চট্টগ্রামকে  জলাবদ্ধতা থেকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি ক্যাবের

0

নিজস্ব প্রতিবেদক::জলাবদ্ধতা থেকে বানিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামকে রক্ষা করার জন্য মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষনকারী প্রতিষ্ঠান কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ।

একই সাথে জরুরী ভাবে বিশেষ ব্যবস্থায় চাক্তাই, মির্জাখালসহ নগরীর নালা, মহেশখালে স্লুইসগেট নির্মান, নর্দমা ও খাল অবৈধ দখলমুক্ত করা ও সংস্কার করে দ্রুত পানি নিস্কাষনের ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন। সামান্য বৃষ্ঠিতে বারবার চট্টগ্রাম নগরী তলিয়ে যাবার কারনে সৃষ্ঠ জলাবদ্ধতায় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনায় এক বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ এ দাবি করেন।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন চাক্তাই খালের উপরে অংশে প্রশস্ততা ৩৫ফিট হলেও নীচের অংশে গিয়ে ১৫ফিটে দাঁড়িয়েছে, আবার চাক্তাই খাল খননের নামে নগরীতে হরি লুট হয়েছে, নগরবাসী এর কোন সুফল পায়নি। নগরীর পানি নিস্কাষনের ড্রেন, নালা, নর্দমা ও খাল গুলি ভরাট হয়ে গেছে, অনেকগুলি স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের দখলে গিয়ে দালান বিল্ডিং নির্মিত হয়ে নগরীর পানি নিষ্কাষনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্ঠি করছে, এ চক্রটি চাক্তাইখাল খননে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করছে, ফলে নগরীতে একটু বৃষ্ঠি হলেই নীচু এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে। সিটিকর্পোরেশন ও সিডিএ নগরীর খাল ও নালাগুলি সংস্কারের নামে বিপুল অংকের অর্থ খরচ করলেও অদ্যবদি দখলে যাওয়া খাল ও ভরাট হয়ে যাওয়া খাল-নালাগুলি দখলমুক্ত ও যথাযথ সংস্কার করেনি। সামান্য বৃষ্ঠিতে নগরীর বহদ্দারহাট, চান্দগাঁও, মুরাদপুর, খাতুনগঞ্জ, ২নং গেট, চকবাজার, সাবানঘাটা, বাকলিয়া, আগ্রাবাদ, বন্দর, নিউ মুরিং, মাইজপাড়া, পতেঙ্গাসহ অনেক নীচু এলাকা এখনও জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত। সিটিকর্পোরেশনের একশ্রেণীর কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রভাবশালী দখলদারদের যোগসাজসে অবৈধ দখলমুক্ত করার সরকারী উদ্যোগকে ব্যাহত হচ্ছে।

অথচ সরকার ১১ জুনের মতো ভবাবহ বিপর্যয় ও জলাবদদ্ধতা থেকে নগরবাসী রক্ষা করতে বিভাগীয় কমিশনারে নেতৃত্বে শক্তিশালী কমিটি গঠন করলেও এ কমিটির কার্যক্রম কাগজে কলমে ছাড়া প্রকৃত অর্থে চট্টগ্রামবাসীর কোন উপকারে আসছে না। উক্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী চাক্তাই খালের দু’ধারে ওর্য়াকওয়ে নির্মান ও অবৈদখলমুক্ত করার সিদ্ধান্ত রহস্যজনক কারনে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না এবং এপর্যন্ত একটি অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করা হয়নি, অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে সিডিএ, সিটিকর্পোরেশন বা পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে একটি মামলাও করা হয়নি। যা সত্যিই হতাশা জনক ও উদ্বেগের কারণ বলে বক্তারা মন্তব্য করেন। উক্ত কমিটির কার্যকারিতা নিয়ে জনমতে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। এছাড়াও মহেশখালে স্লুইসগেট নির্মান করে দ্রুত পানি নিস্কাষনে ব্যবস্থা গ্রহন এবং উপকূলীয় বাঁধগুলি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন বর্ষা মৌসুুমে নগরীর নিন্ম এলাকায় বসবাসকারী বাসিন্দা, বসবাসকারী ভাড়াটিয়া, অত্রাঞ্চলে স্থাপিত শিল্প, কলকারখানা, খুচরা ব্যবসায়ীদের ভিতরে চরম আতংক বিরাজ করছে। অনেকে অন্যত্র সরিয়ে নেবার চেষ্ঠা করলেও তা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে জলাবদ্ধতা আতংকে নগরীর ব্যবসা বানিজ্য, শিল্প, কলকারখানায় চরম নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, জনগনকে মারাত্মক বিডম্বনার শিকার হতে হচ্ছে বলে মতপ্রকাশ করা হয়। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে নগরীর চাক্তাই খাল, রাজাখালী খালের মুখ, মির্জাখালসহ বিভিন্ন সংযোগ খাল ও নালার মোহনা সংস্কার, খালের ধারে ও নর্দমার উপর স্থাপিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, ১১ জুনের পর গঠিত কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চাক্তাই খালের দু’ধারে ওয়ার্কওয়ে তৈরীর সিদ্ধান্ত কার্যকর, নগরীর বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় পরিকল্পিত ভাবে বজ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা, বজ্য ব্যবস্থাপনায় জনগনের মাঝে সচেতনতা সৃষ্ঠি করা, পাহাড় কাটা বন্ধ, নগরীর পুকুর গুলি ভরাট বন্ধ, পাহাড়ী এলাকা থেকে বালি, আবর্জনাগুলির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য সিটি কর্পোরেশনের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহন ও নগরীর উপকন্ঠে বজ্যব্যবস্থাপনা প্লান্ট স্থাপনের মাধ্যমে কম্পোষ্ঠ সার তৈরীর উদ্যোগ, পানি ও বজ্য নিস্কাষনে সিটিকর্পোরেশনের আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন, নগরীতে বজ্য ব্যবস্থাপনায় জনঅংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য কার্যকর উদ্যোগ এবং নগরীর নিন্মাঞ্চলের বাঁধ ও রাস্তাগুিল জরুরি ভাবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহনের দাবি জানান।

বিবৃতিতে যারা স্বাক্ষর করেছেন তারা হলেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, মহানগর সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সহ-সভাপতি হাজী ইকবাল আলী আকবর ও সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক এএম তৌহিদুল ইসলাম, দক্ষিন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.