মাছ ধরার নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কারিগররা

0

জাহেদুল হক,আনোয়ারা::ইলিশ মৌসুম সামনে রেখে আনোয়ারা উপকূলে মাছ ধরার নৌকা তৈরির হিড়িক পড়েছে। ইতিমধ্যে ছোট বড় প্রায় দেড় শতাধিক নৌকা তৈরি করা হয়েছে। এসব নৌকায় ইঞ্জিন বসানোসহ রংয়ের কাজ চলছে পুরোদমে। পাশাপাশি আরো অর্ধশতাধিক নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কারিগররা।

জানা গেছে,উপজেলার উপকূলীয় ইউনিয়ন রায়পুর,জুঁইদন্ডী ও বারশতের অসংখ্য মানুষ সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। আর নদী বা সাগরে মাছ ধরার অন্যতম উপকরণ হচ্ছে নৌকা। প্রতিবছর ইলিশ মৌসুম সামনে রেখে উপকূলীয় এই তিন ইউনিয়নের নদী বা সাগর পাড়ে নৌকা তৈরি বা মেরামতের হিড়িক পড়ে যায়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি জোরেশোরে চলছে নৌকা তৈরির কাজ। তাই বাজারে কাঠের দাম একটু বেশি হলেও মিস্ত্রীরা নৌকা তৈরিতে মনোযোগ দিয়েছেন।

সরেজমিন ঘুরে উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের উত্তর পরুয়াপাড়া থেকে বার আউলিয়া পর্যন্ত আর ধলঘাট থেকে দক্ষিণ সরেঙ্গা পর্যন্ত এলাকার বিভিন্ন স্থানে নৌকা তৈরি ও মেরামতের দৃশ্য চোখে পড়েছে। আর কাঠমিস্ত্রীদের পাশাপাশি নৌকার মালিকরা নৌকা তৈরির উপকরণ সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। গহিরা গ্রামের বহদ্দার ছালেহ আহমদ বলেন,উপকূলের প্রায় বিশ হাজারের বেশি মানুষ মৎস্যজীবি। এরা সাগরে মৎস্য আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে। উপকূলের মানুষের জীবন-জীবিকার সাথে নৌকা জড়িত। এ জন্য ইলিশ মৌসুম আসার আগেভাগে নৌকা তৈরি ও পুরাতন নৌকা মেরামত করে। একটি নৌকা তৈরি করতে খরচ হয় দেড় লাখ থেকে দুই লাখ টাকা। আর বড় ট্রলার হলে কমপক্ষে ৫ লাখ টাকা খরচ পড়ে।

জুঁইদন্ডী গ্রামের নৌকার কারিগর (কাঠমিস্ত্রী) আবদুচ ছবুর জানান,ছোট-বড় নৌকা তৈরিতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের কাঠ ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে গর্জন,মেহেগুনী,আকাশি,লিচু,কাঁঠাল,পৃথ্বীরাজ,কড়ই বা শিলকড়ই গাছের কাঠ বেশি ব্যবহার হয়। তিনি আরো জানান, এই উপজেলায় প্রায় দুই শতাধিক কাঠমিস্ত্রী রয়েছে। বেশ আর কম সকলে এখন নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাদের পাশাপাশি আরো অন্তত তিন শতাধিক হেলপার এ কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
দক্ষিণ পরুয়াপাড়া গ্রামের বেড়িবাঁধের খাদে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কাঠমিস্ত্রী নজির আহমদ বলেন,প্রতিবছর এ সময়ে নৌকা তৈরির হিড়িক পড়ে যায়। একটি নৌকা তৈরি করতে এক থেকে দেড় মাস সময় লাগে। নৌকার আকার ও প্রকার ভেদে মজুরি নেওয়া হয়। তবে একটি নৌকা তৈরি করতে কমপক্ষে ৪০-৬০ হাজার টাকা মজুরি আসে।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গৌতম বাড়ৈ জানান,আনোয়ারার উপকূলীয় তিন ইউনিয়নে নৌকা তৈরি হয় বলে জানতে পেরেছি। তবে ইলিশের আকাল হওয়াতে মৎস্যজীবিরা পেশা পাল্টাচ্ছে। তাই আগের মতো নৌকার ব্যবহার অনেকাংশে কমেছে। তাই এ শিল্পে কিছুটা ভাটা পড়েছে। এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.