পুকুরের পানিতে তৈরী হচ্ছে মিষ্টি, নজরদারি নেই প্রশাসনের

0

সুজিত দত্ত, পটিয়া প্রতিনিধি::চট্টগ্রামের পটিয়ার কলেজ গেইট সম্মুখস্থ বেশ কয়েকটি মিষ্টির দোকানে দেখা যায় মিষ্টি তৈরীর উৎসব। তৈরীকৃত মিষ্টি গুলো রাখা হচ্ছে যত্রতত্র অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। মিষ্টি তৈরীর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর পানি। এখানে বছরের পর বছর এ অবস্থা চলতে থাকলেও প্রশাসনের দৃষ্টি নেই। আসছে বাঙালীর প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ। এ নববর্ষকে বরণে চারদিকে যেমন সাজ সাজ রব ও বর্ণাঢ্য প্রস্তুতি তেমনি একদিনেই লাখ লাখ টাকার মিষ্টি বিক্রি করতে দোকানীরা যেন এক মাস আগে থেকেই শুরু করে মিষ্টি তৈরীর কাজ।

জানা যায়, পটিয়া কলেজ গেইট সংলগ্ন বেশ কয়েকটা মিষ্টিন্ন তৈরীর দোকান রয়েছে। যেখানে মিষ্টি তৈরীর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে পটিয়া থানার সম্মুখস্থ জেলা পরিষদ মালিকানাধীন পুকুরের পানি। সরেজমিন দেখা যায়, এ পুকুরটি গত কয়েকবছর ধরে কচুরিপনায় আসক্ত। পানি গুলো যেন মেঘের চেয়েও কালো। যেখানে কেউ রোগব্যাধিতে আক্রান্তের ভয়ে পা ফেলতে ভয় পায়, সেই পুকুরের পানি দিয়েই তেরী হয় মিষ্টান্ন সামগ্রী। শুধু তাই নয়, এর আশপাশ এলাকা গুলো ও ময়লা আবর্জনাযুক্ত স্যাতসেতে। যা কেউ এক নজর না দেখলে বিশ্বাসই করতে পারবে না।

এব্যাপারে মিষ্টি কিনতে আসা জামাল উদ্দিন নামে এক ক্রেতা বলেন, আমরা বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে এখান থেকে মিষ্টি কিনি। সামনে নববর্ষ। এ নববর্ষে প্রত্যেকের ঘরে ঘরে মিষ্টির চাহিদা থাকবে। যে কারণে ১/২ সপ্তাহ পূর্ব থেকে দোকানীরা মিষ্টি তৈরী করে জমা করে রাখছে। যা মানব দেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর বলেই মনে হচ্ছে। মফিজুর রহমান নামে আরেক ক্রেতা বলেন, শুভ কাজের মিষ্টি যেন অশুভ বার্তা নিয়ে আসার জন্যেই এখানে তৈরী হচ্ছে, আমরা সুন্দর পরিবেশে স্বাস্থ্য সম্মত পরিবেশে মিষ্টি সহ সব পন্য পাওয়ার নিশ্চয়তা চাই।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মো: হাসানুজ্জামান বলেন, সরকার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে কঠোর আইন প্রণয়ন করেছে। এতে পন্যের মোড়ক ব্যবহার না করলে এক বছর কারাদন্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা। মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করলে ১ বছর জেল অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, সেবার মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করলে ১ বছর কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জারিমানা, ধার্য্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে পন্য ঔষুধ বা সেবা বিক্রয় করলে ১ বছর জেল অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, ভেজাল ঔষুধ ও পন্য বিক্রয় করলে তিন বছর জেল অথবা ২ লাখ টাকা জরিমানা, খাদ্যে পন্য নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রন করলে ৩ বছর কারাদন্ড অথবা ২ লাখ টাকা জরিমানা, অবৈধ প্রক্রিয়ায় পন্য উৎপাদন করলে ২ বছর কারাদন্ড, ওজনে কারচুপি করলে ১ বছর কারাদন্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, নকল পন্য প্রস্তুত করলে ৩ বছর কারাদন্ড বা ২ লাখ টাকা জরিমানা সহ কঠোর আইনের বিধান করা হয়েছে।

বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সহ এবং আমরা কঠোর নজরদারীর মাধ্যমে ভোক্তার অধিকার সুরক্ষায় চট্টগ্রামের সব উপজেলায় কাজ করে যাচ্ছি। ভ্রাম্যমান আদালত বেশ কয়েকটি দোকানকে ভেজাল মিষ্টি তৈরীর অপরাধে জরিমানা করেছে। এরপরও দোকানদারগণ সতর্ক না হলে তাদের বিরুদ্ধে কাঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.