মিরসরাইয়ে ভারী বর্ষণে অর্ধশতাধিক গ্রাম পানির নিচে

0

এম আনোয়ার হোসেন, মিরসরাই : মিরসরাইয়ে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে অর্ধশতাধিক গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রায় ১০ ঘন্টার ভারী বর্ষণও পাহাড়ি ঢলে ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট রেললাইনের উপর দিয়ে মিরসরাই অংশের প্রায় ৬ কিলোমিটারজুড়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

এছাড়া উপজেলার গ্রামীণ সড়কব্যবস্থাও ভেঙ্গে পড়ে। উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, জোরারগঞ্জ, দুর্গাপুর, মিরসরাই সদর, খৈয়াছড়া, ওয়াহেদপুর ইউনিয়ন, মিরসরাইও বারইয়ারহাট পৌরসভা এলাকায় পাহাড়ি ঢলে গ্রামীণ সড়ক ও বসতবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার অর্ধ লক্ষাধিক লোক পানিবন্ধী হয়ে পড়ে। বসতঘরে পানি প্রবেশ করায় রান্নাবান্না বন্ধ হয়ে পড়ে, ভেসে গেছে পুকুরের মাছও ফসলী জমির আবাদকৃত শস্য। সকাল থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল পুরো উপজেলা।

এদিকে পাহাড়ি ঢল ভারি বর্ষণে উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, জোরারগঞ্জ, দুর্গাপুর, মিরসরাই সদর, খৈয়াছড়া, ওয়াহেদপুর ইউনিয়ন, মিরসরাইও বারইয়ারহাট পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে গ্রামীণ সড়ক ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পাহাড়ি ঢলও জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে মৎস্য প্রকল্পের মাছ, জমির ফসল। মিরসরাই পৌরবাজারের পূর্বাংশ পাহাড়ি ঢলের পানি ঢুকে পড়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়া আহম্মদ সুমন জানান, পাহাড়ি ঢলে উপজেলার বিভিন্ন স্থান প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি।
অন্যদিকে উপজেলার মস্তাননগর থেকে চিনকিআস্তানা পর্যন্ত রেললাইনের ওপর দিয়ে পাহাড়ি ঢল প্রবাহিত হওয়ায় চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকা ও সিলেটের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টা ২০ মিনিট থেকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে রাত ৮ টা পর্যন্ত অন্তত ১১ টি ট্রেন উভয় দিকে আটকা পড়ে। বিকেলে মস্তাননগর থেকে চিনকিআস্তানা পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার রেললাইনের ওপর পাহাড়ি ঢল প্রবাহ শুরু হয়। দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য বিকেল ৪ টা ২০ মিনিটে ওই রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামগামী ট্রেন সুবর্ণ, কর্ণফুলী ও সাগরিকা চিনকিআস্তানায়; পাহাড়িকাও চট্টলা ফেনীতে আটকা পড়ে। এছাড়া ঢাকাগামী গোধূলি মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়ায় আটকা পড়ে। রেলপথ বন্ধ থাকায় ঢাকাগামী সোনার বাংলা ও মহানগরের যাত্রা স্থগিত রাখা হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে সিলেটগামী জালালাবাদ, চাঁদপুরগামী মেঘনাও কুমিল্লাগামী ডেমুর যাত্রাও স্থগিত রাখা হয়েছে।

রাত ৮ টায় পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘পাহাড়ি ঢলের কারণে মিরসরাইয়ের চিনকিআস্তানা থেকে মস্তাননগর পর্যন্ত রেলপথ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। তবুও আমরা ডাউন লাইন (চট্টগ্রামে আসার রেলপথ) পথ দিয়ে ট্রেন চালানোর চেষ্টা করছি।’ তিনি আরও বলেন, ঢাকাগামী গোধূলিকে মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া থেকে সীতাকুন্ডে ফিরিয়ে নিয়ে ডাউন লাইন দিয়ে ঢাকা পাঠানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু ওই ট্রেনের যাত্রীরা সীতাকুন্ডে ট্রেন ফিরিয়ে নিতে বাধা দিচ্ছে। পানি নেমে গেলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.