উড়ন্ত চক্ষু হাসপাতালে প্রশিক্ষণ শেষ হচ্ছে বৃহস্পতিবার

0

নিজস্ব প্রতিবেদক: শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবস্থানরত উড়ন্ত চক্ষু হাসপাতালে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শেষ হচ্ছে বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর)।

গত ১৬ নভেম্বর বিশেষায়িত ‘এমডি ১০’ বিমানটি অবতরণের পর এ পর্যন্ত ৪৪ জন জটিল চক্ষুরোগীর অপারেশন করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ‘স্বেচ্ছাসেবক’ হিসেবে আসা চক্ষু বিশেষজ্ঞরা। তারা এসেছেন ভারত, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া থেকে। এবারের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০টি জটিল অস্ত্রোপচার।

‘শিখন সহায়ক’ অরবিস ফ্লাইং আই হসপিটালের চট্টগ্রামে চতুর্থ ও বাংলাদেশে দশম ভিজিট। সর্বশেষ এটি এসেছিল ২০০৯ সালে।

উড়ন্ত হাসপাতালে প্রশিক্ষণ কর্মশালার ডা. এমডি ইফতেখার ইকবাল বলেন, চক্ষু চিকিৎসায় বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও সেরা বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে অনেক জটিল বিষয় খুব সহজে জানতে-বুঝতে সক্ষম হয়েছি আমরা। এটি আমাদের জন্য বিরাট একটি সুযোগ। অরবিসের প্রশিক্ষণের ফলে আমাদের চিকিৎসকদের দক্ষতা-সাহস যেমন বেড়েছে তেমনি নতুন নতুন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের সঙ্গে পরিচয়ও ঘটেছে। নিরাময়যোগ্য অন্ধত্ব নিবারণে এটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।

কামাল নামের একজন রোগী জানালেন, বাস এক্সিডেন্টে চোখে মারাত্মক আঘাত পেয়েছিলেন তিনি। চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে তিনি অরবিসের উড়ন্ত হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ পেয়েছেন। ডাক্তার-নার্সদের আন্তরিকতা তাকে মুগ্ধ করেছে।

অরবিসের দুসপ্তাহের চক্ষু-চিকিৎসা প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সহযোগিতায় লেকচার, পর্যবেক্ষণ, সিম্পোজিয়াম ও হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে দেশের বিভিন্ন চিকিৎসালয়ের দুশতাধিক ডাক্তার, নার্স, এনেসথেটিস্টস, বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ার, টেকনিশিয়ানকে। এবারের কর্মসূচির লক্ষ্য হচ্ছে উন্নত প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি স্থানান্তরের মাধ্যমে চক্ষু চিকিৎসকদের চক্ষুরোগ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি করা। সমর্থন দিচ্ছে দেশে চলমান অরবিসের ‘শিশু অন্ধত্ব হ্রাস’ প্রকল্পকেও। গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে চোখের জটিল ছানি, পেডিয়াট্রিক স্ট্রাবিসমাস ও ছানি, সার্জিক্যাল ও মেডিকেল রেটিনা, রেটিনোপ্যাথি অব প্রিম্যাচুরিটি (আরওপি), প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের কর্নিয়া, ওকুলোপ্লাস্টিকস ও অঙ্কোলজি।

অরবিস ইন্টারন্যাশনালের গ্লোবাল মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. জনাথন লর্ড জানান, অরবিসের মেইন ফোকাস হচ্ছে ডাক্তার-নার্সসহ চিকিৎসাসেবার সঙ্গে জড়িতদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি কল্যাণের সুযোগ সৃষ্টি করা। রোগীদের সরাসরি চিকিৎসাসেবা দেওয়াটা মুখ্য নয়।

বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ায় ডায়াবেটিক রোগী বেশি মন্তব্য করে তিনি এসব রোগীর বছরে একবার চোখ পরীক্ষার পরামর্শ দেন। এছাড়া শিশুদের চোখের সমস্যা চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে মা-বাবা, শিক্ষক ও প্রতিবেশীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

অরবিসের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মুনীর আহমেদ বলেন, শাহ আমানতে উড়ন্ত হাসপাতালের পাশাপাশি চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালেও কর্মশালা, প্রশিক্ষণ, অপারেশন করেছেন অরবিসের বিশেষজ্ঞরা। সবচেয়ে বড় কথা এবার চীন, কাতার, ইউকে থেকে অরবিসের ডোনার এসেছেন অন্তত ৪০ জন।

আগামী ৪ ডিসেম্বর উড়ন্ত হাসপাতালের চট্টগ্রাম ত্যাগের কথা রয়েছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.