ফরিদ মাহমুদের বিভাগীয় পাবলিক লাইব্রেরী পরিদর্শন

0

সিটিনিউজ ডেস্ক :: বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে ফরিদ মাহমুদসহ নগর যুবলীগ এবং ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ জাতীয় গ্রন্থাগার অধিদপ্তর দ্বারা পরিচালিত বিভাগীয় পাবলিক লাইব্রেরী পরিদর্শনে যান। এ সময় চট্টগ্রাম পাবলিক লাইব্রেরীর লাইব্রেরিয়ান মোঃ আব্বাস আলীর সাথে কথা বলেন। পরে নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ পাঠকক্ষ ঘুরে দেখেন, পাঠক, লেখক এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী-কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন।

এক পর্যায়ে আগত পাঠকের অভিযোগের ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধের বই, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনি, কারাগারের রোজনামচা সংগ্রহ ও পাঠক সম্পর্কে জানতে চান। একজন কর্মচারী মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রহশালার সেলফ খুলে দেখালে সেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিল পত্রের সতেরো খন্ড থেকে পনেরো খন্ডের একসেট বই পাওয়া যায়। যা অত্যন্ত জরাজির্ণ, পঠনে অনুপযুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।

এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের বইপত্রের সংগ্রহ খুবই অপ্রতুল। সবচেয়ে বেদনার বিষয় মুক্তিযুদ্ধের বইয়ের সেলফটি যেভাবে তালাবদ্ধ ছিল তা সহজেই অনুমান করা যায় বিগত ছয়মাসে এই বুক সেলফটি খোলা হয়নি। সবচেয়ে বিষ্ময়ের ব্যাপার এই বিশাল লাইব্রেরীতে অত্যন্ত অযত্নে পরে থাকা বঙ্গবন্ধুর কর্ণারটিতে পাঠকদের পড়ার জন্য মাত্র তিন কপি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনি পাওয়া গেছে। যারমধ্যে দুই কপির ময়লা জীর্ণশীর্ন অবস্থা। আশ্চার্য্যরে বিষয় ২০১৬ সালে বাংলা একাডেমী কর্তৃক প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুর উপর আলোচিত বই কারাগারে রোজনামচার কোন কপি লাইব্রেরীতে পাওয়া যায়নি।

এ সময় উপস্থিত একজন পাঠক জানান, এই লাইব্রেরীতে মুক্তিযুদ্ধের নানা বই চাইলে পাওয়া যায় না। আবার বই থাকলেও অপ্রতুলতার অজুহাতে পাঠকদের পড়তে দেওয়া হয় না। কেউ নিতে চাইলে ইস্যূও করা হয় না। এতবড় বিভাগীয় পাবলিক লাইব্রেরীতে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনি মাত্র তিন কপি থাকায় এবং কারাগারের রোজনামচার কোন কপি না থাকায় নেতৃবৃন্দ রীতিমত বিষ্ময় এবং চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এ সময় উপস্থিত লাইব্রেরিয়ান কর্মকর্তা-কর্মচারী, লেখক, পাঠকদের উদ্দেশ্যে ফরিদ মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশকে জানতে হলে, বাংলাদেশের অভ্যুদয় সম্পর্কে জানতে হবে। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস চরম গ্লানি ও ত্যাগ স্বীকারের ইতিহাস। ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত আর দুই লক্ষ মা বোনের আত্মৎসর্গ এবং সম্ভ্রমহানির ফলে এদেশ স্বাধীনতা হয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, অভ্যুদয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্পর্ক ওতপ্রতোভাবে জড়িত। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একই সুত্রে গাঁথা। দেশকে জানতে হলে, মা, মাটিকে জানতে হলে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জানতে হবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাসিমুখে ফাঁসির কাষ্ট বেছে নিয়েছিলেন। তিনি পাকিস্তানী ষড়যন্ত্রকারীদের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বলেছিলেন, আমাকে যদি হত্যা করা হয় তাহলে আমার দেশের মাটিতে আমাকে কবর দিও। প্রহসনের বিচার, আর্ন্তজাতিক ষড়যন্ত্র, সবকিছুকে পরাজিত করে তিনি ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বাধীন দেশে ফিরে এসেছিলেন। ফেরার পথে তাই তিনি লন্ডনে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে কবিগুরুর ভাষায় বলেছিলেন, মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক আমি তোমাদেরই লোক। দেশপ্রেম, রাজনীতি, আধুনিক জ্ঞাননির্ভর শোষনমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনি এবং কারাগারের রোজনামচা এক অনন্য দলিল স্বরূপ।

এসময় নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগ সদস্য এস এম সাঈদ সুমন, শেখ নাছির আহমেদ, কাজী রাজেশ ইমরান, হোসেন সরওয়ার্দী, মহানগর যুবলীগ নেতা আশরাফুল গনি, বখতেয়ার ফারুক, হারুনুর রশিদ আলম, জহির উদ্দিন সুমন, শেখ বশির আহমেদ, রাশেদ চৌধুরী, আলহাজ্ব জাবেদ হোসেন, নগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান রুমি, ছাত্রনেতা শহীদুল ইসলাম শহীদ, যুবনেতা ইয়াসিন ভুইয়া, এ আর কামরুল ইসলাম, আবু বক্কর ছিদ্দিক পলাশ, আবদুল মান্নান বাপ্পি, ওমর গনি মানিক, এম আর ইয়াসিন, মিঠুন দাশ, জনি দেব, কাহহার সিদ্দিকী, মোঃ রায়হান, মোঃ ইমন, সাম্পান ছাত্র সমারোহ চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম সিদ্দিকী, সহ-সভাপতি মুহিত উল্লাহ আরভি, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য তাসজিদুর রহমান তুহিন, আরিফ উদ্দিন, আকাশ হোসেন, মুনতাসির আজমি, সাদমান আহমেদ, রোশাদ আহমেদ, বন্ধন সেন, মোঃ রাসেল, মোঃ আলম, নিজাম উদ্দিন প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ এসময় বলেন, সারাদেশে এখন স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি সমাজ, রাষ্ট্রের বিভিন্ন রন্ধে রন্ধে ঘাপটি মেরে আছে। দেশের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ, জাতীয় গ্রন্থাগার কর্তৃক পরিচালিত দেশের প্রতিটি বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের লাইব্রেরীর সকল অনিয়ম দুর করে পর্যাপ্ত পরিমান মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও প্রগতিশীল আধুনিক ভাবধারার বই, দলিল, পত্র পত্রিকা সরবরাহের জন্য জোর দাবী জানানো হয়। শেষে ফরিদ মাহমুদ পাবলিক লাইব্রেরীর লাইব্রেরিয়ান মোঃ আব্বাস আলীর হাতে পাঠক, লেখকদের সহজ শর্তে বাই ইস্যূ করার জন্য ত্রিশ কপি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনি, বিশ কপি কারাগারের রোজনামচা মোট ৫০ কপি বই হস্তান্তর করেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.