নগরীতে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা শুরু ১ ডিসেম্বর

0

নিজস্ব প্রতিবেদক::আগামীকাল ১ ডিসেম্বর শুক্রবার আউটার স্টেডিয়ামে মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা শুরু হচ্ছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর বেলা ২.৩০ মিনিটে এম.এ আজিজ স্টেডিয়াম সম্মুখস্থ সড়কদ্বীপে বিজয় শিখা প্রজ্জ্বলনের মধ্যে দিয়ে জিমনেশিয়াম চত্বরে ১০ দিন ব্যাপী ম্ুিক্তযুদ্ধের বিজয় মেলার বিজয় মঞ্চে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ, আলোচনা সভা ও উদ্দীপনামূলক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনার কার্যক্রম শুরু হবে।

উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, এম.পি। এছাড়া ৫ ডিসেম্বর লালদীঘি ময়দানে অনুর্ধ্ব ১৮ বিজয় ফুটবল টুর্ণামেন্ট শুরু হবে এবং ১১ ডিসেম্বর কর্ণফুলী নদীতে ঐতিহ্যবাহী সাম্পান বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। আজ সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মেলা পরিষদের মহাসচিব মোহাম্মদ ইউনুছ।

লিখিত বক্তব্য বলা হয় ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের স্মৃতিময় ডিসেম্বর মাসের প্রাক্কালে আপনাদের রক্তিম শুভেচ্ছা ও অভিবাদন জানাই। অনেক প্রতিকূলতা অতিক্রম করে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা ২৯ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। আজ থেকে ২৮ বছর আগে একটি বৈরী সময়ে চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা শুরু হয়েছিল। এই মেলা মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী চেতনাকে প্রজন্ম পরম্পরায় পৌঁছে দিতে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যšত বি¯তৃত হয়েছে। সংগত কারণেই এই বিজয় মেলা বাঙালির মিলন তীর্থে পরিণ হয়েছে। প্রতি বছর এই মেলায় বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্যে, কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে গভীরতর আবেগের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। তাই বিজয় মেলা বাঙালির অ¯িতত্বের শিকড়ের সন্ধান জানান দেয়। এই বিজয় মেলা মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক শক্তির একটি অভিন্ন মাধ্যম। বাঙালি জাতিস্বত্তার বিকাশে এই মেলা গণমানুষের মাঝে বার বার মুক্তির বার্তা পৌঁছে দেয়। রাষ্ট্রে ও প্রশাসনে যখনই স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি হামলে পড়েছিল তখন এই বিজয় মেলা প্রতিবাদ ও দ্রোহের অবলম্বন হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিকে প্রাণিত করেছে। পাশাপাশি অশুভ শক্তি এই বিজয় মেলার বিরুদ্ধে নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছিল। মুক্তিযোদ্ধা-জনতা সম্মিলিত শক্তিতে এই প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করা হয়েছে। তাই মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা বাঙালির আবশ্যিক ইতিহাসের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।

লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয় প্রতি বছরই বিজয় মেলার আয়োজনের সাথে নতুন নতুন তাৎপর্য সংযুক্ত হয়। এ বছর জাতিসংঘের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের মহাকাব্যিক ভাষণকে ‘ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ রেজিষ্টার এ অšতর্ভূক্তির মাধ্যমে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য এর স্বীকৃতি দেওয়ায় এবারের বিজয় মেলায় নতুন তাৎপর্য যুক্ত হয়েছে। এই ভাষণকে যারা স্বাধীনতার ঘোষণা হিসেবে মেনে নিতে চায়নি তাদের বিরুদ্ধে একটি রুদ্র টর্ণেডো নিক্ষিপ্ত হলো। এই স্বীকৃতি অর্জনের মধ্যে দিয়ে বাঙালি ও বাংলাদেশ বিশ্ব সভায় আরো নিবিড়ভাবে নতুন মাত্রা পেল।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয় এবারের মেলার অঙ্গীকার হলো বর্তমান জনকল্যাণমুখী সরকারের উন্নয়ন ও নজিরবিহীন সাফল্যর বার্তা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারো মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিকে ক্ষমতাসীন করার লক্ষ্যে সমগ্র জাতিকে প্রণোদিত করবে। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলায় সম্পৃক্ত করে তাদের সৃজনশীল কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে স্বার্থক নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠার প্রত্যয় জানানো হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের কো-চেয়ারম্যান আলহাজ্ব বদিউল আলম, জাহাঙ্গীর চৌধুরী সি.ইন.সি (স্পেশাল), অমল মিত্র, মহাসচিব আহমেদুর রহমান ছিদ্দিকী, এম.এ মনছুর, পান্টু লাল সাহা, মেলা পরিষদের কর্মকর্তা আবু তাহের, আবুল মনছুর, ফরিদ মাহমুদ, মহিলা স্কোয়ার্ডের নেত্রী মমতাজ খান, হাসিনা আকতার টুনু হাজী সাহাবুদ্দিন, সাজেদুল ইসলাম চৌধুরী মিল্টন প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.