ফটিকছড়ির মাইজভান্ডারে ভাঙ্গল ভক্তের মিলন মেলা

0

জাহাঙ্গীর উদ্দিন মাহমুদ, ফটিকছড়িঃ জাতি, ধর্ম, বর্ণ-সব মিলেমিশে একাকার। মানুষে মানুষে সব ভেদরেখা যেন মুছে গেছে। ফটিকছড়ি উপজেলার মাইজভান্ডার দরবার শরিফে বসেছে লাখো মানুষের মিলনমেলা।

সাধক-বাউল ও মরমি শিল্পীরাও এসেছেন দূর-দূরান্ত থেকে। আধ্যাত্মিক শরাফতের প্রবক্তা হযরত শাহছুপি সৈয়দ শফিউল বশর মাইজভান্ডারীর বার্ষিক ওরসে ভক্তদের পদচারণে মুখরিত দরবার শরিফ সেজেছিল রঙিন করে। গত সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে তিন দিনের ওরশ।

ওরশ আয়োজন নির্বিঘœ করতে প্রশাসন সর্বাত্মক সহায়তা দিয়েছেন। এছাড়া দরবার কর্তৃপক্ষ, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগ একযোগে কাজ করেছে। সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী।

ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির হোসাইন মাহমুদ বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শান্তিপূর্ণভাবে ওরশ সম্পন্ন করতে পেরেছি। পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশ ও র‌্যাব দায়িত্ব পালন করে। এছাড়া দেড় হাজার স্বেচ্ছাসেবক পুলিশের পাশাপাশি শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করেন বলে জানান।

দরবারের কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ভক্তদের থাকা-খাওয়া ব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা ও পরিবেশ রক্ষায় কমিটি সার্বক্ষণিক তদারকি করেছে। ওরশে দুইদিনব্যাপী চলেছে জিকির আছকার ও মিলাদ মাহফিল। গতকাল রাতে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে আখেরি মোনাজাত করা হয়। এতে মুনাজাত পরিচালনা করেন সাজ্জাদানশীন শাহজাদা সৈয়দ মুজিবুল বশর মাইজভান্ডারী।

তিনি বলেন, ইসলাম ধর্মের মূলধারা ত্বরিকতের মূলে নিহিত। এটা রক্ষা করতে মাইজভান্ডারী ত্বরিকার যথাযথ লালন-পালন ও মর্যাদা দিতে হবে। তবেই ইসলামকে পাওয়া যাবে সেই ত্বরিকতের মাধ্যমে। তিনি ত্বরিকতপন্থীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাতিল-ফেরকার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার আহবান জানান।

ওরশে বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছেন মরমী শিল্পী। লালমণিরহাট রেপুয়া গ্রাম থেকে এসেছেন মরমী শিল্পী আতিউর রহমান। তিনি বলেন, মাইজভান্ডার দরবার মানুষের ধর্মপালনের তীর্থভূমি।

সব ধর্মের মানুষের স্থান আছে এখানে। দরবার শরিফ প্রাঙ্গণে দেখা গেছে, দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা ভক্ত শিল্পীরা ভান্ডারি গানের আসর জমিয়ে তুলেছেন। ওরশ শরীফের বাবা ভান্ডারীর কাফেলায় দেখাগেছে শিল্পী রুজি আকতার গান করছেন দরদীকন্ঠে।

তিনি বলেন, ওরশের সময় সামাজিক মর্যাদা, ভেদাভেদ ভূলে যান আগত লোকজন। সবার সঙ্গে মিলে গান গাওয়াতেই তৃপ্তি। দরবারের এলাকাজুড়ে বসেছে হরেক রকমের মেলা। সেখানে ছুরি, দা, বটি, খুন্তি এবং কাঠ, বাঁশ-বেত ও মাটির তৈজসপত্র বিক্রি হয়েছে প্রচুর।

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.