ছাত্রদলের সবাইকে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে

0

চট্টগ্রাম :  জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৩৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে নগর ছাত্রদল আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, ছাত্রদল নেতাকর্মীদেরকে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে । দেশে ক্রান্তিকাল চলছে। দেশের এই ক্রান্তিকালে দেশের মানুষকে বাঁচানোর জন্য, মানবাধিকার রক্ষার জন্য, দেশের মানুষের বাক স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষার জন্য এই সরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনের কোন বিকল্প নেই। মহান মুক্তিযুদ্ধের এই দেশের মুক্তিকামী জনতা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সংগ্রাম করেছিল।

আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়ে ছিলাম। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী দেশের মানুষের গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার বার বারই হোচট খেয়েছে। স্বৈরাচার এরশাদ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দীর্ঘ নয় বছর এক দলীয় শাসনের মাধ্যমে এক নায়কতন্ত্র চালিয়েছিল। বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এক ঝাঁক সাহসী তরুণ ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বলিষ্ট ভূমিকায় রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে স্বৈরাচার এরশাদের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্রের বিজয় পতাকা উড়ানো হয়েছিল।

আজ আবারো সে গণতন্ত্র এই অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিকলে বন্দী। ৫ জানুয়ারি এক দলীয়ভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে তা পাকাপোক্ত করার জন্য নানা ছল-চাতুরীর মাধ্যমে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, হামলা, গুম, হত্যা, নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। এই সরকার ফ্যাসিস্ট কায়দায় ক্ষমতায় টিকে থাকার স্বপ্নে বিভোর।

কিন্তু কোন স্বৈরাচারই বেশি দিন টিকতে পারে নাই। এই সরকারও পারবে না। তাই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে দেশের মানুষের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে দেশেনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সরকার দুর্নীতি, দুঃশাসন, নির্যাতন-নিপীড়নের মাধ্যমে অবৈধভাবে এখনো ক্ষমতা আকড়ে আছে।

তারা দেশে গণতন্ত্র চায় না, তারা চায় স্বৈরাতন্ত্র। আগামী দিনে ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল চট্টগ্রাম মহানগরীকে শক্তিশালী সংগঠনের দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। ছাত্রদল নেতাকর্মীদেরকে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি মঙ্গলবার ২ ডিসেম্বর বিকাল ৪ ঘটিকায় নগরীর মুসলিম ইনস্টিটিউট হল মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৩৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদল আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।

উক্ত ছাত্র সমাবেশে প্রধান বক্তা ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রাজপথের অগ্রগামী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্রদলের রয়েছে গৌরব ও ঐতিহ্যের ইতিহাস। বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে অতীতের ন্যায় রাজপথে থেকে অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফেরার কথা ভুলে যেতে হবে। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যূত্থান, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ, ৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে আজ অবদি বাংলাদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকেই এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আবারও নেতৃত্ব দিতে হবে।

জনগণের রক্তের উপর সিংহাসন বানিয়ে স্বৈরাচারী কায়দায় রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলকারী ভোটবিহীন আওয়ামীলীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও দুর্বার ছাত্র-গণআন্দোলনের মাধ্যমে অবৈধ ক্ষমতার মসনদ থেকে নামিয়ে ফেলতে হবে।

বিশেষ বক্তা আবুল হাশেম বক্কর বলেন, স্বৈরাচারী হাসিনা বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের অসংখ্য সূর্য্য সৈনিককে আমরা হারিয়ে ফেলেছি। আজকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিনে সেই সকল শহীদ ভাইদের অপূর্ণ স্বপ্ন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনের দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের আস্থা ও ভালবাসার শেষ আশ্রয়স্থল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এই অবৈধ ভোটারবিহীন জবরদখলকারী সরকারকে হটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার শপথ নিতে হবে। আজকের এই শপথই হোক আগামী দিনের আন্দোলনের শক্তি। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল নেতাকর্মীদেরকে যে কোন মূল্যে ঐক্যবদ্ধভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শেখ হাসিনার পতন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। ঐক্যবদ্ধতার কোন বিকল্প নেই।

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদল সভাপতি গাজী মোঃ সিরাজ উল্লাহ’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলুর সঞ্চালনায় উক্ত ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। প্রধান বক্তা ছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন হোসেন। বিশেষ বক্তা ছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর।

বিশেষ অতিথি ছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি এম এ সবুর, নিয়াজ মোহাম্মদ খান, শফিকুর রহমান স্বপন, যুগ্ম সম্পাদক আর.ইউ.চৌধুরী শাহীন, জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মাঈনুদ্দীন মুহাম্মদ শহীদ। এতে আরও বক্তব্য রাখেন, নগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন চৌধুরী, জিয়াউর রহমান জিয়া, যুগ্ম সম্পাদক আলী মর্তুজা খান, কেন্দ্রীয় সদস্য শেখ রাসেল, নগর ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক জমির উদ্দিন নাহিদ, হালিশহর থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কবির আহমদ শাহীন, চান্দগাঁও থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক গোলজার হোসেন, চকবাজার থানা ছাত্রদলের সভাপতি নুরুল আলম শিপু, আকবর শাহ্ থানা ছাত্রদলের সভাপতি জহিরুল হক টুটুল, বাকলিয়া থানা ছাত্রদলের সভাপতি আজিজুল হক মাসুম, ইউএসটিসি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি নিবীড় প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.