কৃতিমানদের মূল্যায়ন করতে পেরে আমি আনন্দিত ও গর্বিতঃ মেয়র

0

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিটি নিউজঃঃ  চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, জাতীয় জীবনে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ কয়েকজন কীর্তিমান ব্যক্তিত্বকে মানব সমাজ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে অবদানের জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মহান একুশে স্মারক সম্মাননা পদক প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

যারা এবার একুশে স্মারক সম্মাননায় ভুষিত হয়েছেন চট্টগ্রাম নগরবাসীর পক্ষ হতে এসব কৃতিমানদের মূল্যায়নের এ প্রয়াসে আমি আনন্দিত ও গর্বিত।তিনি চসিক আয়োজিত বই মেলার সমাপনী দিনে প্রধান অথিতির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।

অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত ১১ দিন ব্যাপি বই মেলার কাল ছিল সমাপনী দিবস। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ খ্রি. থেকে বই মেলা শুরু হয়। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় মুসলিম হল প্রাঙ্গনে একুশ মঞ্চে অমর একুশে স্মারক সম্মাননা পদক, সাহিত্য পুরষ্কার ও সাংস্কৃতিক এবং রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ২৪ নং উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা মিসেস নাজিয়া শিরিন।

মঞ্চে কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদের সভাপতি মহিউদ্দিন শাহ নিপু, উপসচিব আশেক রসুল চৌধুরী টিপু, জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবদুর রহিম ও শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমান সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ

বার মহান একুশে স্মারক সম্মাননা পদক প্রাপ্ত ৯ জন গুণী ব্যক্তিরা হলেন ভাষা আন্দোলনে কৃষ্ণ গোপাল সেন, সমাজসেবায় আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম বিএসসি, শিক্ষায় প্রিন্সিপ্যাল সামশুদ্দিন মুহাম্মদ ইসহাক (মরনোত্তর), ক্রীড়ায় ইউসুফ গনী চৌধুরী (মরনোত্তর), সংগীতে সৌরিন্দ্র লাল দাশ গুপ্ত (মরনোত্তর),

স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে নূর মোহাম্মদ রফিক (মরনোত্তর), সাংবাদিকতায় পংকজ দস্তিদার, লোক সংগীতে কল্প তরু ভট্টাচার্য, গবেষনায় মুহাম্মদ শামসুল হক এবং ৩ জন সাহিত্য পুরষ্কারে ভুষিত হন তারা হলেন কথা সাহিত্যে রফিক আনোয়ার (মরনোত্তর), নাছের রহমান ও কবিতায় কবি এজাজ ইউসুফী। অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ৯ গুণী ব্যক্তি এবং ৩ সাহিত্যিক এর হাতে একুশে স্মারক সম্মাননা তুলে দেন।

এছাড়াও বই মেলায় অংশ গ্রহনকারী স্টল, প্রকাশনী সংস্থা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করা হয়। এবার গবেষনায় বলাকা, অন্যান্য ক্ষেত্রে অ্যার্ডন এবং শিশু সাহিত্যে অক্ষর বৃত্ত, স্টলে পেন্সিল, অক্ষর বৃত্ত ও কালধারা পুরস্কৃত হয়।

অনুষ্ঠানে মহান একুশে স্মারক সম্মাননা পদকে এবং সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিতদের মধ্যে অনুভুতি ব্যক্ত করেন কবি এজাজ ইউসুফী, কথা সাহিত্যিক নাসের রহমান, মরহুম রফিক আনোয়ারের পুত্র গালিব আনোয়ার আনন, গবেষক মুহাম্মদ শামসুল হক, লোক সংগীত শিল্পী কল্পতরু ভট্টাচার্য, সাংবাদিক পংকজ কুমার দস্তীদার, সংগীত শিল্পী গৌরীন্দ্র লাল দাশগুপ্তের পুত্র সোমনাথ দাশ গুপ্ত।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরও বলেন, বাঙালির ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে প্রজন্ম পরম্পরায় ছড়িয়ে দিতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রতিবছর বই মেলার আয়োজন করে থাকে। বই মেলাকে আরো গঠনমূলক ও সর্বসাধারণের নিকট গ্রহনযোগ্য করার লক্ষ্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। জনাব আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নাগরিক সেবার পাশাপাশি একুশে স্মারক সম্মাননা, স্বাধীনতা স্মারক সম্মাননা প্রদান সহ বহুমুখী সংস্কৃতি চর্চা করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, মহান একুশ বাঙালি জাতীয়তাবাদের জাগরণের প্রতীক। ৫২ ভাষা আন্দোলনের ভাষা শহিদদের রক্ত বৃথা যায়নি। বাঙালির অভুতপূর্ব গণজাগরনের ফলে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী শেষ পর্যন্ত বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মেনে নিতে বাধ্য হয়।

এই রক্তাক্ত ইতিহাসের পথ বেয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি অবিসংবাদিত প্রানপুরুষ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করে আমরা অর্জন করি একটি স্বাধীন পতাকা, বাংলাদেশ নামে সার্বভৌম-স্বাধীন ভুখন্ড।

মেয়র বলেন, তাই আজকের দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরন করছি। বাহান্নের রক্তমাখা ২১ ফেব্রুয়ারি আজ গৌরবময় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বিশ্বব্যাপী এ দিবসটি আজ পালিত হয় সম্মানের সাথে।

আর এ মাতৃভাষা দিবসের মহাত্মা প্রজন্ম পরম্পরায় পৌছে দেয়ার উদ্দেশ্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এবার শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করছে। মেয়র বলেন, আগামী প্রজন্ম জাতীয় জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই ১২ জন ব্যক্তিত্বের কৃতিত্বপূর্ন অবদান স্মরণ করে দেশপ্রেম, নিষ্ঠাবান, সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মানে নিজেদের উদ্বুদ্ধ করবে ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.