ধর্ম ও জীবন : শান্তি ও মানবতার ধর্ম ইসলাম হলো- জীবনমুখী ধর্ম। ইসলামে বৈরাগ্যতার কোনো অবকাশ রাখা হয়নি। পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো নবী-রাসূল সংসার ত্যাগী ও বৈরাগী ছিলেন না। প্রত্যেকেই সংসার করেছেন।
এ প্রসেঙ্গে কোরআনে কারিমে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ -সূরা জুমা: ১০
রিজিক অন্বেষণে আমরা অনেকেই আশানুরূপ সফলতা পাই না। অনেকে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেও কাঙ্খিত সুখ-প্রশান্তি বা মানসিক পরিতৃপ্তি অর্জন করতে পারি না। অর্থাৎ বহু পরিশ্রম করে, দু’হাতে উপার্জন করেও অভাব দূর হয় না, টানাটানি লেগেই থাকে!
এর কারণ বর্ণিত হয়েছে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিন্মোক্ত হাদিসে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহতায়ালা বলেন, হে আদম সন্তান! তুমি (উপার্জনের উপায় অবলম্বনের পাশাপাশি) আমার ইবাদতের জন্য নিবিড়ভাবে নিজেকে নিবিষ্ট কর, আমি তোমার অন্তরকে ঐশ্বর্যে পূর্ণ করে দিব এবং তোমার অভাব দূর করে দিব। আর যদি তা না কর, আমি তোমার দু’হাত কর্মব্যস্ততায় পরিপূর্ণ করে দিব অথচ তোমার অভাব-অনটন দূর করব না।’ –সুনানে তিরমিজি, হাদিস নং- ২৪৬৬
সুতরাং মুমিন-মুসলমানকে আল্লাহতায়ালা প্রকৃত স্বচ্ছলতা, মানসিক সুখ এবং অনাবীল প্রশান্তি তখনই দান করবেন যখন সে ইবাদতে নিবিড়ভাবে নিবদ্ধ থেকে উপার্জনের চেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
এর বিপরীতে আল্লাহতায়ালার স্মরণ ও যথানুরূপ ইবাদতবিমুখ থেকে কেবল উপার্জনের পেছনে দৌঁড়াতে থাকলে হয়তো কাড়ি কাড়ি টাকার বোঝা বহন করা সম্ভব হবে; কিন্তু মানসিক সুখ ও প্রশান্তি নামক নিয়ামত অধরা থেকে যাবে। অভাব-অনটন ও টানাটানি কখনও দূর হবে না। আল্লাহতায়ালা আমাদের সহায় হোন। আমিন।- লেখক: ইসলাম প্রচারক, দাম্মাম ইসলামিক সেন্টার, সৌদি আরব।