চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে নির্মাণ কাজ ব্যাহত

0

সুজিত দত্ত, পটিয়া, প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া বাইপাস সড়ক নির্মাণ কাজ গত এক মাসের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের কারণে ব্যাহত হচ্ছে। চলতি মাসের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে এ নির্মাণ কাজ বাধাপ্রাপ্ত হয়। সেই থেকে প্রতিদিন গড়ে শ্রমিক মজুরী, নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত যানবাহন, যন্ত্রপাতিসহ গড়ে সাত লাখ টাকার ক্ষতি গুনতে হচ্ছে মূল নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রিয়্যালেবল বিল্ডার্সকে। এর আগে মে মাসের শুরুতে একটানা ভারী বর্ষণের কবলে পড়ে পটিয়া বাইপাস নির্মাণ প্রকল্প বাধাগ্রস্থ হয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রিয়্যালেবল বিল্ডার্সের পিডি আবুল কালাম মজুমদার বলেন, গত মে মাসে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে প্রথম দফায় নির্মাণ কাজে বড় ধরণের বিপর্যয় ঘটে। ফলে এতে টাকার অঙ্কে ক্ষতি প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া এবারের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গত ১২ জুন থেকে বাইপাস নির্মাণকাজ এক প্রকার বন্ধ হয়ে গেছে। এতে প্রতিদিন প্রতিষ্ঠানকে গড়ে সাত লাখ টাকা থেকে আট লাখ টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে।

জানা গেছে, এডিবির অর্থায়নে ২০০৮ সালে বাংলাদেশে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর পটিয়া মনসার টেক থেকে দোহাজারী শংখ ব্রীজ পর্যন্ত ৯৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৬ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়। ঐ বছর ২৫ জুন ইসলাম ট্রেডিং কনসেটিয়াম লিমিটেড (আইটিসিএল) নামক একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয় তারা। ঐ প্রকল্পের মধ্যেই পটিয়া শহর এলাকাকে যানজটমুক্ত করণের লক্ষ্যে পটিয়া ইন্দ্রপোল থেকে গিরিশ চৌধুরী বাজার পর্যন্ত ৫.০২ কিলোমিটার পটিয়া বাইপাস সড়ক নির্মাণ কাজ প্রকল্পটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

সে সময়ে বাইপাস প্রকল্পের জন্য ২৫ কোটি ৭৮ লাখ চার হাজার টাকা ব্যয়ে ৩৮.৬১৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। বাইপাস ছাড়া দোহাজারী ব্রীজ পর্যন্ত প্রশস্তকরণ ও ৪৯টি বিপদজনক বাঁক সোজাকরণের লক্ষ্যে ভূমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন বাবদ আরো ১৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়েছিল। পরে নিয়োজিত ঠিকাদার বিভিন্ন জটিলতায় ৪ বছরেও কাজ শেষ করতে পারেনি। এ কারণে ঐ প্রকল্পটি বাতিল হয় আর এর সাথে পটিয়া বাইপাস নির্মাণ প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।

পরে আবারো দরপত্র আহবান করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। সে মোতাবেক গত বছরের ২৫ মে দরপত্র জমা প্রদান এবং ঐ বছরের ১ জুন দাখিলকৃত দরপত্র খোলা হয়েছিল এবং সর্বশেষ দরপত্র মূল্যায়ন পূর্বক প্রাপ্ত ঠিকাদরকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।

পরিশেষে গত বছরের ৮ নভেম্বর ৬২ কোটি ৮২ লাখ টাকায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রেব আরসিকে কার্যাদেশ দেয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কার্যাদেশ প্রদানের দেড় বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই ঠিকাদার চলতি বছর বর্ষাও আগেই মাটি ভরাটের কাজটি শেষ করে প্রায় চার কিলোমিটার সড়কে সাব বেইসের কাজ শেষ করে আনলেও একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগে পুরো প্রকল্পের কাজই বিপর্যয়ের মুখে পড়ে।

সড়ক ও জনপথ পটিয়ার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পটিয়া বাইপাসের কাজ খুব দ্রুত এগিয়ে চলছিল। এখন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কাজে চলছে ধীরগতি।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের দোহাজারী সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল মিয়া বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের উপর তো কারো হাত নেই। তাবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বহুল আলোচিত পটিয়া বাইপাস নির্মাণ প্রকল্পের সমাপ্ত করার জন্য আমরা নিয়মিত তদারকি করে যাচ্ছি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.