সিটিনিউজবিডি : রাজপথে চলছে আন্দোলন। বেতন নেই, সংসারে অভাব, মনে আতঙ্ক। এভাবেই চলছে মাসের পর মাস। খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত আলীম জুট মিলের সিবিএ’র সভাপতি আব্দুস সালাম জোমাদ্দার সোমবার (২৪ আগস্ট) এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কেউই যেন শুনছে না শ্রমিকের কান্না! রাষ্ট্রায়ত্ত মিলটি ব্যক্তি মালিকানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়ার কারণে অনিশ্চয়তার মুখে এ মিলের প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক-কর্মচারীর ভাগ্য। এ মিলটি ব্যক্তি মালিকানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়ার কারণে চাকরি হারানোর ভয়ে তারা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। অর্ধাহারে-অনাহারে দিনযাপন এবং ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে এসব শ্রমিক কর্মচারীদের।
তিনি জানান, মিলটি রক্ষার জন্য এ সব শ্রমিকরা দুই বছর ধরে প্রতিরোধ কমিটির মাধ্যমে লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছেন। করেছেন মিছিল, লাঠিমিছিল, ঝাড়ুমিছিল, মানববন্ধন, সড়ক-অবরোধ, অনশন ইত্যাদি।
তিনি বলেন, মিলটি রক্ষায় আলীম জুট মিলের শ্রমিকদের পাশে থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ২৬টি জুট মিলের সিবিএ-ননসিবিএ ঐক্য পরিষদের আন্দোলন কর্মসূচিতেও এ জুট মিলটি রক্ষার জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি দিয়ে আসছে। আলীম জুট মিলের শ্রমিকরা সর্বশেষ পরিবারের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু কেউই যেন আমাদের দাবি শুনছেন না।
আলীম জুট মিল ব্যক্তি মালিকানায় হস্তান্তর প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক মো. আব্দুর রশিদ বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত আলীম জুট মিল নিয়ে ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে অনেক চেষ্টা করে অবশেষে ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে মিলটি হাত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ১৯৮২ সালে এরশাদ সরকারের আমলে ৩০টি মিল মালিকানায় ফেরত দেওয়ার কথা থাকলে তখন একমাত্র আলীম জুট মিল ৫১% শেয়ার দেখাতে না পারায় মিলটি বিজেএমসির আওতায় থেকে যায়।
তিনি জানান, মিলটিতে বর্তমানে কর্মরত রয়েছে ৩৪ জন কর্মকর্তা, ৫৯ জন কর্মচারী, ৮৯৮ জন স্থায়ী ও ৭৯০ জন অস্থায়ী শ্রমিক এবং ৮ জন ক্যাজুয়াল শ্রমিক। ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল থেকে মিলের উৎপাদন বন্ধ থাকায় তারা কোনো মজুরি বেতন পাচ্ছেন না।
সোমবার খুলনা-যশোর মহাসড়কের আফিলগেট শিল্পাঞ্চলে এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন শ্রমিকেরা। তবু যেন সুদিন ফিরছে না।
মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) সকাল ১০টায় খুলনা-যশোর মহাসড়কে লাঠিমিছিল অনুষ্ঠিত হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা তাদের এ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।