টেকনাফ সীমান্তে বেপরোয়া ইয়াবা সিন্ডিকেট

0

শহিদুল ইসলাম, উখিয়া (কক্সবাজার)::কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ উপজেলায় সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিনিয়ত দেশে প্রবেশ করছে মরননেশা ইয়াবা। বাংলাদেশে প্রবেশ করা এসব ইয়াবা আবার স্থানীয় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক,উখিয়া করইবনিয়া ডেইলপাড়া সড়ক,ডিগিলিয়া গয়ালমারা সড়ক,কোটবাজার-ভালুকিয়া সড়ক, থাইনখালী-রহমতের বিল সড়ক, মেরিনড্রাইভ সড়ক ও সাগর পথ দিয়ে পাচার হয়ে যাচ্ছে দেশের আনাচে-কানাচে। এ ইয়াবা পাচার বন্ধ করতে জেলার আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

সর্বশেষ শনিবার ভোররাতে উখিয়া উপজেলার বালুখালী কাষ্টমস্থ শাহপরীদ্বীপ হাইওয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ট্রাক সহ ২ লাখ ৫৫ হাজার পিস ইয়াবা নিয়ে দুই পাচারকারীকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। আটককৃতরা হচ্ছে, যশোরর জেলার সারসা থানা গোয়া বাগান পাড়া গ্রাামের ট্রাক ড্রাইভার আব্দুর রশিদের ছেলে মিন্টু আলী (২৭) ও হেলপার একই জেলার কালী আলী গ্রামের মৃত মশিউর রহমানের ছেলে দেলোয়ার হোসেন (২৩)।

হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, টেকনাফ থেকে ঢাকা গামী ঢাকা মেট্রো ট-২০-৫১১১ নাম্বারের একটি ট্রাক শনিবার ভোর রাতে উখিয়ার ঘাট বালুখালী কাষ্টম হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে পৌছলে পুলিশ ব্যারিকেট দিয়ে গাড়িটি গতিরোধ করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ গাড়ীতে তল্লাসি চালিয়ে গাড়ীর ছাউনির নিচের বক্স ভিতরে অভিনব কায়দায় লুকিয়ে রাখা প্লাষ্টিক মোড়ানো ২৭৫ টি ইয়াবার প্যাকেট উদ্ধার করা হয়। উক্ত প্যাকেটে ২ লাখ ৫৫ হাজার পিস ইয়াবা ছিল। স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, উদ্ধারকৃত ইয়াবাগুলো টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের খারাংখালী এলাকার মৃত ইলিয়াছের পুত্র মহিউদ্দিন ও একই উপজেলার লেদার জালাল আহমদের ছেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভূক্ত ইয়াবা গডফাদার হেলাল উদ্দিন সিন্ডিকেটের। চিহ্নিত এ সিন্ডিকেটের ইয়াবা ট্রাক যোগে ঢাকা যাচ্ছিল বলে আটককৃতরা জানিয়েছেন। মহিউদ্দিন, হেলাল উদ্দিন সিন্ডিকেট ছাড়াও নুরুল হুদা ও মোস্তাক সিন্ডিকেট তৎপর রয়েছে এলাকায়। এদের সাথে যুক্ত হয়ে উখিয়ার বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট। যাদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছে বালুখালীর এনামুল হক ও জয়নালের নেতৃত্ব বালুখালী সিন্ডিকেট, সাহাব উদ্দিনের নেতৃত্বে ঘুমধুম সিন্ডিকেট, ইমাম হোসেনের নেতৃত্বে জলপাইতলী সিন্ডিকেট, মাহমুদুল হকের নেতৃত্বে হাজীর পাড়া সিন্ডিকেট, নুরুল আলম পুতিয়া, আবদুর রহমান ও আবদুর রহিমের নেতৃত্বে বালুখালী ঘোনারপাড়া সিন্ডিকেট, উত্তম ও ইসলামের নেতৃত্বে ঘিলাতলী সিন্ডিকেট, আতা উল্লা ও জালালের নেতৃত্বে সদর সিন্ডিকেট, দেলোয়ারের নেতৃত্বে হিজলিয়া সিন্ডিকেট, আলী আহামদ, জাহাঙ্গীর আলম ও নুরুল আলমের নেতৃত্বে ভালুকিয়া সিন্ডিকেট, আকতারের নেতৃত্বে সিকদার বিল সিন্ডিকেট, আবদুল্লা, হারুন, রহমান ও লালুর নেতৃত্বে ডিগিলিয়া সিন্ডিকেট অন্যতম। এর বাইরেও সোনারপাড়া, থাইংখালী, জাদিমুরা, হলদিয়া পাতাবাড়ি, কুতুপালং সহ বিভিন্ন সিন্ডিকেট রয়েছে।

এছাড়া স্থানীয় উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের তিনজন ইউপি সদস্য রয়েছেন ইয়াবা ব্যবসায়ীদের তালিকায়। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে উখিয়া টেকনাফের সহকারী পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হাইওয়ে পুলিশ উখিয়ার ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ইয়াবা চালানটি উদ্ধার করেছে। তাই বলা যায়, পুলিশ সমসময় তৎপর রয়েছে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারে। কিন্ত সুনিদ্ধিষ্ট তথ্য ছাড়া ইয়াবা আটক করা কঠিন। এতে নিরপরাধ জনগনের হনরানির আশংকা। তবুও পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.