দম ফেলার ফুরসত নেই কামার শিল্পীদের

0

কামরুল ইসলাম দুলু , সীতাকুণ্ড::বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল আযহা । মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই উৎসবের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। সময় যত ঘনিয়ে আসছে কামার শিল্পীদের ব্যস্ততা বেড়ে চলেছে। তাদের দম ফেলার ফুরসত নেই।কোরবানির আনুসাঙ্গিক হাতিয়ার দা, বটি, ছুরি সহ ধারালো জিনিস বানাতে দম ফেলার সময় নেই  সীতাকুণ্ড উপজেলার কামার শিল্পীদের। দিনরাত সমান তালে টুং টাং শব্দে মুখর কামারের দোকানগুলি। বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে কুরবানের সময়টাকে কামার শিল্পীদের কাজের চাপ অনেকটা বেড়ে যায় । সেই সঙ্গে বেড়ে যায় তাদের আয়-রোজগারও।

সীতাকুণ্ড উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে কামার শিল্পীদের বানানো হাতিয়ারের ভাল কদর। ঈদের কয়েকদিন বাকি থাকলেও উপজেলার হাট-বাজার গুলোতে ইতিমধ্যে দা, বটি, ছুরি, চাকু সহ বাজারে উঠেছে। তবে এখনও এসব জিনিস কেনার খুব একটা সারা নেই । সময় যত ঘনিয়ে আসবে এসব হাতিয়ারের বেচাকেনা তত বেড়ে যাবে বলে ব্যবসায়ীদের আশা।

উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা গেছে, কোরবানির একটি ছরা ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন সাইজের চাকু ৩০ টাকা থেকে ১০০ টাকা, বটি ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের আরো কয়েক দিন বাকী থাকলেও এখনও এসব হাতিয়ার কেনা খুব একটা জমে উঠেনি। ক্রেতা কম হওয়ায় লাভ কম রেখে কিছু জিনিসি বিক্রি করছেন তারা।

তবে সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বেশি দামে এসব হাতিয়ার বিক্রি করতে পারবেন বলে ব্যবসায়ীরা আশা প্রকাশ করছেন। কামার শিল্পীরা জানান, সারাবছর যত পণ্যে বিক্রি হয় এই ঈদেই বিক্রি হয় তার চেয়ে বেশি। কারণ পশু জবাই করার জন্য ধারালো অস্ত্রের প্রয়োজন। আর পুরনো এইসব অস্ত্র অনেকেই রাখেন না। সেই জন্য প্রতিবছর নতুন নতুন অস্ত্রের প্রয়োজন পরে।

এলাকার কয়েকজন কামারের সঙ্গে কথা বললে তারা এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। তারা জানান, কামার শিল্পের অতি প্রয়োজনীয় জ্বালানি কয়লার অপ্রতুলতায় দাম বেড়ে গেছে, বেড়েছে লোহারও দাম । লোহা ও কয়লার দাম বাড়লেও সে তুলনায় কামার শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। ফলে কামার শিল্পীরা আর্থিক ভাবে পিঁছিয়ে যাচ্ছে। অনেকে বাধ্য হয়ে পৈতৃক পেশা পরিবর্তন করছে । সন্তানরা যেন এই পেশার সঙ্গে যুক্ত না হন সে জন্য অনেকে তাদের সন্তানদের লেখাপড়া শেখাচ্ছেন।

কামারেরা জানান, প্রতিটি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। কিন্তু তাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। এদের মধ্যে অনেকে বিদ্যুতের ব্যাপারে অভিযোগ করেন। আরও বলেন কাজের চাপ বেশি থাকলেও বিদ্যুতের সমস্যার কারণে ঠিকমত সময়ে কাজ করা যাচ্ছে না । কামাররা জানান, এখন আগের মত আয় হয় না। আগে এসব জিনিস বিক্রি করে সংসার চালাতে পারলেও এখন সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে গেছে । তবে সরকারি পৃষ্ঠপোশকতা পেলে এই শিল্পকে টেকসই করে গড়ে তোলা সম্ভব বলে তারা মনে করেন ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.