সাইফুল উদ্দীন, রাঙামাটি প্রতিনিধি::রাঙামাটির লংগদুতে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে লংগদু উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গঠিত তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার উপজেলা সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গঠিত তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে গণশুনানিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন স্তরের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। অগ্নিদুর্গতের পক্ষে লিখিত আকারে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।
তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে গণশুনানির প্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্তি বিভাগীয় কমিশনার সুব্রত সাহা। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক দীপক চক্রবর্তী, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মনজুরুল আলম, কমান্ডেন্ট এস পি এম এ মাসুদ, অতিরক্তি জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু সাহেদ চৌধুরী, রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য মো. জানে আলম, লংগদু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাদ্দেক মেহ্দী ইমাম।
সুব্রত সাহা এসময় সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে কথা বলেছি। তাদের দাবি দাওয়া শুনেছি। প্রাথমিকভাবে যেটা বুঝতে পারলাম তা হলো এখানে আগে যে সম্প্রীতি ছিল তা নষ্ট করা হয়েছে। এখন উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে এই সম্প্রীতি কিভাবে ফিরিয়ে আনা যায় সেই চিন্তা করতে হবে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১ জুন) লংগদু উপজেলার সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মোটরসাইলেক চালক নুরুল ইসলাম নয়নের লাশ দীঘিনালার চারমাইল এলাকায় পাওয়া যায়। ২ জুন সকালে প্রতিবাদ মিছিল থেকে স্থানীয় পাহাড়ীদের দোকান, বসত ঘরসহ চারটি গ্রামের দু’শতাধিক বাড়ীঘরে আগুন দেয়া হয় । স্থানীয় বাঙালিরা এই ঘটনার জন্য পাহাড়ের আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে দায়ী করে। এই ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার (২জুন) সকালে লংগদুবাসীর ব্যানারে নয়নের লাশ নিয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা সদরে আসার পথে পাহাড়িদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। এসময় শতাধিক বাড়ি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
এদিকে, শুক্রবার (৯ জুন) খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হলে তারা নয়ন হত্যাকান্ডে বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেয় বলে জানায় পুলিশ। নয়নের মোটর সাইকেলটিও দীঘিনালার মাইনী নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার দুই ব্যক্তি রমেল চাকমা ও জুনেল চাকমা পুলিশকে জানিয়েছে, মোটরসাইকেল ছিনতাই করার জন্যই তারা নয়নকে হত্যা করে। তবে নয়ন হত্যাকান্ডে পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে মোটরসাইকেলটি কোথাও নিয়ে যেতে পারেনি হত্যাকারীরা। সেটি বিক্রি করতে না পেরে তা মাইনী নদীতে ফেলে দেয় তারা।