্নিনির্বাপণ কোনো যানবাহন,পাম্প ও লোকবল সরবরাহ করা হয়নি। ফলে উপজেলার কোথাও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে চট্টগ্রামের লামার বাজার ও পটিয়া ষ্টেশন থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দুরত্ব পথ পারি দিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে হয়। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পৌঁছাতে ঘন্টাখানেকেরও বেশি সময় লেগে যায়। ততক্ষণে ভুক্তভোগীদের সর্বস্ব আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায়।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সূত্র জানায়,তিনতলা বিশিষ্ট এ ফায়ার ষ্টেশনে দুটি গাড়ি ও ১৭ জন লোকবল থাকবে। তাদের মধ্যে দুজন গাড়ি চালক ও ১৫ জন ফায়ারম্যান। আনোয়ারায় সর্বশেষ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে ৯ মার্চ। উপজেলা সদরের সাদমুছা শিল্পপার্কের একটি টেক্সটাইল ইউনিটে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর আগে ১ মার্চ উপজেলার চাতরী চৌমুহনী বাজারে আগুন লেগে দুই দোকানের অন্তত ৭০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়।

সাদমুছা গ্রুপের ডিজিএম (টেক্সটাইল) কৌশিক চক্রবর্ত্তী বলেন,কারখানায় আগুন লাগার পর শহর থেকে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তার আগেই আগুনে পুড়ে ৩০ লাখ মিটার কাপড়,২৪ টন সুতা ও অগণিত মেশিনারীজ পার্টস নষ্ট হয়ে যায়। যদি কাছের ফায়ার ষ্টেশনটি চালু থাকতো তাহলে এতো ক্ষয়ক্ষতি হতো না। আনোয়ারা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো.আবুল হোসেন জানান,গত কয়েক বছরে আনোয়ারায় অগ্নিকান্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কোটি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়েছে। উপজেলার ফায়ার ষ্টেশনটি চালু থাকলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আসতো।

জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী বলেন,দীর্ঘদিন ধরে আনোয়ারাবাসি একটি ফায়ার ষ্টেশনের অভাবে কষ্ট পেলেও এখন কষ্ট দূর হবে। ফায়ার ষ্টেশনটি উদ্বোধনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগির এটি চালু করা হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.