জলমগ্ন চট্টগ্রামকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চায় ক্যাব

0

নিজস্ব প্রতিবেদক::বারবার অতি সামান্য বৃষ্ঠিতে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী, বানিজ্যিক রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রাম পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে, ব্যবসা বানিজ্য, অফিস আদালত, বাসা বাড়ী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিল্প কলকারখানা, নগরীর প্রধান সড়কগুলি তলিয়ে যাচ্ছে। সেখানে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী, এমপি, মেয়র, জনপ্রতিনিধিরা নিজেরা একে অপরের উপর দায়িত্ব চাপাতে ব্যস্ত।

আর এ জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম নগরের উন্নয়নে নিয়োজিত সরকারী সংস্থা বিশেষ করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম ওয়াসা, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বন্দর কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন নতুন নতুন প্রকল্পের আশ্বাস ছাড়া তাৎক্ষনিক প্রতিকারের কোন উদ্যোগ নগরবাসী দেখছে না।

অন্যদিকে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও ক্ষমতায় গেলে জলাবদ্ধতামুক্ত নগরী গড়ার আশ্বাসসহ নানা আশার বানী শুনালেও জলমগ্ন নগরবাসীকে জলাবদ্ধতার এ করালগ্রাস থেকে বাঁচাতে দ্রুত ব্যবস্থ গ্রহন, বিশেষ করে জলমগ্ন এলাকার পানি দ্রুত অপসারণ, পানি নিস্কাষনে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করা, বৃষ্টি চলাকালীন সময়ে নালা, নর্দমা ও খালগুলিতে পানি ও বজ্য অপসারণে প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ, জরুরী ভাবে বিশেষ ব্যবস্থায় চাক্তাই, মির্জাখালসহ নগরীর খাল ও নালাগুলি সংস্কার, মহেশখালে  নির্মান, নর্দমা ও খাল অবৈধ দখলমুক্ত ও সংস্কার করে দ্রুত পানি নিস্কাষনের মাধ্যমে জলমগ্ন নগরবাসীকে উদ্ধারের জন্য মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষনকারী প্রতিষ্ঠান কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ। বারবার সামান্য বৃষ্ঠিতে চট্টগ্রাম নগরী তলিয়ে যাবার কারনে সৃষ্ঠ জলাবদ্ধতায় মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনায় এক বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ এ দাবি জানান।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন সরকারের সংস্লিষ্ঠ দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী, এমপি ও জনপ্রতিনিধিরা জলমগ্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পরিবর্তে নিজেরা জলাবদ্ধতা তাদের আওতা বর্হিভুত দাবি করে নিজেরা দায় এড়ানোর চেষ্ঠা ও জলমগ্ন মানুষগুলিকে উদ্ধার করে দ্রুত চট্টগ্রাম নগরীকে জলাবদ্ধতা থেকে বাঁচানো তাৎক্ষনিক উদ্যোগ না নিয়ে এবং পানিতে তলিয়ে যাওয়া রোধে করনীয় নিয়ে সীমাহীন দায়িত্বহীনতার পরিচয় প্রদানের কারনে চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা, পাহাড় ধ্বস এর মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারনে শিল্প, ব্যবসা বানিজ্য, অফিস আদালতের কর্মঘন্টা, শিক্ষা ও জীবনজীবিকায় কোটি কোটি টাকার ক্ষয় ক্ষতি হচ্ছে যা জাতীয় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্ঠি করছে। জলাবদ্ধতার কারনে রাস্তাঘাট যেভাবে চলাপচলের অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে সেভাবেই এর ক্ষয়ক্ষতির পরিমানও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ধীরে ধীরে চট্টগ্রাম নগরী ব্যবসা, বানিজ্য ও বসবাসের যোগ্যতা হারাচ্ছে। অন্যদিকে নতুন নতুন প্রকল্পের আশ্বাস ছাড়া নগরবাসীর নরক যন্ত্রনা লাগবে তাৎক্ষনিক প্রতিকারে কোন কার্যকর উদ্যোগ নেয়া না হলে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড সম্পর্কে জনগনের মনে নেতিবাচক ধারনা তৈরী হবে। যা সরকারের যাবতীয় উন্নয়ন কর্মকান্ডকে ম্লান করবে।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ক্যাবসহ বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন নালা নর্দমা ও খালগুলি দ্রুত সংস্কার করে জলাবদ্ধতা নিরসণের দাবি জানালেও প্রশাসন সেখানে কর্নপাত না করার কারনে বর্তমানে চাক্তাই খালের উপরের অংশে প্রশস্ততা ৩৫ফিট হলেও নীচের অংশে গিয়ে ১৫ফিটে দাঁড়িয়েছে, ফলে বৃষ্ঠি হলেই পানি নিষ্কাষনের পরিবর্তে নগরী জলমগ্ন হয়ে উঠে। নগরীর পানি নিস্কাষনের ড্রেন, নালা, নর্দমা ও খাল গুলি ভরাট হয়ে গেছে, অনেকগুলি স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের দখলে গিয়ে দালান বিল্ডিং নির্মিত হয়ে নগরীর পানি নিষ্কাষনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্ঠি করছে, এ চক্রটি চাক্তাইখাল খননে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করছে, ফলে নগরীতে একটু বৃষ্ঠি হলেই নীচু এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে।

সিটিকর্পোরেশন ও সিডিএ নগরীর খাল ও নালাগুলি সংস্কারের নামে বিপুল অংকের অর্থ খরচ দাবি করলেও অদ্যবদি দখলে যাওয়া খাল ও ভরাট হয়ে যাওয়া খাল-নালাগুলি দখলমুক্ত ও যথাযথ সংস্কার করেনি। সামান্য বৃষ্ঠি ও জোয়ারের পানিতে নগরীর বহদ্দারহাট, চান্দগাঁও, মুরাদপুর, খাতুনগঞ্জ, ২নং গেট, চকবাজার, সাবানঘাটা, মোহরা, বাকলিয়া, আগ্রাবাদ, বন্দর, হালিশহর, নিউ মুরিং, মাইজপাড়া, পতেঙ্গাসহ অনেক এলাকা জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত হয়ে যাচ্ছে। চাক্তাই খালের দু’ধারে ওর্য়াকওয়ে নির্মান ও অবৈদখলমুক্ত করার সিদ্ধান্ত রহস্যজনক কারনে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না এবং এপর্যন্ত একটি অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করা হয়নি, অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে সিডিএ, সিটিকর্পোরেশন বা পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে একটি মামলাও করা হয়নি।

বিবৃতিতে যারা স্বাক্ষর করেছেন তারা হলেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, মহানগর সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সহ-সভাপতি হাজী ইকবাল আলী আকবর ও সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক এএম তৌহিদুল ইসলাম, দক্ষিন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.