সিটিনিউজ ডেস্ক::বরগুনার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারিক সালমানের বিরুদ্ধে মামলাকারী বরিশাল আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ ওবায়েদ উল্লাহ সাজুকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি। এই মামলা নিয়ে সমালোচনার মুখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই কথা জানান। তিনি জানান, সাজুকে কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না, সে বিষয়ে কারণ দর্শাতে তাকে চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্তও হয়েছে।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভা শেষে দলের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিকদেরকে এই কথা নিশ্চিত করেছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইউএনও নির্দোষ। তিনি বরং ভালো ছবিটি ব্যবহার করেছেন। ওই নেতা অতি উৎসাহী হয়ে মামলা করেছেন। এতে দলের শৃ্ঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। আওয়ামী লীগ ইউএনও’র পক্ষে।’
কাদের জানান, দলের গঠনতন্ত্রের ৪৭ ক অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তাকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না এ ব্যাপারে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হবে।
বরগুনায় বদলি হওয়ার আগে ইউএনও সালমান দায়িত্ব পালন করেছেন বরিশালের আগৈরঝাড়ায়। আর সেখানের একটি ঘটনাতেই মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। গত বুধবার সকালে এই মামলাতেই শুরুতে তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠান বিচারক। পরে অবশ্য আদেশ পাল্টে জামিন দেয়া হয়।
গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শিরোনামে সেখানে এক চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় আগৈলঝাড়ার এস এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।
এই প্রতিযোগিতার প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী দুটি ছবির জন্য তাদেরকে পুরস্কৃত করা হয়। আর ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনে উপজেলা প্রশাসনের আমন্ত্রণপত্রে ছবি দুটি ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে প্রথম স্থান পাওয়া জ্যোতি মণ্ডলের ছবিটি আমন্ত্রণপত্রের কভারে এবং অদ্রিজা করের দ্বিতীয় ছবিটি ব্যবহার করা হয় আমন্ত্রণপত্রের পেছনের পাতায়।
পেছনের পাতায় ছাপা হওয়া ছবিটির জন্যই ইউএনও গাজী তারিক সালমানের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতের অভিযোগে মামলা করেন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু।
এই ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যেও অসন্তোষ দানা বাঁধে। খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এই মামলায় বিস্ময় এবং অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন তার উপদেষ্টা এইচটি ইমাম।
এই পরিস্থিতিতে মামলা প্রত্যাহারের চিন্তা শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে সাজু বরিশাল আইনজীবী সমিতির নেতাদের সঙ্গে আলোচনাও শুরু করেন। তবে তার সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা আসার আগেই কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ তাকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়।