ইসলামের নামে উগ্রপন্থী তৎপরতা দিন দিন বাড়ছে

0

নিজস্ব প্রতিনিধি :  ইমাম আ’যম কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক মাওলানা এম.এ মতিন বলেন,ইসলামের নামে উগ্রপন্থী তৎপরতা দিন দিন বাড়ছে। যারা ইমামে আ’যম আবু হানিফাসহ চার মাযাহাব মানেন না ওরা অবশ্যই পথভ্রষ্ট। এদের ঈমান আক্বিদা পরিপন্থী তৎপরতার বিরুদ্ধে মুমিন মুসলমানদের সোচ্চার হতে হবে।

সোমবার(৮ মে) বিকেলে নগরীর মুসলিম হলে রাবেত্বায়ে ওলামায়ে আহলে সুন্নাত বাংলাদেশ এর উদ্যোগে ইমাম আ’যম কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। জামেয়া আহমদিয়া সুন্নীয়া আলিয়ার অধ্যক্ষ আল্লামা হাফেজ সোলায়মান আনসারী কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন। কনফারেন্সে বক্তারা বলেন, মাযহাব মানা ও স্বীকার করা ফরজ।

আহলে হাদিস নামে বিকৃত মতাদর্শী ধর্মীয় উপ-গোষ্ঠী যুগ যুগ ধরে চলে আসা ইসলামের বিধি-বিধানের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত বিষোদগার চালাচ্ছে। এই মাযহাব বিরোধীরা অবশ্যই পথভ্রান্ত এবং ওরাই জঙ্গিবাদে জড়িয়ে ইসলামের ভুল অনুশীলনে লিপ্ত। শবে বরাত, ইসালে সওয়াব, জিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর, কবরের নিকট কোরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি মীমাংসিত ইসলামের বিধি বিধানের ব্যাপারে অনাবশ্যক বিতর্ক তৈরি করে লামাযহাবীরা মুসলমানদের ঈমান-আক্বিদা বিনষ্টের পাঁয়তারায় লিপ্ত।

এদের বিরুদ্ধে সামাজিক জাগরণ ও জনসচেতনতার ওপর বক্তারা গুরুত্বারোপ করেন। কনফারেন্সে বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় শায়খুল হাদীস আল্লামা কাযী মঈনুদ্দিন আশরাফী বলেন, মাজার জিয়ারত, জিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর, কবরের নিকট কুরআন তিলাওয়াতের বৈধতা নিয়ে আপত্তি তোলার সুযোগ নেই।

প্রিয় নবী(দ.) ইলমে গায়েব তথা অদৃশ্য বিষয়ের ওপর জ্ঞান রাখেন। তাইতো একটি কবরস্থানে কবরবাসীর মর্মন্তুদ শাস্তি দেখতে পেয়ে তিনি এই বিষয়ে সাহাবীদেরকে সতর্ক করে দিয়েছেন। প্রস্তাব করে ভালভাবে পরিষ্কার না হওয়ার দরুন কবরবাসীর আযাব প্রত্যক্ষ করে প্রিয় নবী(দ.) যে সতর্কবাণী করে গেছেন তাতে তাঁর ইলমে গায়েবের প্রমাণ মিলে।

কনফারেন্সে ইমামে আ’যম আবু হানিফা (রা.) এর বিরুদ্ধে উত্থাপিত ভিত্তিহীন অভিযোগ সমূহের দাঁতভাঙ্গা জবাব নিয়ে আলোচনা করেন মিডিয়া ভাষ্যকার, ঢাকা কাদেরিয়া তৈয়বিয়া কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ আল্লামা আবুল কাশেম মুহাম্মদ ফজলুল হক। আহলে হাদিসের পরিচয় ও তাদের ঈমান বিধ্বংসী আকিদা বিশ্বাসের উপর আলোচনা করেন ঢাকা দারুন নাজাত কামিল মাদ্রাসার মুহাদ্দিস আল্লামা বদরুজ্জামান রিয়াদ।

ফিতনায়ে আহলে হাদিস ওয়াহাবী দেওবন্দীরই ফসল বিষয়ে আলোচনা করেন নাসিরাবাদ নুরীয়া বিষু দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন আল্লামা মঈনুদ্দিন নুরী আল কুরাইশী ছিদ্দিকী। প্রধান অতিথি মাওলানা এম.এ মতিন বলেন, ইসলামের নামে উগ্রপন্থী তৎপরতা দিন দিন বাড়ছে। যারা ইমামে আ’যম আবু হানিফাসহ চার মাযাহাব মানেন না ওরা অবশ্যই পথভ্রষ্ট। এদের ঈমান আক্বিদা পরিপন্থী তৎপরতার বিরুদ্ধে মুমিন মুসলমানদের সোচ্চার হতে হবে। ইমামে আ’যম কনফারেন্সকে ঈমান-আক্বিদা সংরক্ষণের একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা বলে তিনি মন্তব্য করেন।

আলোচক আল্লামা বদরুজ্জামান রিয়াদ বলেন, আহলে হাদিস নামে মাথাচাড়া দিয়ে উঠা ধর্মীয় উপদলটি বৃটিশদের ষড়যন্ত্রের ফসল। মুসলমানদের ঈমান-আক্বিদাচ্যুত করতে আন্তর্জাতিক ও দেশিয় ষড়যন্ত্রের অংশ এই আহলে হাদিসরা। সহীহ হাদিসের অনুসরণের নামে ওরা মুসলমানদের পথভ্রষ্ট করছে। তিনি জাকের নায়েক ও আসাদুল্লাহ আল গালিবের পথভ্রান্তিতার নানা দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন।

উপাধ্যক্ষ আল্লামা আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, ইমাম আ’যম আবু হানিফা (রহ.) এর প্রবর্তিত হানাফী মাযহাব বিশুদ্ধ ও সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মাযহাব। এই দেশের ৯০ ভাগ মানুষ হানাফি ও সুন্নী আকিদায় বিশ্বাসী। এদেশে বিকৃত মতাদর্শী ও আহলে হাদীসপন্থীদের সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে। আল্লামা মুফতি বখতিয়ার উদ্দিন বলেন, ইসলামের মূল আক্বিদা বিশ্বাস থেকে মুসলমানদের বিচ্ছিন্ন করতে লামাযহাবীরা নানা কূটচাল খেলছে।

এদের বিরুদ্ধে গণজাগরণ গড়ে তুলতে হবে। আল্লামা মঈন উদ্দিন নুরী বলেন, আহলে হাদিস ও দেওবন্দী ওরা একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। দেওবন্দীদেরই ফসল আহলে হাদীসরা। এদের চিহ্নিত করে এখনই তাদের প্রতিরোধ করতে হবে। পবিত্র কুরআন ও সহীহ হাদিসের আলোকে শবে বরাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেন আল্লামা আবুল হাসান মুহাম্মদ ওমাইর রজভী।

সংগঠনের সদস্য সচিব মাওলানা ইকবাল হোসেন আলকাদেরী ও মাওলানা এনাম রেজার যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, আল্লামা আবুল আসাদ মুহাম্মদ জোবাইর রজভী, অধ্যক্ষ আল্লামা বদিউল আলম রজভী, ড. আল্লামা লিয়াকত আলী, আল্লামা শহিদুল হক হোছাইনী, মাওলানা ইউনুছ আলকাদেরী, আল্লামা জালালুদ্দিন আল আজাহারী, সৈয়দ হোসেন, মাস্টার আবুল হোসেন, সাংবাদিক আ ব ম খুরশিদ আলম খান, যুবনেতা সৈয়দ মুহাম্মদ আবু আজম, শফিউল আলম শফি, মাওলানা সাইদুল হক কাজেমী, মাওলানা মুক্তার আহমদ রজভী, মাওলানা আসরারুল হক আলকাদেরী, জি.এম শাহাদাত হোছাইন মানিক, ছাত্রনেতা নুরুল্লাহ রায়হান খান, ফরিদুল ইসলাম, মাওলানা সোহাইল উদ্দিন আনসারী, মাওলানা আবুল কাশেম তাহেরী, মাওলানা ফুয়াদ রেজা ফারুকী, মাওলানা ইমরান হাসান কাদেরী, মাওলানা হাসান মুরাদ কাদেরী, মাওলানা ওয়াহিদুর রহমান আলকাদেরী, আবদুল কাদের রুবেল, মুহাম্মদ রিয়াজ হোসাইন, মারুফ রেজা, মুহাম্মদ মাছুমুর রশীদ কাদেরী, মিজানুর রহমান, মাওলানা খায়রুল আমিন চিশতি, মাওলানা সাইফুল ইসলাম বারী, মাওলানা আবদুল খালেক আলকাদেরী, রায়হানুল ইসলাম প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.