কক্সবাজারে জেলা প্রশাসনের উদ্যেগে বন্যাকবলিত এলাকায় সব ধরণের সাহায্য অব্যাহত

0

কক্সবাজার  প্রতিনিধি  :     কক্সবাজার জেলার বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরণের সাহায্য অব্যাহত রাখা হবে  জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন। ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে তাকে জানানো হয়েছে, চাহিদা অনুযায়ী ত্রাণ বরাদ্দ দেয়া হবে। ১ আগস্ট সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতি বিষয়ে জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে একথা বলেন তিনি। সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ব্রিফিংকালে অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শেখ ফরিদ আহমদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) হাবিবুর রহমান হাকিম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুস সোবহান, জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’ বন্যা এবং পাহাড় ধসের কথা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’র সময় ঢাকায় অবস্থান করলেও কক্সবাজারের সাথে তার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল। তিনি ঢাকায় মন্ত্রী, সরকারি পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
এছাড়া সম্ভাব্য দুর্যোগ পরবর্তী ত্রাণ কার্যক্রম ও উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিতে যোগাযোগ করেছেন সেনাবাহিনী, বিজিবি ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে। একইভাবে পাহাড় ধসের আশংকায় দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের সরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন বলেও জানান তিনি। এ সময় বাঁকখালী এবং মাতামুহুরী নদী ড্রেজিং করা না হলে জেলার বন্যা সমস্যার সমাধান হবে না বলেও প্রকাশ করেন তিনি। বন্যাকবলিত মানুষের তুলনায় পর্যাপ্ত ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, ত্রাণ অপর্যাপ্ত হলেও তারা স্বচ্ছতার সাথে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। জেলার সচেতন মানুষকে সঙ্গে নিয়ে প্রকাশ্যে বিতরণ করা হচ্ছে ত্রাণ। সাম্প্রতিক ২ দফা বন্যাকবলিত এলাকার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনকে ৫শ টন চাল এবং ২০ লাখ নগদ টাকা দেয়া হয়েছিল। ওই ত্রাণ থেকে ইতোমধ্যে ৩১৪ টন চাল এবং ৮ লাখ ৫ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এসবের মধ্যে কক্সবাজার সদরের ২টি ইউনিয়নে ৩৩ টন চাল ও নগদ ৩৫ হাজার টাকা, পৌরসভায় ২ লাখ টাকার শুকনো খাবার, রামুতে ৬০ টন চাল ও নগদ ৯৫ হাজার টাকা, চকরিয়ায় কয়েক ধাপে ১শ ৫ টন চাল ও নগদ ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, পেকুয়ায় ৩৩ টন চাল ও নগদ ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, মহেশখালীতে ১৯ টন চাল ও নগদ ৫ লাখ টাকা, কুতুবদিয়ায় ২৪ টন চাল ও নগদ ১ লাখ ১০ হাজার টাকা, টেকনাফে ১৮ টন চাল ও নগদ ৮০ হাজার টাকা এবং উখিয়ায় ৫ টন চাল ও নগদ ৩০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়। এছাড়া ২ লাখ টাকার বাইরে কক্সবাজার পৌরসভায় ৭৫ হাজার টাকা, টেকনাফ পৌরসভায় ২ টন চাল, মহেশখালী পৌরসভায় ৫ টন চাল বিতরণ করা হয়।১ আগস্ট বিতরণের উদ্দেশ্যে সেন্টমার্টিনে ৫ টন চাল ও নগদ ৫০ হাজার টাকার পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসন ছাড়াও জেলা প্রশাসকের মৌখিক আহবানে সাড়া দিয়ে দুর্যোগ কবলিত মানুষের মাঝে চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নগদ ৫ লাখ টাকা, পেকুয়া উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ১ লাখ টাকা বিতরণ করা সহ কয়েকটি উপজেলা পরিষদ নগদ অর্থ বিতরণ করেছে।
সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোর পক্ষ থেকে চাহিদাপত্র পাওয়ার পর তাদের কাছে ওই টাকা দেয়া হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক। সরকারিভাবে সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতির যে চিত্র নির্ণয় করা হয়েছে, তা তুলে ধরে জেলা প্রশাসক বলেন, বর্তমানে চকরিয়া উপজেলার ৮টি, পেকুয়ার সবকটি (৬টি), কুতুবদিয়ায় ৩টি সম্পূর্ণ ও ৩টি আংশিক, সদরের ২টি, টেকনাফের ২টি, মহেশখালীর ৩টি, রামুর ১০টি ইউনিয়ন সম্পূর্ণ বন্যাকবলিত। বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে এসব ইউনিয়নে প্রবেশ করছে জোয়ারের পানি।
বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন এলাকাগুলোতে প্রবেশ করছে সাগরের পানি। ভেড়িবাঁধ না ভাঙলে ক্ষতির পরিমাণ অনেক কম হতো। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) দের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়নের তালিকা জেলা প্রশাসনে প্রেরণ করার জন্য বলা হয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.