তৈলারদ্বীপ সেতুতে আবারো টোল আদায় শুরু

0

বাঁশখালী প্রতিনিধি ::শঙ্খ নদীর তৈলারদ্বীপ সেতুতে গতকাল রবিবার বিকাল ৫ টা থেকে সড়ক ও জনপদ বিভাগের পক্ষ থেকে আবারো টোল আদায় শুরু হয়েছে। শঙ্খ নদীর তৈলারদ্বীপ সেতু নিয়ে টোল আদায় ও বন্ধ নিয়ে বিগত কয় মাস যাবৎ চলছে নানা ধরনের নাটকীয়তা।

গত ২৪ আগষ্ট হাইকোর্টের আদেশে টোল স্থগিত হওয়ার এক মাস পর আবারো টোল আদায়ের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় সাধারণ জনগণ নানা ধরনের প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। শঙ্খ নদীর তৈলারদ্বীপ সেতু টোল মুক্ত করার জন্য সাবেক মেয়র মাহামুদুল ইসলামের সহযোগিতায় সিএনজি শ্রমিকদের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিটের প্রেক্ষিতে গত ফেব্রুয়ারীতে দেওয়া রায়ের কার্যকারিতা হিসেবে সেই রিটের প্রেক্ষিতে বিচারপতি নাঈম হায়দার ও বিচারপতি এটিএম সাইফুর রহমানের গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ টোল মওকুপের আদেশ দেন। সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবি ও প্রাক্তন এটর্নি জেনারেল এএফ হাসান আরিফ রিট আবেদন পরিচালনা করেন।

এ আদেশের প্রেক্ষিতে ২৪ আগষ্ট থেকে টোল মুক্ত ভাবে চলাচল শুরু করে সকল ধরনের যানবাহন। এরই প্রেক্ষিতে সিএনজি শ্রমিক সহ অন্যান্য শ্রমিকরা মিলে সাবেক সাংসদ ও মেয়র মাহামুদুল ইসলাম চৌধুরীকে বিরোচিত সংবর্ধনার আয়োজন করে ২০ সেপ্টেম্বর। এর আগে আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে পৃথক সমাবেশের মাধ্যমে এ সংবর্ধনা ঠেকানোর দাবীতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। তারই প্রেক্ষিতে ১৯শে সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান স্থগিতের ঘোষণা দেন সাবেক মেয়র সহ শ্রমিক নেতারা।

তবে ২০ সেপ্টেম্বর পরিবহন শ্রমিকদের পক্ষ থেকে পরিবহন ধর্মঘট আহবান করে অচল করে দেওয়া হয় যোগাযোগ ব্যবস্থা। এরপরও থেমে থাকেনি এই ঘটনার রেশ। ২২ সেপ্টেম্বর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবারো ঘটে সংঘর্ষের ঘটনা। হামলা করা হয় বৈলছড়ির চেয়ারম্যান কফিল উদ্দীনের বাড়ীতে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামলে উঠলেও এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিরাজ করছে চাপা উত্তেজনা। এরই মধ্যে গতকাল রবিবার আবার হাইকোর্টের রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে চেম্বার জজ আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে বিকাল ৫ টা থেকে সরকালী সিডিউল অনুসারে টোল আদায় শুরু হয়েছে বলে জানান সওজের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন।

তিনি বলেন, হাইকোর্টের চেম্বার জজ আদালতের আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুসারে পূর্বের সরকারী সিডিউল অনুসারে আমরা টোল আদায় করছি। এ ব্যাপারে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সওজের পক্ষ থেকে আমাকে জানানো হয়েছে এবং সরকারী নির্দেশনা অনুসারে টোল আদায়ে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, শঙ্খ নদীর তৈলারদ্বীপ সেতু নির্মাণের জন্য দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী আনোয়ারা, চকরিয়া, পেকুয়া, কক্সবাজার, মহেশখালী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের জনগণের দাবীর প্রেক্ষিতে এই সেতু নির্মাণের জন্য ২০০১ সালের ১৭ ই জানুয়ারী বর্তমান প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিত্তি প্রস্থর স্থাপনের মাধ্যমে কাজের শুভ সূচনা করেন। প্রায় ৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলে ২০০৬ সালের ২৯শে আগষ্ট তৎকালীন প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এই সেতুর উদ্বোধন করেন। পরবর্তীতে উদ্ভোধনের পর থেকে এই সেতুর উপর টোল ধার্য্য করা হলেও দিন দিন এই টোল বৃদ্ধি পেতে থাকে। অথচ শঙ্খ নদীর উপর একই পর্যায়ের আরো ২টি সেতু দোহাজারীতে এবং চন্দনাইশ সাতকানিয়ার খোদার হাটে। সেতুতে কোন ধরনের টোল আদায় করা না হলেও শঙ্খ নদীর তৈলারদ্বীপ সেতুতে দীর্ঘ সময় ধরে টোল আদায় করা হতো।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.