রাউজানের সাত ইউনিয়নে পানিবন্দি মানুষ চরম দুর্ভোগে

0

এম. রমজান আলী, রাউজান,সিটিনিউজ : প্রবল বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল ও কাপ্তাই বাঁধ ছেড়ে দেওয়ার কারণে চট্টগ্রামের রাউজানের পাশ ঘেঁষে বয়ে যাওয়া কর্ণফুলী ও হালদা নদীর পানি বেড়ে গিয়ে বিপত সীমা অতিক্রম করে দেড় মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ছয়ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে দুই নদীর পানি। এতে বন্যা দেখা দিয়েছে নদী তীরবর্তী সাতটি ইউনিয়নে। জানা গেছে উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের অর্ধলক্ষ বাসিন্দা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে কর্ণফৃুলী ও হালদা পাড়ের নোয়াপাড়া ইউনিয়ন, উরকিরচর ইউনিয়ন, পশ্চিম গুজরা ও বাগোয়ান, ডাবুয়া, চিকদাইর, হলদিয়া ইউনিয়নের সড়কগুলোর। এই চার ইউনিয়নের সড়ক গুলোতে গলা সমান পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। এসব ইউনিয়নের অর্ধশত গ্রামিণ সড়কে গাড়ী চলাচল বন্ধ রয়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে হাজারো বাড়ী ঘরে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে অর্ধলক্ষ বাসিন্দা। অনেকে বাড়ী ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে।

রবিবার(২৩ জুলাই) দুপুরে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে নোয়াপাড়া ইউনিয়নের মোকামী পাড়া, পশ্চিম মোকামী পাড়া, ঝিকুটি পাড়া, উভলং, কচুখাইন, দক্ষিণ নোয়াপাড়া, চৌধুরীঘাটকুল, পলোয়ান পাড়া, মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়, মোকামী পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাগোয়ান ইউনিয়নের লাম্বুরহাট, কোয়ে পাড়ার অন্তত এক হাজার ঘরে কর্ণর্ফূলী ও হালদার পানি ডুকে পড়েছে। এসব পরিবারে বন্ধ হয়ে গেছে রান্না বান্নার কাজ। ঘরে পানি হয়েছে খাটের কিনারা পরিমান। একইভাবে উরকিরচর ইউনিয়নের সওদাগর পাড়া, পুর্ব উরকিরচর গ্রামেও শতাধিক ঘরে পানি ঢুকে পড়ে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

বন্যা কবলিত উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা বলেছেন নদীর তীরবর্তী বাধ ভেঙ্গে পানির চাপে অসংখ্য রাস্তাঘাট ভেঙ্গে ঘর বাড়ীতে পানি ঢুকে কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

বন্যা কবলিত নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল জব্বার বলেন, বিগত ৩০ বছরে এরকম পানি দেখা যায়নি এ এলাকায়। বাড়ী ঘর ডুবে গিয়ে বন্দি জীবন পার করছি।
নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া মেম্বার বলেন, আমার ইউনিয়নের অর্ধেকাংশের রাস্তাঘাট, ঘর বাড়ী ঢলের পানিতে ডুবে গেছে। ঘর বাড়ী রাস্তা ঘাটের পাশাপাশি স্কুল কলেজেও পানি ঢুকে অনেক শিক্ষার্থীরা আটকা পড়েছিল। এ ইউনিয়নের দুই শতাধিক ঘরে পানি ঢুকে তাদের সব কিছু তছনছ করে দিছে।
হালদা পাড়ের ইউনিয়ন উরকিরচরের চেয়ারম্যান ছৈয়দ আবদুল জব্বার সোহেল বলেন, হালদার পানি ছয় ফুট বেড়ে দক্ষিণের ইউনিয়নসমূহে প্লাবন সৃষ্টি করেছে। তার সাথে যোগ হচ্ছে পাহাড়ী ঢল ও বৃষ্টির পানি। বিভিন্ন সড়কের ওপর দিয়ে এই পানি গড়িয়ে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা তছনছ করে দিচ্ছে। আমার ইউনিয়নের মীরা পাড়া, মইশকরম, উরকিরচর, সওদাগর পাড়ার শতাধিক ঘরে পানি ঢুকে পড়ে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম মদুনাঘাট অঞ্চলের উপ সহকারী প্রকৌশলী শাহিন বাদশা বলেন, হালদা ও কর্ণফুলীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করে দেড় মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে দুই নদীর তীরবর্তী হাজারো বাড়ী ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। তবে রাতে বৃষ্টি না হলে পানি কমে আসবে।
রাউজান উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম হোসেন বলেন, উপজেলার হালদা ও কর্ণফুলী তীরবর্তী নোয়াপাড়া, উরকিরচর, বাগোয়ান ও পশ্চিম গুজরা, ডাবুয়া, চিকদাইর, হলদিয়া ইউনিয়নের রাস্তাঘাট ও হাজারো ঘর বাড়ী পানিতে ডুবে আছে। বৃষ্টি যদি রাতে কমে যায় তাহলে পানি নেমে যাবে। উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে সর্তক অবস্থানে আছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.