বেহাল সড়কে সাকোঁ যেন ভরসা

0

এম রমজান আলী, রাউজান প্রতিনিধি::চট্টগ্রামের রাউজানে ১২ টি গ্রামের ১১ টি স্কুল ও মাদ্রাসা পড়ুয়া য়া হাজারো শিক্ষার্থীসহ অন্তত ২০ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম তিন কিলোমিটারের একটি পিচঢালা সড়ক। এই সড়কের ৬টি স্থান ভেঙ্গে গিয়ে মিশে গেছে জমির সঙ্গে। একারণে গত একমাস ধরে বন্ধ রয়েছে সকল প্রকার যান চলাচল। পরিণত হয়েছে খালে তাই হেটে চলারও কোন উপায় নেই। কোন কোন ভাঙ্গা স্থানে বাঁশের সাকোঁ দিয়ে অস্থায়ীভাবে স্থানীয়রা চলাচলের চেষ্টা করলেও নারী শিশুরা চলাচল করতে পারছেননা পায়ে হেটেও।

ভাঙ্গা ৬ স্থানের একেকটিতে ১০ থেকে ২০ ফুট পর্যন্ত সড়ক বিলিন হয়ে গেছে দুপাশের ধানী জমির সঙ্গে। জোয়ার ভাটায় তীব্র গতিতে পানি বেয়ে যায় একপাশের জমি থেকে অন্য পাশের জমিতে। শুধু তাই নয় এই সড়কের আরও ৫টি স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে শত শত গর্তের। এটি চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চৌধুরীহাট-কচুখাইন সড়কের চিত্র।

সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে কথা হয় ভুক্তভোগী অনেক এলাকাবাসির সঙ্গে। তারা জানায়, চৌধুরীহাট হতে কচুখাইন পর্যন্ত ৩ কিলোমিটারের এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চৌধুরীহাট, দক্ষিণ নোয়াপাড়া, পূর্ব কচুখাইন, পশ্চিম কচুখাইন, মধ্যম পাড়া, খন্দকার পাড়াসহ ১২ টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ যানবাহন ও হেটে চলাচল করে।

এছাড়াও এখানকার মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়, কচুখাইন মিয়া আলী উচ্চ, মুহাম্মদীয়া সুন্নিয়া মাদরাসা ও নোয়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজসহ ১১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজারো শিক্ষার্থী চলার পথে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে। সড়কের ভাঙ্গাস্থান গুলোর অবস্থান দক্ষিণ নোয়াপাড়া, খায়রাতী সওদাগরের বাড়ী ও পূর্ব কচুখাইন গ্রামে।

কার্পেটিং উঠে যাওয়া স্থান গুলো হলো সড়কের বটতল, গাজী আব্দুল মালেকের বাড়ী, মাওলানা আবুল ফয়েজের বাড়ী, নুরুল হক চেয়ারম্যানের বাড়ী ও সেলিম উদ্দিন চেয়ারম্যানের বাড়ী এলাকায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত একমাস আগে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের স্রোতে সড়কটির এমন করুণ অবস্থার সৃষ্টি হলেও গাড়ী চলাচলতো দুরের কথা হেটে চলারও উপযোগী করতে কেউ এখনো এগিয়ে আসেনি।

স্থানীয় বাসিন্দা এসকান্দর বলেন, এই সড়কে ৬ টি স্থান ভেঙ্গে পড়ার কারণে যান ও মানুষ চলাচল করতে পারছেনা। তার পাশাপাশি সড়কের অপর প্রান্তের যে জমিতে আমন চাষ করেছিলাম তাতে ভাঙ্গা স্থান দিয়ে গড়িয়ে আসা পানির স্রোতে ভেসে নিয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন।

বাচ্ছা কোলে নিয়ে চিকিৎসকের কাছ থেকে শ্বাশুড়ীসহ বাড়ী ফিরছিলেন কচুখাইন গ্রামের খয়রাতী সওদাগরের বাড়ীর গৃহবধু রোকসানা আকতার। তিনি বলেন, অনেক কষ্টে ভাঙ্গা স্থান পার হয়ে বাড়ী ফিরছি। খুব ঝুঁকি ছিল বাচ্চা কোলে নিয়ে যখন সাঁকোর বাঁশের উপরের পথ অতিক্রম করছিলাম।

কোরবান আলী নামের আরেক চলাচলকারী বলেন, অনেক জায়গায় সড়ক ভাঙলেও তা দ্রুত মেরামত করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের চলাচলের এ গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি গত একমাস যাতব এভাবে রয়েছে। তিনি বলেন সামনে কোরবানীর ঈদে মানুষ পশু কিনে এই সড়ক দিয়েতো বাড়ী ফিরতেও পারবে না।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ ইউছুপ বলেন, আমার ওয়ার্ডের এই গুরুত্বপুর্ণ সড়কটি গত ঈদের পর থেকে এ অবস্থার মধ্যে আছে। সরকারী কোন বরাদ্দ এ পর্যন্ত পায়নি। নিজের টাকায় কয়েকস্থানে হেটে চলাচলের উপযোগী করতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু পানির স্রোতে তাও ভেঙ্গে নিয়ে গেছে। কোরবানীর ঈদের আগে যেন সড়কটি চলাচল উপযোগী করা যায় তার জন্য তিনি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

রাউজান উপজেলা প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, সড়কটির ভাঙ্গাস্থান ও কার্পেটিং উঠে যাওয়ার বিষয়ে আমরা অবগত আছি। এরমধ্যে পরিমাপ করে সংস্কারের জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ এলে কাজ শুরু করা হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.