বাঁশখালী শ্মশানভুমি প্রজ্ঞাদর্শন সেন্টারে ভয়াবহ আগুন
শতাধিক বুদ্ধ মূর্তি পুড়ে ছাঁই-৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি
বাঁশখালী প্রতিনিধিঃ বাঁশখালী পৌরসভার উত্তর জলদী বড়ুয়াপাড়ায় অবস্থিত শ্মশানভুমি প্রজ্ঞাদর্শন মেড়িটেশন সেন্টারে এক ভয়াবহ আগুনে দেশ বিদেশ থেকে আনা শতাধিক বুদ্ধ মুর্তি সহ ৪০ লক্ষাধিক টাকার মুল্যাবান ধর্মীয় জিনিস পত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ ও আতংক বিরাজ করছে। বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার ও থানার অফিসার ইনচাজর্ (ওসি) মো: কামাল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন পুর্বক জড়িতদের কঠোর শাস্তি প্রদানের আশ্বাস দিয়েছে। এ ঘটনার তদন্তের জন্য। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে ।
কমিটির সদস্যরা হলেন সহকারী কমিশনার (ভুমি) সুজন চন্দ্র রায় ,থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল উদ্দিন,উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম মিয়াজী,বাঁশখালী ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন মাষ্টার লিটব বৈঞ্চব ও পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম নাইমুল হাসান।
বাঁশখালীর সর্ববৃহৎ বৌদ্ধ পল্লীপৌরসভার উত্তর জলদী বড়ুয়াপাড়া । সেই বড়ুয়াপাড়ার মহাশ্মশানে ২০০৯ সাল থেকে বির্দশন সাধক জ্ঞানেন্দ্রিয় স্থবির শ্মশানভুমি প্রজ্ঞাদর্শন মেড়িটেশন সেন্টার স্থাপন করে বির্দশন ভাবনা সহ ধর্মীয় কার্যাদি করে আসছিল । বৃহস্পতিবার তিনি সেখানে না থাকলেও ২জন ভিক্ষু ও ২ জন সেবক ছিল। গভীর রাতে (রাত প্রায় ২টা) বুদ্ধের প্রার্থনা হলেও ষ্টোররুমে আগুন দেখে তারা মোবাইলে সেবকদের জানান এবং এ সময়ে জলদী ধর্মরত্ন বিবাহ থেকে অধ্যক্ষ ধর্মপাল মহাস্থবির মাইকে শ্মশানভুমি প্রজ্ঞাদর্শন মেড়িটেশন সেন্টারে আগুন ধরার খবর প্রচার কররে সাথে সাথে কয়েকশত লোক জড়ো হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনলেও আগুনে থাইল্যান্ড, বুদ্ধগয়া, বার্মা থেকে আনীত শ্বেতপাথর ও কষ্টিপাথরের বুদ্ধমুর্তি সহ প্রায় ছোটবড়র্ শতাধিক বুদ্ধমুর্তি পুড়ে যায় ।
পুড়ে যাওয়ার পর বড় বুদ্ধ মুর্তি ও সীবলী মুর্তিটি অর্ধপুড়া অবস্থায় পড়ে আছে। রাতে যখন আগুন লাগে তখন কোথাও বিদ্যুৎ না থাকলেও কীভাবে আগুন আসে তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা। প্রার্থনা ও বুদ্ধের রুমের পাশে অবস্থিত ষ্টোর রুমে রক্ষিত ভিক্ষাগ্রহন পাত্র ছাবাইক ৫০টি, প্রায় একশটি কম্বল, সোলার প্যানেল, স্ট্রাকচার, স্পীকার, ফ্লাক্স, গামলা ৬০টি, থালা প্রায় ১শটি, জগ ৫০টি, দেশী বিদেশী রং কাপড়সহ আরো প্রয়োজনীয় কাপড়ও জিনিস পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
শ্মশানভুমি প্রজ্ঞাদর্শন মেড়িটেশন সেন্টারের পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসনকে দেওয়া তথ্য মতে ক্ষয়ক্ষতি প্রায় ৪০ লক্ষাধিক বলা হলেও পুড়ে যাওয়া বুদ্ধ মুর্তি গুলো সংগ্রহ করা অনেক দুসাধ্য বলে জানান শ্মশানভুমি প্রজ্ঞাদর্শন মেড়িটেশন সেন্টারের পরিচালক জ্ঞানেন্দ্রিয় স্থবির ।
ঘটনার ব্যাপারে বাশঁখালী থানার অফিসার ইনচাজর্ (ওসি) মো: কামাল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় সাধারন ডায়েরী করা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্থদের পক্ষ থেকেও ডায়েরী করা হয়েছে। এটাকে অধিত গুরুত্বসহকারে নেওয়া হচ্ছে এবং ৫ সদস্যর তদন্ত কমিটি তদন্ত করে প্রতিবেদন পেশ করবেন বলে তিনি জানান ।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার বলেন ঘটনার খবর পাওয়ার সাথে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিস্তারিত অবগত হই । এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবহিত করা হয়েছে । ক্ষতিগ্রস্থদের পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা দেওয়া হয়েছে যতটুকু সম্ভব প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে এবং যারা এ ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট তাদের দুষ্টান্ত মুলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে বলে তিনি জানান ।