১৬ শর্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি হলে জিএসপি সুবিধা

0

সিটিনিউজবিডি :  তৈরি পোশাক শিল্প রফতানিতে জিএসপি সুবিধা ফিরে পাওয়ার ক্ষেত্রে ১৬টি শর্ত পূরণে আরও অগ্রগতি চায় যুক্তরাষ্ট্র।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প ও জিএসপি সুবিধা নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে মঙ্গলবার সচিবালয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্টদূতদের বৈঠক শেষে ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহের মধ্যে ঢাকাস্থ কানাডিয়ান হাই-কমিশনার বেনোয়িট পিয়েরে লারামি, রাজকীয় ড্যানিশ রাষ্ট্রদূত হ্যানি ফুল এস্কজায়ের, যুক্তরাজ্যভিত্তিক দাতাসংস্থা ডিএফআইডি’র প্রধান সারাহ কুকী, নেদারল্যাল্ড দূতাবাসের অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও উন্নয়ন সহযোগিতা বিভাগের প্রধান মার্টিন ভ্যান হুগসট্রেটেন এবং বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য সচিব, শ্রম সচিব ও পররাষ্ট্র সচিবগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা ফলপ্রসূ আলোচনা করেছি। বৈঠকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাত এবং কারখানার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

জিএসপি সুবিধা ফিরে পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের করণীয় বা এ ক্ষেত্রে বাধা কোনটি— জানতে চাইলে মার্শা বার্নিকাট বলেন, সাসটেইনেবল কমপ্লায়েন্সের জন্য ১৬টি শর্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আরও অগ্রগতি প্রয়োজন। এর মধ্যে স্বচ্ছ ডাটাবেজ তৈরি, কর্মপরিবেশ, শ্রমিকদের অধিকার ও নিরাপত্তা এবং শ্রম আইন বাস্তবায়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বৈঠকে দুটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একটি হচ্ছে- সাসটেইনেবল কমপ্লায়েন্স এবং অন্যটি অ্যাকশন প্ল্যান। অ্যাকশন প্ল্যানের ১৬ দফা আমরা ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করেছি। বৈঠকে তারা এ বিষয়ে সন্তোষও প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেন, শুধু শ্রম আইন বাস্তবায়নে বিধিমালা প্রণয়নের কাজ এখনও শেষ হয়নি। এটি এখন আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং-এর জন্য পাঠান হয়েছে। আগামী দু-এক সপ্তাহর মধ্যে এটি চূড়ান্ত হবে। এটি হলে ১৬ দফা অ্যাকশন প্ল্যান বাস্তবায়নের কাজ শেষ হবে।

এখন জিএসপি সুবিধা প্রদানের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউএসটিআর উভয়েই উপলব্ধি করবে—

এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধাটি বাতিল করা হয়নি, স্থগিত করা হয়েছে। কিন্তু কেন স্থগিত করা হয়েছে, সেটা তারাই ভাল বলতে পারবেন। বাংলাদেশের অবস্থা অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে ভাল। সুতরাং বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা না পাওয়ার কোনো কারণ নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘জিএসপি নিয়ে বৈঠক করতে শীঘ্রই বাণিজ্য সচিব, শ্রম সচিব ও পররাষ্ট্র সচিব যুক্তরাষ্ট্র যাবেন এবং আগামী সেপ্টেম্বরে ইউএসটিআর-এর একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসবে।’

উল্লেখ্য, রানা প্লাজা ধসের পর জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র।

বাংলাদেশের শ্রম আইন প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, শ্রম আইন নিয়ে তারা সন্তুষ্ট। এখন তারা শুধু এর বাস্তবায়ন চায়। এ ছাড়া তারা অভিযোগ তুলেছিলেন যে, ৩০ শতাংশ কারখানা সময় মতো বেতন-ভাতা দেয় না। আমরা বলেছি, এটা সঠিক নয়।

রাজনৈতিক কারণে জিএসপি সুবিধা বাতিলের বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর ইতোপূর্বের বক্তব্যের প্রতি মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষষ করা হলে দু’জনেই হেসে উঠেন।

এ বিষয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে বলেছি যে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে আমরা একসঙ্গে চলছি। আমাদের মধ্যে একটা সমস্যা ছিল স্বাধীনতার সময় ১৯৭১-এ। বাংলাদেশের মানুষ যেন এটা মনে না করে যে, ওই কারণে জিএসপি সুবিধা স্থগিত করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অন্য কোনো সমস্যা নেই। তাদের সঙ্গে আমাদের টিকফা চুক্তি রয়েছে, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ রয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশ যেন জিএসপি সুবিধাসহ সকর পণ্যে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা পায় এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ জানিয়েছি।’

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.