জয়নাল আবেদীনের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চুনতিতে
আরিফুল ইসলাম রিফাত (লোহাগাড়া) চট্টগ্রামঃ প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন (বাচ্চু) বীরবিক্রম, পিএসসি’র মৃত্যুতে তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতির সর্বত্রই নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
তার মৃত্যুতে অশ্রুসিক্ত নয়নে ভাসছে এলাকাবাসী।এই কীর্তিমানের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তারা।সকলেই শোক আর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছেন সদ্য প্রয়াত বাচ্চুকে।
মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন ১৯৬০ সালের পহেলা জানুয়ারি উপজেলার চুনতি মুন্সেফ বাজারের পশ্চিম পাশে সিকদার পাড়ায় জন্ম গ্রহণ করেন।তার পিতা মরহুম ইছহাক মিয়া ও মাতা মরহুমা মেহেরুন্নিছা।
ছাত্র জীবনে চুনতি হাকিমিয়া কামিল মাদরাসায় পড়ালেখার হাতেখড়ি।পরবর্তীতে চট্টগ্রাম ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন।১৯৭৫ সালে এসএসসি ও ১৯৭৭ সালে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। দুই বছর বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমীতে প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশনপ্রাপ্ত হন।
পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৯৯৫-৯৬ সালে দায়িত্ব পালনকালে তার সাহসী নেতৃত্ব, বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতার কারণে অনেক জটিল সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব হয়। দেশের প্রতি নির্ভয় আত্নত্যাগ, পাহাড়সম মানসিক দৃঢ়তা ও দেশ সেবার মহান ব্রত বিবেচনায় তাকে মর্যাদাপূর্ণ ‘বীর বিক্রম’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
একজন চৌকস সেনা অফিসার হিসেবে তিনি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে অংশগ্রহণ করেন। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল ও কর্মদক্ষতার কারণে শান্তিরক্ষী মিশন থেকে ফিরে আসার পর তাকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।
২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে তাকে এসএসএফ এর মহাপরিচালক পদে অধিষ্ঠিত করা হয়। এপ্রিল মাসে মেজর জেনারেল পদে তিনি পদোন্নতি লাভ করেন। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব হিসেবে তিনি দায়িত্বরত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন গত মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ১৩মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও দুই কন্যা রেখে যান।