সাড়ে ৪বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা নিতো প্রতারক সেলিম
বোয়ালখালী প্রতিনিধি: ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ ব্যবহার করে সাড়ে ৪বছর ধরে নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলনসহ সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আসছিলেন চট্টগ্রামের জামালখান রহমতগঞ্জ এলাকার ৯নং আবদুর ছাত্তার রোডের জাহান ভিলার বাসিন্দা মৃত আবদুর রহিমের ছেলে সেলিম চৌধুরী।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে সেলিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে মো. মহিউদ্দিন চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালককে বিষয়টি তদন্তের নিদের্শনা দেয়া হয়।
চট্টগ্রাম জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত এক আদেশে তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্ত সেলিম চৌধুরীকে গত ১৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ে উপস্থিত থাকা অনুরোধ জানান। একই সাথে চট্টগ্রাম মহা নগর ইউনিট কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ ও অভিযোগকারী সীতাকুন্ড উপজেলার ভাটিয়ারী ইমাম নগর গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে মহিউদ্দিনকেও উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
এ নিদের্শনা পেয়ে অভিযুক্ত সেলিম চৌধুরী স্ত্রী চৌধুরী সানিয়া আলম শেলী গত ১০ ডিসেম্বর ৩মাসের সময় চেয়ে আবেদন করেন। চট্টগ্রাম জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ ওমর ফারুক সময়ের আবেদন না মঞ্জুর করেন এবং সেলিম চৌধুরী নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা গ্রহণের নিমিত্তে প্রদেয় দলিলাদি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে যাচাই করেন। এতে মো. সেলিম চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাময়িক সনদ ৫৭৯২৯ মূলে ২০১৩ সালের জুলাই মাস থেকে নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা সম্মানীভাতা ও সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। সেই ৫৭৯২৯ সাময়িক সনদ পত্র সেলিম চৌধুরী নয়। এ নাম্বারের সনদপত্রের অধিকারী চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার চান্দার হাট সৈয়দ নগর গ্রামের মরহুম একরাম রসুলে ছেলে মো.আবদুল ওয়াজেদ।
এ ব্যাপারে মিথ্যা তথ্য ও প্রতারণা করে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা গ্রহণ করেছেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন চট্টগ্রাম জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ ওমর ফারুক। তিনি প্রতিবেদনে জানান, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত সেলিম চৌধুরী’র অনুকূলে ভাতা না দেয়ার নির্দেশনা হয়েছে। গত ১৯ ডিসেম্বর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে প্রেরিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।
তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান এক আদেশে বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সেলিম চৌধুরীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতাবন্ধসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।