জামাল জাহেদ, কক্সবাজার : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় কোমেনের অগ্রভাগ কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও টেকনাফের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হেনেছে। ঘূর্ণিঝড়ে গাছের নিচে চাপা পড়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে চার শতাধিক ঘরবাড়ি। উপড়ে গেছে অসংখ্য গাছপালা। নিম্নাঞ্চলের ২৮টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হেনে ক্রমশ দুর্বল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলে জানান কক্সবাজার আবহাওয়া কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক।
নাজমুল হক জানান, ঘূর্ণিঝড় কোমেন বৃহস্পতিবার সকালে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও টেকনাফ উপকূলে আঘাত হেনেছে। ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানার সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ৫১ থেকে ৬১ কিলোমিটার।
তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানার পর ক্রমশ দুর্বল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ফলে ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার উপকূলের পাশ দিয়ে চট্টগ্রাম উপকূলে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকেল নাগাদ আঘাত হানতে পারে। সকাল সাড়ে ১০টায় ঘূর্ণিঝড়টি বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার উপকূল থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ে টেকনাফ সদর, সেন্টমার্টিন, সাবরাং ও বাহারছড়া ইউনিয়নের শতাধিক ঘরবাড়ি ও অসংখ্য গাছপালা বিধ্বস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে সেন্টমার্টিন দ্বীপে নারকেল গাছ চাপা পড়ে মোহাম্মদ ইসলাম (৫০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ড. অনুপম সাহা জানান, কক্সবাজারের ৭১টি ইউনিয়নের মধ্যে উপকূলীয় এলাকার ২৮ ইউনিয়নের মানুষকে ৭৬টি আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরে আসতে মাইকিং করা হচ্ছে। আশ্রয় নেয়া লোকজনের চিকিৎসা সেবার জন্য মেডিকেল টিম ও তদারকির জন্য আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে দুর্যোগকালীন আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় কোমেনের প্রভাবে কক্সবাজারের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আটটি উপজেলার ২৮টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে এ প্লাবন শুরু হয়েছে। যার উচ্চতা ছিল ৪-৫ ফুট।