নিজস্ব প্রতিবেদক::মাদক আর সন্ত্রাসকে একই জিনিস উল্লেখ করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেছেন, যারা মাদকাসক্ত তারাই বিভিন্ন সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত হয়। মাদককে নিয়ন্ত্রণ করা গেলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।
রোববার (৩০ এপ্রিল) দুপুর ১২ টায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘মাদকমুক্ত চট্টগ্রাম মহানগরী গড়ে তোলার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মেয়র বলেন, মাদক সেবন করতে করতে যখন কেউ চরম পর্যায়ে পৌছে তখন মাদক সেবনের টাকা জোগাড় করার জন্য মানুষের কাছে মিথ্যা বলে টাকা নেয়ার চেষ্টা করে। এমনকি তারা মা অসুস্থ, বোনের ক্যানসার ইত্যাদি কথা বলে মানুষের কাছ থেকে টাকা নেয়।
আর যখন একজন মাদকসেবীর পরিচয় সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন তাকে আর কেউ বিশ্বাস করেনা। তখন সে মাদকের টাকার জন্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে।
মেয়র আরো বলেন, মাদকমুক্ত করবো সেটা বলবনা তবে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা হবে আমাদের প্রথম লক্ষ্য। এর পরে চূড়ান্ত ধাপ হচ্ছে মাদক মুক্ত করা।
অনেক মেধাবি, ভালো পরিবারের ছেলে-মেয়ে মাদকাসক্ত হচ্ছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, অনেকের ছেলে মাদকাসক্ত হয়েছে। কিন্তু নিরাময় কেন্দ্রে পাঠাচ্ছেনা জানাজানি হওয়ার ভয়ে। মাদক নিয়ন্ত্রণ করার আগে মাদকের সহজলভ্যতা বন্ধ করতে হবে। নতুন নতুন মানুষ মাদকাসক্ত হচ্ছে। যারা ইতোমধ্যে মাদকাসক্ত হয়েছে তাদেরকে মুলধারায় আনতে হবে।
মাদককে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে ইউনিট গঠন করা হবে। সম্ভব হলে পাড়া-মহল্লা ভিত্তিক জনপ্রতিনিধি দিয়ে ইউনিট গঠন করতে হবে।যারা মাদকাসক্তদের সতর্ক করতে পারবে।
নগরীর ৪১টি ওয়ার্ড থেকে আসা বাসিন্দারা মাদক নিয়ে স্ব স্ব ওয়ার্ডের সমস্যার কথা তুলে ধরে কিছু সুপারিশও তুলে ধরেন।
বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে আসা অধিকাংশ বাসিন্দা অভিযোগ করেন, প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে মাদকের বিস্তার হচ্ছে। মাদক মামলার আসামীরা যাতে জামিনে বেরিয়ে আসতে না পারে সে জন্য প্রশাসনকে উদ্যোগী আহ্বান জানান তারা।
এরপর বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ ইকবাল বাহার বলেন, শুধু পুলিশ প্রশাসনের উপর দোষ চাপিয়ে লাভ নেই। এ দেশের নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকের দায়িত্ব আছে নিজ নিজ জায়গা থেকে কাজ করার।
মাদকের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করে পুলিশ কমিশনার বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ১৪৫টি বিটে অভিযোগ বক্স স্থাপন করা হবে। পুলিশের কোন গাফিলতির কারণে যাতে মাদকের বিস্তার না হয় সেই জায়গাতে আমরা জিরো টলারেন্স ঘোষণা করছি। এই দেশ এই মাটি আমাদের। এটিকে ভালো রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক শামীম আহমদ। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ২৭ নং দক্ষিণ আগ্রবাদ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এইচ এম সোহেলের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার(ট্রাফিক) দেবদাস ভট্টাচার্য,প্যানেল মেয়র ১ চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী,প্যানেল মেয়র ২ জোবাইরা নার্গিস,চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী (ভারপ্রাপ্ত) আবুল হোসেন,চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেট মিসেস নাজিয়া শিরিন ও কাউন্সিলরবৃন্দ।
সিটিনিউজ/এএম