উন্নয়নের জোয়ারে আদিবাসীরা ডুবে যাচ্ছে: সন্তু লারমা

0

সিটিনিউজ ডেস্ক:: সরকারের কথিত উন্নয়নের জোয়ারে আদিবাসীরা ডুবে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা)। তিনি বলেন, ‘এখনও পাহাড়ে আশ্রয়হীন মানুষ ক্ষুধা ও অভাবের তাড়নায় হাহাকার করছে।’

আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসকে সামনে রেখে শনিবার রাজধানীতে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সন্তু লারমা এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘সরকার বলছে, উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে দেশ। প্রকৃতপক্ষে আদিবাসী জনগণ, গরিব প্রান্তিক কৃষক, দলিত হরিজন, খেটে খাওয়া মেহনতী মানুষ, চা বাগানের শ্রমিকসহ লক্ষ লক্ষ মানুষ এই কথিত উন্নয়নের জোয়ারে ডুবে যাচ্ছে।’

‘সরকার উন্নয়নের জোয়ারে আত্ম-অহংকারে ভেসে বেড়াচ্ছে। অথচ সাধারণ মানুষের জীবনে চলছে অবিরাম হাহাকার ও দীর্ঘশ্বাস।’

সন্তু লারমা বলেন, ‘সরকার বলছে, বাংলাদেশ নিন্ম মধ্যম আয়ের দেশে উন্নত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম জোর দিয়ে বলতে চায়, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসরত হাজার হাজার আদিবাসী মানুষের জীবনে এ কথার প্রতিফলন নেই।’

পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে ১৩১ জনের মৃত্যু ও ২০ হাজার পরিবারের ক্ষতির পরও সরকারের তেমন তৎপরতা নেই বলেও অভিযোগ করেন সন্তু লারমা। তিনি বলেন, ‘বাঘাইছড়ির সাজেকে প্রায় তিন হাজার পরিবার ১৫ হাজার মানুষ খাদ্যাভাবে হাহাকার করছে।’

৯ আগস্ট জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করাসহ মোট ১০টি দাবি তুলে ধরেন সন্তু লারমা। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে আদিবাসী দিবসে জাতিসংঘ ঘোষিত আদিবাসী অধিকার ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন করা হবে বলে বাণী দিয়েছিলেন। কিন্তু অতি দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে, পরবর্তীতে তার সরকারের সময়েই আদিবাসীদের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের বাড়ি অগ্নিসংযোগ, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের খাসিয়া পুঞ্জি বেদখলের চেষ্টা, টাঙ্গাইলে মধুপুর থেকে গারো আদিবাসীদের উচ্ছেদ, সীতাকুণ্ড, মিরসরাই, ফটিকছড়ি, চাঁদপুর ও কুমিল্লার ত্রিপুরাদের ভূমি বেদখল, লুংগুদুতে পাহাড়ি গ্রামের ৩০০ অধিক বাড়ি অগ্নিসংযোগ প্রভৃতি ঘটনাগুলো ঘটে চলেছে।’

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রংয়ের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পংকজ ভট্টাচার্য, বিশিষ্ট কলামিস্ট ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.