নিজস্ব প্রতিবেদক:: মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ সহ ৬ দফা দাবীতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রিয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার (৩ মে) সকালে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার উদ্যোগে চট্টগ্রাম কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার চত্বরে আয়োজিত প্রতীক অনশন কমসূচিতে সংহতি প্রকাশ করতে গিয়ে আর্ন্তজাতিক সমাজবিজ্ঞানী ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন বলেছেন, দেশের শিক্ষার সার্বিক উন্নয়নে মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করন এখন সময়ের দাবি।
এবারের জাতীয বাজেটের পূর্বে তিনি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করনে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শিক্ষার মান উন্নয়নে বেসরকারি শিক্ষক সমাজের দাবী যৌক্তিক বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।তিনি বলেন, সমাজের অন্য পেশার আন্দোলনের সাথে শিক্ষকদের আন্দোলনের কোন তুলনা চলে না। ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় এ আন্দোলনের প্রতি নিজের সহমর্মিতা প্রকাশ করেন। তিনি বাশিস এর সকল দাবির সাথে একমত পোষন করে বলেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় বেসরকারি শিক্ষকদের মর্যাদা হানি করা হচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করনের পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর স্বপ্ন ছিল মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করন। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে এ দাবী বাস্তবায়নে গুরত্ব আরোপ করেন।
প্রতীকী অনশন কর্মসূচি চলাকালে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাশিস চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার সভাপতি সৈয়দ লকিতুল্লাহ। বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের এ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ.কিউ.এম সিরাজুল ইসলাম, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট রতন কুমার রায়, রেলওয়ে পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মোঃ মছরুর হোসেন, পরিবেশ সংগঠন ইকো ফ্রেন্ডস এর সাধারন সম্পাদক নোমান উল্লাহ বাহার, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির চট্টগ্রাম বিভাগিয় সভাপতি অধ্যাপক উত্তম চৌধুরী, জেলা বাক্বিশিস নেতা অধ্যাপক অশোক সাহা।
সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বাশিস এর দাবির প্রতি একমত পোষন করে বলেন, বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী সরকারি আমলাদের একটি স্বার্থান্বেষী মহল দ্বারা পরিচালিত। হেফাজত ও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির ইন্ধনে পাঠ্যপুস্তকে পরির্বতন এনে সা¤প্রদায়ীকতা সৃষ্টি করেছেন। যতদিন এ শিক্ষামন্ত্রী ক্ষমতায় থাকবেন ততদিন শিক্ষার দায়িত্ব পালনকারি এ বৃহৎ পেশাজীবী অংশের কোন অধিকার বাস্তবায়ন হবে না। তিনি শিক্ষকদের ৫% ইনক্রিমেন্ট ও বৈশাখী ভাতা সহ ন্যায্য দাবিগুলোর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বলেন, সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য শিক্ষা ব্যবস্থার অগ্রগতির প্রধান অন্তরায়। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা বেসরকারি শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। শিক্ষার ৯৫% দায়িত্ব পালন করেন বেসরকারি শিক্ষক সমাজ।তিনি সাংবাদিক সমাজের পক্ষে শিক্ষকদের সকল দাবি পূরণে সহযোগীতার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
প্রতীক অনশন কর্মসূচি চলাকালে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আঞ্চলিক শাখার সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ও যুগ্ম সম্পাদক শিমুল মহাজন ও মোঃ আলতাজ মিয়ার যৌথ সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন আঞ্চলিক সাধারণ সম্পাদক অঞ্চল চৌধুরী। আঞ্চলিক জেলা উপ-জেলা নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, নির্মল দাশ, তাহেরুল ইসলাম, অজিত দাশ, জাহাঙ্গীর আলম, মোঃ আব্দুর রহিম চৌধুরী,আব্দুল মালেক,মুকুল ভর্ট্টার্চায, রতন চৌধুরী, তাপস চক্রবর্তী , মোঃ মহসিন, ফিরোজ চৌধুরী, মনিকা সেন, মুজিবুল হক, মোঃ জানে আলম, শফিক উল্লাহ, খুরশিদ রোকেয়া, মোঃ আমির হোসেন, শ্যামল দে, স্বপ্না বড়–য়া প্রমুখ।
মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্ঠা সুনীল চক্রবর্তী, শান্তি রঞ্জন চক্রবর্তী, চট্টগ্রাম মহানগরীর সভাপতি নুরুল হক সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কানুনগো, উত্তর জেলার সভাপতি রণজিত নাথ, দক্ষিণ জেলা সভাপতি মোঃ ওসমান গণি, সাধারণ সম্পাদক ছগির মোহাম্মদ, আঞ্চলিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে নুরুল মোস্তফা, আ.ক.ম শহীদুল্লাহ মানিক, সৃষ্টিব্রত পাল, স্বপন চন্দ্র সাহা,সঞ্জিব কুসুম চৌধুরী, শক্তি চৌধুরী, মোঃ আবুল কালাম, বিচিত্রা চৌধুরী, দেবেশ দাশ, মোঃ কামাল উদ্দিন, বিশ্বজিৎ বড়ৃয়া, মোঃ আলী, অলক সেন, চাঁন মিয়া, মোঃ মিয়া, রঞ্জিত পাল, মোঃ সেলিম উদ্দিন, মকসুদুল করিম, সন্তোষ দাশ প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বিক্ষিপ্তভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করন না করে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন, সরকারি শিক্ষক কর্মচারিদের ন্যায় এমপিও ভুক্ত শিক্ষক কর্মচারিদের ৫% বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি, বাংলা নববর্ষ ভাতা, বাড়ি ভাড়া, র্পূণাঙ্গ উৎসব ও চিকিৎসা ভাতা, জাতি সংঘের ইউনেস্কো ও আইএলও এর সুপারিশের আলোকে শিক্ষাখাতে জিডিপির ৬% বরাদ্দ, নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক কর্মচারিদের এমপিও ভুক্ত করন, অবসর গ্রহণের ৬ মাসের মধ্যে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা প্রদানের মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষকদের ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারের প্রতিুুু জোর দাবি জানান।
সমাবেশে বক্তারা ১৫ মে এর মধ্যে দাবি মানা না হলে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে কঠোর কর্মসূচি ঘোষনা করা হবে বলে জানান।