বন্যা দূর্গত এলাকায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট

0

চকরিয়া প্রতিনিধি::চকরিয়ায় কয়েকটি ইউনিয়ন থেকে বানের পানি নামতে শুরু করলেও এখনো বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন পানিতে ডুবে রয়েছে। এতে কম করে হলেও দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। গ্রামীন রাস্তাঘাট, সড়ক পানির নীচে থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বন্যাদুর্গত এলাকায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। পানিতে ডুবে থাকায় গত চারদিন ধরে চুলোয় আগুনও জ্বলেনি বন্যাদুর্গত এলাকায়। এতে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন যাপন করছে মানুষ। এদিকে বানবাসি তিন লাখ মানুষের জন্য মাত্র এক লক্ষ টাকা সরকারিভাবে বরাদ্দ দেয়া হলে ও তা প্রয়োজনের অপ্রতুল। এখনো পর্যন্ত নতুন কোন বরাদ্ধের খবর পাওয়া যায়নি।

অবশ্য উপজেলা প্রশাসন থেকে বন্যার্তদের মাঝে দেয়ার জন্য ১০০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ চেয়ে সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। চকরিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জোবায়ের হাসান জানান, চকরিয়া উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বন্যাদুর্গত তিনলাখ মানুষের মাঝে ত্রাণ হিসেবে বিতরণের জন্য ১০০ মেট্টিক টন চাল ও নগদ ৫ ল টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এই বরাদ্দ আসলেই দ্রশুত বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ শুরশু করা হবে।

চকরিয়ার জিদ্দাবাজার এলাকায় সড়কের ধারে ঝুঁপড়ি ঘর বেঁধে চারদিন ধরে অবস্থান করছেন মরিয়ম বেগম। তিনি বলেন, ‘মাতামুহুরী নদীতে ঢলের পানি বাড়ির ভেতর থেকে নেমে গেলেও উঠানে রয়ে গেছে। তাই আরো কয়েকদিন সড়কের ধারে রাত কাটাতে হবে সন্তান-সন্তুতিদের নিয়ে।’

বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিরা জানান, চারদিন ধরে বন্যাদুর্গতরা অনাহারে-অর্ধাহারে থাকলেও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো বড় ধরণের ত্রাণ তৎপরতা দেখা যাচ্ছেনা। এতে বন্যার্তরা অনেকটা মানবেতর জীবন যাপন করছে । এরপরেও কয়েকজন জনপ্রতিনিধি এবং সমাজের বিত্তবানেরা ব্যক্তিগতভাবে বন্যাদুর্গতদের মাঝে শুকনো খাবার এবং রান্না করা খিঁচুড়ি বিতরন করেছেন।

চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী জানান, দিগরপানখালীস্থ মাতামুহুরী নদীতীরের এক নম্বর গাইড বাঁধটির বিশাল এলাকা ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে নদীগর্ভে। এতে চরম ঝুঁকির মুখে পড়েছে ওই এলাকার বহু বসতবাড়ি ও স্থাপনা। যে কোন মুহূর্তে এই বাঁধের অবশিষ্টাংশ তলিয়ে গেলে নতুন করে ওই পয়েন্ট দিয়ে মাতামুহুরী মোড় নিতে পারে। এতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কও রক্ষা করা যাবে না।

মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা জানান, বুধবার দিবাগত রাত থেকে ব্যাপকভাবে উপকূলীয় ছয় ইউনিয়ন পশ্চিম বড় ভেওলা, ঢেমুশিয়া, কোনাখালী, বদরখালী, পূর্ব বড় ভেওলা ও ভেওলা মানিকচরের অন্তত শতাধিক গ্রাম বানের পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যা দূর্গত এলাকায় টিউবউয়েল গুলো পানির নীচে থাকায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘উপরিভাগ থেকে বানের পানি নেমে যেতে শুরশু করলেও দুর্ভোগ বেড়েছে মানুষের। এছাড়া উপকূলীয় এলাকায় নতুন করে বানের পানি প্রবেশ করায় নতুন নতুন এলাকা পহ্মাবিত হয়েছে। এতে দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে চাহিদার বিপরীতে দ্রশুত বরাদ্দ পেতে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’

চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম বলেন, ‘পানি নামলেও দুর্ভোগ আরো চরমে পৌঁছেছে বন্যাদুর্গত এলাকায়। বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবার, স্যালাইন, বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করা হচ্ছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.