গণহত্যা বন্ধ না হলে বাংলার ছেলেরা আরাকান দখল করবে-চরমোনাই পীর

0

বাঁশখালী প্রতিনিধি,সিটিনিউজ : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর চরমোনাইয়ের পীর মুফতী সৈয়দ মু. ফয়জুল করীম বলেছেন, মিয়ানমারের মুসলমান নারী, পুরুষ ও শিশুদের উপর অং সান সুচির সামরিক জান্তাদের জুলুম-নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ ইতিহাসের সকল জুলুম নির্যাতনকে হার মানিয়েছে। এমন বর্বরতা বিশ্ববাসী কখনো দেখেনি।

মুসলমানদের রক্তে রঞ্জিত অং সান সুচিকে জাতিসংঘ নোবেল পুরস্কারে ভুষিত করে মুসলমানদের সাথে গাদ্দারী করেছে। তার নোবেল পুরস্কার বাতিল করতে হবে। জাতিসংঘ মুসলমান ও ইসলামবিদ্বেষীদের পুরস্কৃত করে মুসলমানদের সাথে তামাশা করেছে। কাজেই এই জাতিসংঘ দিয়ে মুসলমানদের কোন স্বার্থ রক্ষা হবে না, মুসলিম রাষ্ট্রগুলো সমন্বয়ে এখনই পৃথক মুসলিম জাতিসংঘ গঠন করতে হবে।

বুধবার(১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি বাঁশখালী উপজেলা শাখার উদ্যোগে পৌর শহরের গ্রীন পার্ক কমিউনিটি সেন্টারে বিশাল ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আল্লামা মুফতি ফয়জুল করীম উপরোক্ত কথা বলেন। বাঁশখালীর প্রবীণ ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম চাম্বল দারুল উলুম মাদরাসার প্রিন্সিপাল পীরে কামেল আল্লামা শাহ আবদুল জলিল ও সরল আনোয়ারুল উলুম মাদরাসার পরিচালক মাওলানা শাহ নুর মোহাম্মদ পীর সাহেবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাহফিলে বক্তব্য রাখেন, বাঁশখালী আসন থেকে পীর সাহেব চরমোনাই ঘোষিত ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী জামেয়া দারুল মা আরিফ আল ইসলামিয়ার মোহাদ্দিস আল্লামা হাফেজ ফরিদ আহমদ আনসারী, মনকিচর এমদাদুল উলুম মাদরাসার প্রধান পরিচালক মাওলানা শাহ আবু বকর, ঢাকার মাওলানা রাশেদুল ইসলাম রহমতপুরী, খতীব মাওলানা মোস্তাক আহমদ, মাওলানা হাফেজ নুরুন্নবী, মাওলানা আবদুস সত্তার প্রমুখ। মাহফিল বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক মাওলানা হাফেজ রুহুল্লাহর পরিচালনায় মাহফিলে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ও চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আলহাজ্ব জান্নাতুল ইসলাম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি সাংবাদিক শফকত হোসাইন চাটগামী, মাওলানা এবিএম অলিউল্লাহ, মাওলানা নুর মোহাম্মদ লোকমান, মাওলানা নুরুল হক সুজিশ, মাওলানা মুফতি আবু তৈয়ব, মাওলানা হাফেজ ইসহাক, মাওলানা মুফতি ওবায়দুল্লাহ, মাওলানা ফোজাইল বিন আবদুল জলিল, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা মুফতি নুরুল আমিন, মাওলানা আনোয়ারুল ইসলাম, মাওলানা মাহমুদুল ইসলাম, মাওলানা মোজাম্মিলুল হক প্রমুখ।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে মুফতি ফয়জুল করিম আরো বলেন, মিয়ানমার অবৈধভাবে সতের বার বাংলাদেশের আকাশসীমা ব্যবহার করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে তাদের তেমন কোন প্রতিবাদ করেনি। আমারা আজকের এই সম্মেলন থেকে এর তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। মিয়ানমার যদি আবারো বাংলাদেশের সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ করে, তাহলে বাংলাদেশের জনগণ তার সমুচিত জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে। আমাদের বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা চরম পর্যায়ে অধঃপতনে নিমজ্জিত।

গুম, খুন, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, মারমারি, হানাহানি, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, কায়েমী স্বার্থবাদ ইত্যাদি এই সমাজের প্রতিদিনকার চিত্র। সন্তানহারা মায়ের হাহাকার, স্বামীহারা স্ত্রীর আহাজারী, ভাইহারা বোনের আর্তনাদে এই সমাজের আকাশ বাতাশ ভারি হয়ে উঠছে প্রতিনিয়ত। কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষের হাড়ভাঙা পরিশ্রমে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে আবার তাদের ওপরই চালানো হচ্ছে অমানবিক নির্যাতন। মানুষের জান-মাল, ইজ্জত-আবরুর কোন নিশ্চয়তা নেই। স্বাধীনভাবে ধর্ম-কর্ম পালনের কোন স্বাধীনতা নেই।

অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ইত্যাদি মৌলিক অধিকার থেকে মানুষকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। সবমিলিয়ে এই সমাজকে মানুষের সমাজ বলা যায় না। সমাজের মানুষ বাঁচার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। শান্তির জন্য দিকবিদিক ছোটাছোটি করছে। একেকবার একেক তন্ত্র-মন্ত্রের আশ্রয় নিচ্ছে। কিন্তু কোথাও শান্তি খুঁজে পাচ্ছে না। প্রকৃতপক্ষে শান্তির গ্যারান্টি রয়েছে একমাত্র ইসলামে। সমাজে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হলেই মানুষ কাঙ্খিত মুক্তি এবং শান্তি খুঁজে পাবে। আর ইসলাম প্রতিষ্ঠার এই কাজের জন্য আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে নবী রাসুল আ. দের পাঠিয়েছেন।

এখন আর নবী রাসুলদের আগমন ঘটবে না। তাই নবী রাসুলদের উত্তরসূরী ওলামায়ে কেরামকেই এই দায়িত্ব পালন করতে হবে। ওলামায়ে কেরামদের দ্বারাই সম্ভব একটি আদর্শ সমাজ গঠন করা।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.